Sunday, July 13, 2014
মাহমুদুর রহমান
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ বুধবার , ১৬ জানুয়ারী, ২০১৩ Harunar Rashid এই সময়ে ১০:৩৬ pm মন্তব্য প্রতিবেদন : জনগণের কাছে ন্যায়বিচার চাই মাহমুদুর রহমান আজ বুধবার, ১৬ জানুয়ারি, ইংরেজি সাল ২০১৩। আমার অফিস বন্দিত্বের এক মাস ৩ দিন চলছে। এর মধ্যে এ মাসের ৮ তারিখে হাইকোর্টে একবার আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। আমার দেশ পত্রিকার নিয়মিত পাঠক মাত্রই জানেন, সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চ সেদিন দীর্ঘ শুনানি শেষে আমার আবেদন ফিরিয়ে দিয়ে সিনিয়র কোনো বেঞ্চে যাওয়ার মৌখিক পরামর্শ দিয়েছিলেন। অবশ্য যে লিখিত আদেশ পরদিন বিচারপতিদ্বয় দিয়েছেন, সেখানে বোধগম্য কারণে ‘সিনিয়র বেঞ্চ’ এই কথাটি আর রাখেননি। বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী এবং বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন তাদের আদেশে লিখেছেন, Let it go out of list with liberty to mention the matter before any other appropriate bench (আবেদনটি তালিকার বাইরে পাঠানো হোক এই স্বাধীনতা সহকারে যাতে অন্য কোনো উপযুক্ত বেঞ্চে উত্থাপন করা যায়)। হাইকোর্টে বেঞ্চ গঠনের সময় আদালতের গঠনবিধি অনুসারে প্রতিটি বেঞ্চের এখতিয়ার বিশদভাবে বর্ণনা করা থাকে। সাধারণত উচ্চ আদালতের সাপ্তাহিক ছুটি ব্যতীত যে কোনো দীর্ঘ ছুটির পরই হাইকোর্ট বেঞ্চ পুনর্গঠন করা হয়। এছাড়া প্রধান বিচারপতি চাইলে যে কোনো সময়ই বেঞ্চ নতুন করে গঠন করতে পারেন। এ বছরের শীতের ছুটির শেষে উচ্চ আদালত ২ জানুয়ারি থেকে খুলেছে। তার একদিন আগে অর্থাত্ ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন ২০১৩ইং সনের ১নং গঠনবিধি শিরোনামে হাইকোর্ট বিভাগের বেঞ্চ গঠন করেছেন। তার উপরোক্ত আদেশের ১৪ নম্বর সিরিয়ালে বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী এবং বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের এখতিয়ার নিম্নরূপ : “একত্রে ডিভিশন বেঞ্চে বসিবেন এবং শুনানীর জন্য ডিভিশন বেঞ্চে গ্রহণযোগ্য ফৌজদারী মোশন; ফৌজদারী আপীল মঞ্জুরীর আবেদনপত্র এবং তত্সংক্রান্ত জামিনের আবেদনপত্র; মঞ্জুরীকৃত আপীল ও তত্সংক্রান্ত জামিনের আবেদনপত্র; ২০০৮ইং সন পর্যন্ত ফৌজদারী বিবিধ এবং ফৌজদারী রিভিশন ও রেফারেন্স মোকদ্দমাসমূহ এবং উপরোল্লিখিত বিষয়াদি সংক্রান্ত রুল ও আবেদনপত্র গ্রহণ করিবেন।” আইনি ভাষার কূট- কচালি বাদ দিলে মোদ্দা কথা আমার মতো নাগরিকের আবেদন শুনানির জন্য উল্লিখিত দ্বৈত বেঞ্চকে প্রয়োজনীয় সব এখতিয়ার দেয়া হয়েছে। তারপরও আমার জামিন আবেদন বিষয়ে মাননীয় বিচারপতিদ্বয় কেন তাদের বেঞ্চকে উপযুক্ত বিবেচনা না করে অন্য কোথাও যেতে আদেশ দিলেন? এই প্রশ্নের জবাব পেতে হলে সেদিনকার আদালতের বিচিত্র পরিস্থিতি বয়ান করতে হবে। জানুয়ারির ২ তারিখ আদালত খুললেও আমার জামিন আবেদনের শুনানি উল্লিখিত বেঞ্চ ৮ তারিখের আগে শুনতে সম্মত হননি। আমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী তার সাধ্যমত বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে সেই ১৩ ডিসেম্বর থেকে অফিসে অবরুদ্ধ রয়েছি, তাই শুনানি ৩ জানুয়ারি করা হোক। কিন্তু, আদালত অটল থেকে বলেছেন আগাম জামিন আবেদন শুনানির জন্য সপ্তাহের নির্ধারিত দিবস মঙ্গলবার ব্যতীত তারা আমার আবেদন শুনবেন না। এতে নাকি নিয়মের ব্যত্যয় হবে। অথচ বিশেষ ক্ষেত্রে মেনশনের দিনেই শুনানি হওয়ার ভূরি ভূরি নজির রয়েছে। তার মধ্য থেকে একটা প্রাসঙ্গিক উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। ২০০০ সালে ইনকিলাব পত্রিকার সম্পাদক এ. এম. এম. বাহাউদ্দীনের জামিনের শুনানি গ্রহণের জন্য রাত দশটায় প্রধান বিচারপতির নির্দেশে হাইকোর্টে বিশেষ বেঞ্চ বসানো হয়েছিল এবং তিনি সে রাতে আগাম জামিনও পেয়েছিলেন। সম্পাদক বাহাউদ্দীনের বিরুদ্ধেও তত্কালীন শেখ হাসিনা সরকার আমার মতোই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেছিল। এখন অবশ্য তার সঙ্গে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধুর সম্পর্ক রয়েছে। আমি মাওলানা মান্নানের পুত্র, ইনকিলাব সম্পাদকের মতো ভাগ্যবান নই তাই ৬ দিন অপেক্ষা করেই হাইকোর্টে গেলাম। পথিমধ্যে গ্রেফতার হওয়ার আশঙ্কা থাকায় আমার সহকর্মী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ এবং সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট আদিলুর রহমান খান আমার দেশ অফিস থেকে একই গাড়িতে উঠলেন। বর্তমান বাংলাদেশে গ্রেফতার হওয়া কোনো বিষয় নয়, ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমের মতো গুম হওয়াটাই অধিকতর আশঙ্কার। সেই জন্যই ছোটভাইসম দুই বন্ধু আমার সঙ্গেই আদালতে গেলেন। সাড়ে দশটায় আদালতে উঠতেই হতাশ হলাম। বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী জানালেন যে, শুনানি দুপুর দুটো পর্যন্ত মুলতবি থাকবে, কারণ ‘মহামহিম’ অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম স্বয়ং আসবেন জামিনের বিরোধিতা করতে। আর তার অভিপ্রায় উপেক্ষা করবে এমন ক্ষমতা কার? সরকার আমার মতো এক নগণ্য নাগরিককে এতখানি সম্মান দেয়ায় পুলকিত বোধ করলাম। আমার আইনজীবীরা দেখলাম খুবই আত্মবিশ্বাসী। সরকারের দায়ের করা মামলা এতই বানোয়াট যে পাঁচ মিনিটে জামিন হয়ে যাবে, ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি বাইরে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখালেও মনে মনে ঠিকই বুঝতে পেরেছিলাম ব্যাপারটা অত সহজ নয়। এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে গঠিত বাংলাদেশের ‘স্বাধীন’ আদালত, যেখানে বেছে বেছে ‘সেরা’ ব্যক্তিদের ‘মাননীয়’ বিচারপতি পদে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আমি চাইলাম আর তারা জামিন আবেদন মঞ্জুর করে ফেললেন, এতখানি আশাবাদী হতে পারছিলাম না। শেষ পর্যন্ত বেলা আড়াইটায় শুনানি শুরু হলো। কোথায় গেল পাঁচ মিনিটে জামিনের আশাবাদ। সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী আমার বিরুদ্ধে সরকারের অভিযোগ যে কতটা মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, হয়রানিমূলক এবং বেআইনি সেটা বিভিন্ন ধারা উল্লেখপূর্বক দীর্ঘক্ষণ ধরে বলেই যাচ্ছেন। আর মাননীয় বিচারকদ্বয়ের একজন স্মিতমুখে এবং অপরজন দৃষ্টি সামনের ফাইলে নিবদ্ধ করে বিষম গাম্ভীর্যের সঙ্গে অসীম ধৈর্যসহকারে সেই নিবেদন শুনেই যাচ্ছেন। মনে হলো তারা সামান্য জামিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নয়, মূল মামলার রায় যেন আজই দিয়ে ফেলবেন। প্রায় ঘণ্টাখানেক পর আমার পক্ষের আইনজীবী থামলেন। এবার অ্যাটর্নি জেনারেলের পালা। ততক্ষণ ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে আমার পা ব্যথা হয়ে গেছে। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার নিজস্ব রাজনৈতিক বাচনভঙ্গিতে জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে আধ ঘণ্টাখানেক বক্তৃতা দিলেন। তিনি বললেন, বিচারপতির সঙ্গে বিদেশে অবস্থানরত অপর এক ব্যক্তির চলমান মামলা সংক্রান্ত আলাপচারিতা প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমিই নাকি মহা অপরাধ করে ফেলেছি যদিও হ্যাকিংয়ের সঙ্গে আমার কোনোরকম সম্পৃক্ততার প্রমাণ সরকারের কাছে নেই। সে সব বিষয় এখনও প্রাথমিক তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে। বিচারপতির স্কাইপ সংলাপের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কোনো বিচারপতির এই আচরণ আইনসম্মত কিনা, আদালত সেটি জানতে চাইলে বিব্রত অ্যাটর্নি জেনারেল আমতা আমতা করে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের পদত্যাগী চেয়ারম্যানের পক্ষাবলম্বন করে কিছু একটা বলতে চাইলেন। আদালত কক্ষে উপস্থিত সবাই বুঝতে পারছিলেন যে, অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইছেন। তাছাড়া এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের আমার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন রুল দেয়া প্রসঙ্গেও অ্যাটর্নি জেনারেল কোনো যুক্তি খাড়া করতে ব্যর্থ হলেন। সেই বেআইনি রুল অবশ্য আপিল বিভাগ ইতোমধ্যে স্থগিত করে দেয়ায় অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলমের পক্ষে তার বিরোধিতা করাও সম্ভব হয়নি। বক্তব্যের শেষে তিনি আমার আদালত অবমাননার অভিযোগে সাজাপ্রাপ্তির পুরনো প্রসঙ্গ তুলে জামিন দেয়ার বিরোধিতা করলেন। অ্যাটর্নি জেনারেলের আর্গুমেন্টে আমি কৌতুক বোধ করছিলাম। আমার বিরুদ্ধে মামলার ধারা হলো রাষ্ট্রদ্রোহের, আর তিনি তুলছেন আদালত অবমাননার প্রসঙ্গ। অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতে আমার জামিন আবেদন দাখিল নিয়েও অসত্য বক্তব্য দিলেন। আমার বিরুদ্ধে সরকার ১৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে মামলা দায়ের করলে আমি পরবর্তী কার্যদিবস অর্থাত্ সোমবার, ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টে জামিন আবেদন দাখিল করি। অথচ অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম অম্লান বদনে দাবি করলেন, আমি নাকি ইচ্ছা করে ৮ জানুয়ারি জামিনের আবেদন করে মহা অন্যায় করে ফেলেছি। দুই পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষ হলে আদালতের আদেশ দেয়ার পালা। আদেশ শুনে আদালতে উপস্থিত সবাই স্তম্ভিত। আমার মামলাটি নাকি এতই জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ যে, আদালত তাদের চেয়েও সিনিয়র কোনো বেঞ্চে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন। তালিকার মামলা দীর্ঘ দুই ঘণ্টা শুনানির পর উচ্চ আদালতের এমন আদেশ নজিরবিহীন। হাইকোর্টের বেঞ্চের এখতিয়ার সিনিয়র-জুনিয়র বিবেচনা করে নির্ধারিত হয় না। মাননীয় প্রধান বিচারপতি নিজ অভিপ্রায় অনুযায়ী সেটি নির্ধারণ করে দেন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এবং অ্যাভভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী আদালতকে বিনীতভাবে অনুর োধ করলেন অন্তত পরবর্তী বেঞ্চে শুনানি না হওয়া পর্য ন্ত আমাকে যেন পুলিশ হয়রানি না করে এ ধরনের একটি মৌখিক আদেশ প্রদানের জন্য। কিন্তু আদালত সেই অনুরোধও প্রত্যাখ্যান করে শুধু বললেন, আমরা দুঃখিত। পীড়াপীড়ি করে তাদেরকে আর বিব্রত না করারও অনুরোধ করলেন। এদিকে আদালতের সময়ও ততক্ষণে প্রায় শেষ। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এবং অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলীর তখন কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা। ওই আদালত থেকে ছুটে বেরিয়ে আমাকে এক রকম টানতে টানতেই নিয়ে গেলেন বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী এবং বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের আদালতে। দুই মাননীয় বিচারপতি সেই মুহূর্তে অন্য একটি মামলা শুনছিলেন। শুনানির মাঝখানে কিছুটা প্রথা ভেঙেই ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ আমাদের অসহায় অবস্থার প্রতি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন। দৃশ্যত বিরক্ত হয়েই জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী বললেন, আপনাদের কথা কিছুই বুঝতে পারছি না, শুনানি যেটা চলছে শেষ হতে দিন, তারপর না হয় আপনাদের কথা শুনব। আমরা অপেক্ষা করতে থাকলাম। মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই শুনানি শেষ হলে আদালত আমার পক্ষের আইনজীবীর কথা শুনতে চাইলেন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এবং অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী উত্তেজনা ও হতাশা যথাসম্ভব চেপে রেখে অতি সংক্ষেপে পূর্ববর্ত ী বেঞ্চের কাহিনী বর্ণনা করলেন। বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী সঠিকভাবেই আদালতের নিয়ম-কানুনের উল্লেখ করে দুই সিনিয়র আইনজীবীকে স্মরণ করিয়ে দিলেন যে, এভাবে হঠাত্ করে তাদের পক্ষে কোনো মামলা শোনা সম্ভব নয়। তালিকাভুক্ত কোনো মামলার আবেদন নিয়ে অন্য বেঞ্চে যাওয়ার আগে অবশ্যই প্রথমে আদালতের লিখিত আদেশ নিয়ে আসতে হবে। আমাকে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরীর আদালতে অপেক্ষা করতে বলে আমার অত্যন্ত শুভানুধ্যায়ী আইনজীবীদ্বয় আবার ছুটলেন বিচারপতি কামরুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে। আমি ভাবলাম হয়তো আজই দ্বিতীয় আদালতে আবেদন পেশের সুযোগ পাব। প্রত্যাশা করছিলাম প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদের ফেরা পর্যন্ত নিশ্চয়ই বিচারপতিরা অপেক্ষা করবেন। আদালত সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জনের তখনও বাকি ছিল। ঘড়ির কাঁটায় ঠিক চারটা বাজতেই বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী এবং বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এত দ্রুততার সঙ্গে বেঞ্চ থেকে নেমে গেলেন যে, আমার ভয় হচ্ছিল মাননীয় বিচারপতিরা না আবার হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়ে আঘাত পান। আমার সঙ্গে বেশ কয়েকজন বিএনপি সমর্থক নবীন আইনজীবী ছিলেন। বিচারপতিদের এজলাস থেকে নেমে যাওয়ায় তাদের মুখমণ্ডলে স্পষ্ট হতাশার চিহ্ন দেখলাম। বেচারাদের চোখ বলছিল আমার গ্রেফতার বোধহয় আর ঠেকানো গেল না। কেন জানি না এইসব কাজ- কারবারে প্রচণ্ড হাসি পাচ্ছিল। আদালতে হাসা বারণ, কারণ তাতে আবার আদালত অবমাননা হয়। দ্রুত হাসি গিলে ফেলে সিদ্ধান্ত নিলাম তখনই পত্রিকা অফিসে ফিরব। কিন্তু, নাছোড়বান্দা শুভাকাঙ্ক্ষীরা অনে কটা জোর করেই আমাকে বার প্রেসিডেন্টের অফিসে নিয়ে তুললো। পাঁচ মিনিটের বেশি অবশ্য সেখানে ছিলাম না। লোকজন পরামর্শ দিচ্ছিল রাতের মতো কোনো এক আইনজীবীর কক্ষে পালিয়ে থাকতে। তাদের তখনও আশা পরদিন নিশ্চয়ই কোনো একটা আদালত আমার আবেদন শুনবেন। পরামর্শ শুনেই ঘৃণায় গা ঘিন ঘিন করে উঠলো। তরুণ ব্যারিস্টার কায়সার কামালকে বেশ উচ্চস্বরেই বললাম, তোমরা ভুলে যাচ্ছ, আমি রাজনীতিবিদ কিংবা আইনজীবী নই। অনেকের মতো, মধ্যরাতে চুপিসারে আদালতে ঢোক া কিংবা ছদ্মবেশ ধারণ করা ইত্যাদি কাজ- কর্মে আমি মোটেই অভ্যস্ত নই। অনেকটা ধাক্কা দিয়ে সবাইকে সরি য়ে সুপ্রিমকোর্ট বার সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিনের কক্ষ থেকে বেরিয়ে এলাম। বাইরে তখন অগুনতি ক্যামেরা আমার দিকে তাক করে রয়েছে। সেগুলো দুই হাতে ঠেলে পথ করে নিয়ে সিঁড়ির কাছে পৌঁছে দেখি অ্যাডভোকেট আদিলুর রহমান খান অপেক্ষমাণ। কোনো কথা না বলে আমাকে অনুসরণ ের ইশারা করে দ্রুত পায়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে এলাম। আমার এক সহকর্মীকে বললাম গাড়ি খুঁজে বের করতে। চকিতে চারদিকে চেয়ে কয়েকজন সাদা পোশাকের পুলিশ দেখতে পেলেও পোশাকধারী কাউকে না দেখে অব াকই হলাম। বুঝলাম প্রশাসনও সম্ভবত ঘটনার এই আকস্মিকতার জন্য প্রস্তুত ছিল না। অনেকটা নিশিতে পাওয়া মানুষের মতো গাড়িতে উঠলাম। পেছনে আমি এবং আমার দেশ-এর রিপোর্টার মাহবুব ও বাছির জামাল। সামনের সিটে আদিলুর রহমান খান। কুড়ি বছর ধরে আমার গাড়িচালক বাদলকে বললাম সোজা কারওয়ান বাজার যেতে। আদিলকে বললাম রাস্তায় গ্রেফতার হলে মানবাধিকার কর্মী হিসেবে সেই ঘটনার সাক্ষী থাকতে। গাড়ি থেকে স্ত্রীকে ফোন করে সারাদিনের ঘটনা জানালাম। সৌভাগ্যক্রমে অন্যান্য দিনের তুলনায় রাস্তা অনেকটাই ফাঁকা লাগলো। আধ ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে গেলাম বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় ভবনের চত্বরে। ততক্ষণে আমার সব সহকর্মী সাংবাদিক ১১ তলার অফিস ছেড়ে নিচে নেমে এসেছে। আমি হাসিমুখে গাড়ি থেকে নামত েই একটা হর্ষধ্বনি উঠলো। অপেক্ষমাণ লিফটে চড়ে পৌঁছে গেলাম আমার দেশ কার্যালয়ে। সকাল সাড়ে আটটায় যে অবরুদ্ধ জীবন ছেড়ে গিয়েছিলাম আদালতে ন্যায়বিচারের অলীক প্রত্যাশায়, বিকাল পাঁচটার মধ্যে সেখানেই আমার প্রত্যাবর্তন ঘটলো। বাংলাদেশে কথিত আইনের শাসনের অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা দিনভর সঞ্চয় হলো। এতদিন জানতাম জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ মামলা নিষ্পত্তির জন্যই জনগণ উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়। হাইকোর্ট বেঞ্চের আজকের আদেশ শোনার পর থেকেই একটি প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতিরা যে মামলার গুরুত্ব ও জটিলতার কারণে কোনোরকম আদেশ দিতে বিব্রত হন, সেই মামলার বিচারকার্য সিএমএম কিংবা জেলা জজ আদালতের মতো নিম্ন আদালতে তাহলে কেমন করে চলবে, এই প্রশ্নের জবাব কার কাছে খুঁজব? সবচেয়ে বড় কথা, বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার বর্তমান পরিস্থিতিতে হাইকোর্টের সব বেঞ্চই যে আমার প্রতি একই রকম আচরণ করবেন না, তারই- বা নিশ্চয়তা কোথায়? আজই তো দুটো বেঞ্চে ছুটোছুটি করেও ন্যায়বিচার অধরাই থেকে গেল। আদালতের ৮ তারিখের রোমাঞ্চকর গল্প শেষ হলো। এবার আমার মামলা জনগণের আদালতে পেশ করার পালা। তাদের কাছ থেকে ন্যায়বিচার যে আমি পাবই, এ নিয়ে আমার মনে অন্তত কোনো সন্দেহ নেই। সপ্তাহ তিনেক আগে ‘এক অবরুদ্ধ চান্স সম্পাদকের জবানবন্দী’ শিরোনামে মন্তব্য- প্রতিবেদন লিখেছিলাম। সেই লেখায় সরকারের এই দেশদ্রোহ মামলার খানিকটা বিবরণ ছিল। দুই কিস্তির বর্তমান মন্তব্য প্রতিবেদনে প্রসঙ্গক্রমে সেখানকার কিছু তথ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটলে পাঠকের কাছে আগাম ক্ষমা চেয়ে রাখছি। (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি আগামী বুধবার) admahmudrahman@gmail.com
এলিয়েন কি সত্যিই আছে?
আমাদের দেশের এলিয়েন মনষ্কা ভাই বোনরা এই পোস্টটি মাথা ঠান্ডা করে পড়ুন।আর ভাবুন আমরা এলিয়েন বিশ্বাস করি কিসের ভিত্তিতে।আসলে এলিয়েন বলতে কিছু কি আছে নাকি পুরোটাই ভাওতাবাজি। এলায়েন বিজ্ঞানীরা নিজেদের মত করে মানুষকে বোকা বানাচ্ছে নাতো? আল্লাহ পাক রাব্বুল আলআমিন দুনিয়াতে ১৮হাজার মাখলুকাত বানিয়েছেন তার ভিতরে মানুষই শ্রেষ্ঠ।কিন্তু বর্তমান কিছু বিজ্ঞান মহল এমন একটা উদ্ভট জিনিস নিয়ে নাড়াচাড়া দিয়েছেন যেটা মানলে ধর্মকে ছাড়তে হবে:-@।কিছু কিছু বিজ্ঞান মনষ্কা ছেলে মেয়েরা তো মেনেই নিয়েছে :-> ! ¤সেটা হল এলিয়েন বা ভিনগ্রহবাসী!বিজ্ঞানীদের দাবী এলিয়েন আছে এবং থাকবে,অথচ এলিয়েন যে আছে তার কোন প্রমাণ বা রেফারেন্স বিজ্ঞানীরা দিতে পারেনি।বিজ্ঞানীরা দাবী করে এলিয়েন মোট ৩ প্রকার।যথাঃ ১/গ্রে এলিয়েন।(দেখতে অনেকটা গুইসাপের মতো,পিঠে খাঁজ কাঁটা খাঁজ কাঁটা আছে,বিজ্ঞানীদের দাবী এরা মানুষের ক্ষতি করে,এরা নাকি মানুষ গুম ও করে!:-P) ২/র্য্যাপ্টিলিয়ানস এলিয়েন।(দেখতে অনেকটা ধাতব বাক্সের মতো অথবা মাথাটা রোবটের মতো।বিজ্ঞানীদের দাবী এরাও মানুষকে গুম করে:'() ৩/হ্যিউম্যান টাইপ।(দেখতে ঠিক মানুষের মতো তবে বিজ্ঞানীদের দাবী এরা মানুষের থেকে ফর্সা হয়ে থাকে এবং এরাই নাকি একমাত্র এলিয়েন যারা মানুষের কোন ক্ষতি করেনা:-D)এদের মধ্যে নাকি একেকটা একেক রকম।কোনটা বাক্সের মতো:-Oকোনটা কুমিরের মতো:-Pআবার কোনটা নাকি মানুষের মতো%-)! এরা নাকি সসারে(বিজ্ঞানীদের দাবী সসার এলিয়েনের উড়োজাহাজ)করে পৃথিবীতে আসে। বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের(গোবর পঁচা বিজ্ঞানী) নাম তো নিশ্চই সবাই শুনেছেন,ইনি দাবী করেন এলিয়েন আছে কিন্তু তা আমাদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে।আজো অনেক মানুষ এলিয়েনে বিশ্বাসী অথচ এলিয়েন যে আছে তার কোন উপযুক্ত প্রমাণাতি বিজ্ঞান মহল দিতে পারিনি!তারা বলেন যে মহাকাশের গ্রহ নক্ষত্রের মতোই সত্য যে এলিয়েন আছে কিন্তু আমরা দেখিনাই। এই এলিয়েনই মানুষের মনে একটি ভ্রান্তির সৃষ্টি করে হাজার হাজার মানুষকে ধর্মচ্যুত্ করেছে:-(! অনেকে বলছেন যে তারা এলিয়েন নিজ চোখে দেখেছেন!এবং সসার ও দেখেছেন!কোথায় দেখেছেন,কি করে দেখেছেন তার কোন প্রমাণ ও অনেকের কাছে নেই।এ যেন মামু বাড়ির আব্দার যে আপনি বল্লেন আমি বাংলাদেশে হীরার ক্ষনি পেয়েছি,আর আমি তা বিশ্বাস করব। বিজ্ঞানীরা এড়িয়া ৫৬এর কিছু প্রাণী কেও এলিয়েন বলে।আবার নতুন সৃষ্ট হওয়া কিছু প্রাণীকেও এলিয়েন বলে ফেলে!কয়েক বছর পর দেখা যাবে যে একটা ছেলের মাথা বড় হলেও তারা বলে ফেলবে যে এটা এলিয়েনB-)! বিজ্ঞান মানুষকে যতটাই না শান্তি দিয়েছে ততটা করে তুলেছে মানুষকে অবিশ্বাসী।এমন কিছু আছে যা তাদের এখনো ধরা ছোঁয়ার একদম বাহিরে কিন্তু তবুও তারা প্রচার করে বেড়ায় যে এটা আমরা পেরেছি।এইতো মাত্র কয়েক দিন আগে একদল বিজ্ঞানীরা প্রকাশ করল যে তারা মঙ্গলগ্রহের ইদুর তাদের ক্যামেরায় উঠিয়েছেন।কিন্তু পরে আরেকদল বিজ্ঞানীরা নিরিক্ষন করে দেখল যে ওটা ছিল সাদা দুইটা পাথরের টুকরা:-P! প্রিয় পাঠক,বিজ্ঞানীদের সকল কথাই যে সত্য হবে এইটা ভাবাও অযৌক্তিক ভাবা।আর বিজ্ঞানীদের দ্বারাই যে সব সম্ভব সেইটা ভাবা তো বোকামি।কারন তারা এখন পর্যন্ত দেহে প্রাণ দিতে পারেনি,সাগরের তলায় যেতে পারেনি,আকাশের ওপরে উঠতে পারেনি,সমুদ্রের ওপারে যেতে পারেনি।আরো অনেক কিছুই বিজ্ঞানীদের আওতার বাইরে।আর যা যা তারা তৈরী করেছে তাতে প্রাকৃতিক সম্পদ তাদের লেগেছে।প্রাকৃতিক সম্পদ ছাড়া নিজেদের অভিজ্ঞতায় কিছুই সম্ভব হয়নি বিজ্ঞানীদের দ্বারা । অতএব এলিয়েন তত্ত্ব ও যে বিজ্ঞানীদের ভ্রান্ত ধারনা এর উত্তম প্রমাণ মিলেনি যে এলিয়েন কি আদৌ আছে নাকি রুপকথার গল্প? এলিয়েন কি সত্যিই আছে?শেষ পর্ব এলিয়েন কি সত্যিই আছে?১ম পর্ব পড়ুন (বানানগত ভুল ভুল ) এলিয়েনদের নিয়ে কত্ত চিন্তা বিজ্ঞানীদের:-|!এলিয়েনরা কেন আসে পৃথিবীতে?কি খায়?কি রকম শ্বাসকার্য চালায়? ইত্যাদি বিভিন্ন চিন্তা বিজ্ঞানীদের মাথায় অলটাইম ঘুরপাক খায়।বিজ্ঞানীদের মতে এলিয়েনরা কিছুই খায়না,আর তারা পৃথিবীকে ভালভাবে ভিজিট করতে পৃথিবীতে আসে।আর তারা সব আবহাওয়াতেই থাকতে পারে।সবরকম গ্যাসেই তারা বাঁচতে পারে,সেটা অক্সিজেন হোক,নাইট্রোজেন হোক আর বিষাক্ত গ্যাস কার্বনডাই অক্সাইড ই হোক:-/! বিজ্ঞানীদের দাবী যে,এলিয়েনরা বুদ্ধিতে মানুষের থেকে সেরা,অথচ আল্লাহ পাক রব্বুল আলআমিন মানুষকেই সৃষ্টির সেরা জীব বলেছে অর্থাত্ আশ্রাফুল মাখলুকাত।আচ্ছা বিজ্ঞানীদের সবকিছুই মানতে হবে এটা কি কোন ইতিহাসের পাতায় আছে নাকি?অথবা কোন আইন পাশ করা আছে নাকি? বিজ্ঞানীদের দেয়া সকল তথ্য সঠিক নয় এর অনেক প্রমাণ আছে। বিজ্ঞানীদের সকল কথা যে সত্য নয় এর একটা প্রমাণ নিম্নে দিলাম •বিজ্ঞানীরা ৯০দশকে একবার বলেছিল যে "আর কয়েক মাস পর পৃথিবী ধ্বংস হবে"।কিন্তু তার পর ১শতক পার হয়ে গেল পৃথিবী কিন্তু ধ্বংস হয়নি বরংচ আরো উন্নত হয়েছে। তাই আমরা বলতে পারি যে বিজ্ঞানীদের সকল তথ্য সত্য নয় অতএব বিজ্ঞানীরা যে বলেছে এলিয়েন মানুষ থেকেও বুদ্ধিমান এটাও আমরা মানতে পারিনা এবং মানবোও না। বিজ্ঞানীদের দাবী কিছু কিছু এলিয়েন দেখতে কুমিরের মতো:-O! ছোট বেলায় একটা রুপকথার গল্প শুনেছিলুম যে রাক্ষসগুলো দেখতে নাকি ভয়াল ছিলো!দাঁতগুলো ইয়াবড় বড়!মাথার দু পাশে শিং,রক্তবর্ণ চোখ!ছোট বেলায় কতই না ভয় পেতাম!রাত্রে প্রসাব করতেও নামতাম না! পরে যখন বড় হলাম তখন জানতে পারলাম যে ঐ গুলা রুপকথার গল্প,আদিকালের গল্পকাররা এগুলো লিখে গিয়েছে। বর্তমান বিজ্ঞানীরাও তেমন আদিকালের গল্পকার হয়ে গেছে,যত্তসব উদ্ভট গল্প এরা বলে যাচ্ছে আর বিজ্ঞানমনষ্কা ছাত্রগুলোও বিজ্ঞানীদের এলিয়েন গল্পগুলো বিশ্বাস করে ধর্ম থেকে দূরে চলে যাচ্ছে!আবার এই ছেলেমেয়ে গুলোই নিজেদের মুক্তবুদ্ধির ধারকবাহক হিসেবে দাবী করছে:->! আসল কথা হলো বর্তমান বিজ্ঞানীরা পুরো পৃথিবীকেই ধর্মমুক্ত বানাতে চাচ্ছে যাতে করে তারা পুরো পৃথিবীতে প্রভুত্ব চালাতে পারে!আর আমাদের বর্তমান বিজ্ঞানে অজ্ঞান ছেলে মেয়েগুলো এটা না বুঝেই বিজ্ঞানীর কথাগুলো চোখ বুজে বিশ্বাস করে নিচ্ছে। পুরো পৃথিবীর ৭৫পার্সেন্ট লোক বিজ্ঞানীদের ফাঁদে পড়ে এলিয়েনে বিশ্বাস করে! অথচ বড় বড় বিজ্ঞানীরা বলেছে,আমরা যেটা নিজ চোখে না দেখি তাকে বিশ্বাস করিনা যেমন,এলিয়েন:-)। অনেক বিজ্ঞানী বলেছেন,আমরা এলিয়েনে মোটেই বিশ্বাসী নও।এলিয়েন ও নেহাত্ ড্রাকুলার গল্পের মতো সাজানো গপ্প,আমরা এলিয়েন নিয়ে মাথা ঘামাইনা আমরা মাথা ঘামাই,কি করে জগত্টাকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। সেদিন মেক্সিকোতে একটা খামারে ছোট্ট প্রাণী দেখে এক মহিলা চিত্কার করে ওঠে পরে সেটাকে পানিতে চুবিয়ে মেরে ফেলা হয় এর কয়েকদিন পর ঐ মহিলা অটোমেটিকলি গাড়িতে আগুন লেগে মরে যায়।বিজ্ঞানীরা দাবী করেছে যে ঐটা এলিয়েন ছিল এবং বাচ্চাকে মেরে ফেলার কারনে ও প্রতিশোধ নিয়েছে।অথচ আমরা জানি যে একমাত্র জ্বীন জাতীই তার বাচ্চাকে মেরে ফেল্লে প্রতিশোধ নেয়।আর বিজ্ঞানীরা বলেন যে এলিয়েন আগুনের ধরা ছোঁয়ার বাইরে!তাইলে বিজ্ঞানীদের তত্ত্ব অনুযায়ীই বলা যায় উক্ত কাজটা কোন এলিয়েনের ছিল না বরংচ এটা জ্বীনের কারসাজি ছিল। •এ ঘটনাটা থেকে কিছুটা হলেও বোঝা যায় যে বিজ্ঞানীরা আসলে যাদের কে এলিয়েন বলে ওগুলো আসলে জ্বীনজাতী ও গুলো এলিয়ন নয়।এলিয়েন বলতে কিছু এ ধরায় নাই। কয়েকদিন আগে গুগল ম্যাপে এলিয়েনদের যান অর্থাত্ সসার ধরা পরেছে বলে একটি সোরগোল সৃষ্টি হয়েছে।কিন্তু বিজ্ঞানীরা খতিয়ে দেখেছে ওগুলো সসার ছিলোনা ছিল মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির পথের কিছু চিহ্ন অথবা গ্রাবলওবিটিশন। এই লেখাটি pdf আকারে ডাউনলোড করুন
আর কত রক্ত দেখলে শান্ত হবে ইসরাইল?
কাণ্ডারি বল পুড়িছে মানুষ সন্তান মরে মোর মা'র
খবরের পাতা উল্টোলেই টপ শিরোনাম যেটা উঠে আসে সেটা হল ''ফিলিস্তিন/প্যালেস্টাইন"। বহুদিন যাবত্ ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাথে এই জিহাদিরা আপোষ হচ্ছেনা। তাই মিসাইল,রকেট ,অ্যাটম বোমা,বারুদের গন্ধ এদের নিত্য দিনের সঙ্গী।আমরা যখন চরম বিনোদনের সহিত ফুটবল উন্মোদনায় মাতি আর তখন প্যালেস্টাইনে আমার স্বজাতী আশঙ্কায় থাকে এই বুঝি ছাদের উপর রকেট পরল। চরম উগ্রপন্থি ইহুদিবাদী রাষ্ট্রের প্রধান 'নেতানিয়াহু' প্রতিনিয়ত ক্ষেপনাস্ত্র ছুড়ছে গাজা উপত্যকায়। এছাড়া ইসরাইলি ইহুদি সৈন্যরা নির্বিচারে গুলি করছে ফিলিস্তিনের জনগনের উপর।খুন,ধর্ষন,রাহাজানি ,লুটপাট তো আছেই। সাথে আছে জঘণ্যতম কাজ ,শিশু গুম করা,শিশু হত্যা,শিশুদের প্রহার করা।বিশ্বের প্রায় ২তৃতিয়াংশ লোক এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।নেদারল্যান্ড ,লন্ডন,যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন রাষ্ট্রে ইসরাইলের উপর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। কাল দেখলাম মৃতের সংখ্যা প্রায় ১০৬জন ছাড়িয়েছে আহত প্রায় ৬০০জন। শিশু,কিশোর গুম হয়েছে প্রায় হাজার খানেকের বেশি! আহত এবং নিহত বেশির ভাগই শিশু। বোমা ছুড়ে ফেলা হয় ঘরের উপর বিমান হামলা চালানো হয় তাদের উপর।গতকাল একটা বার্তা পেলাম যেখানে এক ফিলিস্তিনির ব্যাপারে লিখেছেন, অ্যাটাক করা হয়েছে আমার কোয়ার্টারে।আমার কোয়ার্টারে ফেলা হয়েছে বোমা।আমার পরিবারের যারা সদস্য ছিল সবাই নিহত হয়েছেন শুধুমাত্র আমি বেঁচে আছি। আরেকটা বার্তায় পেলাম,আমার শিশু সন্তানটি ঘরেই ছিল আর আমার ঘরের উপর বোমা ফেলা হয়েছে যা কিনা আমর শিশু সন্তানটিকে খন্ড খন্ড করে দিয়েছে। আমরা এখন প্রতিদিন ছয়বার নামাজ আদায় করি ,ফজর,জোহর,আসর ,মাগরিব ,এশা আর জানাজা। এমতাবস্থায় আমার বার বার মনে পরছে জাতিসংঘের কথা যারা কিনা বিশ্ব কন্ট্রোল করে।এরপর আমার মনে পরছে বিশ্বের মুসলিম কান্ট্রিগুলোর কথা ,সৌদী আরব,কুয়েত,কাতার,মালয়েশিয়া,বাংলাদেশ,মিশর,জাকার্তা,ব্রুনাই আরো অনেক যারা কিনা এই ফিলিস্তিনের স্বজাতী। আমি স্পষ্ট বুঝতে পেরেছি জাতীসংঘ সহ এই মুসলিম রাষ্ট্রগুলো ইহুদীবাদী ইসরাইল কে ভয় পায়।আর না হয় ফিলিস্তিনিদের পাশে গিয়ে দাঁড়াত। জাতীসংঘের মহাসচীব বানকিমুন নেতানিয়াহু কে বলেছিল যুদ্ধ বন্ধ করতে কিন্তু নেতানিয়াহু শ্রেফ জানিয়ে দিয়েছে যে যুদ্ধ বন্ধ করা এখন সম্ভব না এটা তাহলে রুলের বাইরে পরে যায়।আর তখনই বানকিমুন তখনই চুপ! শান্তিপ্রতিষ্ঠায় নোবেল বিজয়ী বারাক হোসেন ওবামা ও নেতানিয়াহুকে বলেছিল যুদ্ধ বন্ধ করতে কিন্তু নেতানিয়াহুর ঐ রুলে বারাক ওবামাও সাইলেন্ট। বাকি থাকে মুসলিম রাষ্ট্রগুলো যারা কিনা ভেজা বিড়াল হয়ে আছে! একমাত্র মিশর ফিলিস্তিনিদের চিকিত্সার সুবিধার জন্য তার বর্ডার খুলে দিয়েছে,কিন্তু চিকিত্সা করবে কাদের মৃত শিশুদের? আচ্ছা এই শিশু হত্যা কি মানবাধিকার লঙ্ঘন না? জাতিসংঘের সেইফ দ্য চিলড্রেন কি তাহলে শিশু হত্যা আর গুমের জন্য তৈরী হয়েছে? ফিলিস্তিনে যখন আমার ভাইকে বিনা মৃত পিতার পাশে গড়িয়ে গড়িয়ে যখন শিশুটি কাঁদে তখন কি মুসলমানের মনে হয়না ওটা তাদের ভাইয়ের ছেলে কাঁদছে তার মৃত ভাইটার পাশে শুয়ে? যখন সেভ দ্য চিলড্রেন Humanity এর কথা বলে তখন আমার শঙ্কা হয় এরা কি আরো শিশু গুম করার ফন্দি এঁটেছে? যখন জাতীসংঘ Humanity এর কথা বলে তখন আমার শঙ্কা হয় এরা কি ইসরাইলকে অস্ত্র দিয়ে হেল্প করে Humanity জাহির করছে? যখন নোবেল বিজেতা বারাক ওবামা বলে,Stop This Ware তখন আমার সন্দেহ হয় নতুন কোন ফন্দি। আমি গভীর ভাবে উপলব্দি করছি হিটলারকে। স্যার হিটলার আপনি আবার ফিরে আসবেন কি? এবার আর ৬০লক্ষ নয় আপনাকে বুঝে নিতে হবে কয়েক কোটিকে। আর ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছে করে সকল মুসলিম রাষ্ট্র গুলোর প্রধানদের দিক থেকে।কাণ্ডারি পুড়ছে মানুষ,সন্তান মরে মোর মা'র
কিয়ামতের দিন যদি ঐ সকল শহীদ শিশু আমাদের দিক আঙ্গুল তুলে বলে,আল্লাহ্!ওরা ছিল আমার স্বজাতী,ওদের গা থেকে পারুদের গন্ধ আসে।আমার মাথা উড়ে গিয়েছিল ওরা সহানুভূতি দেখায়নি।আমার আব্বার মাথা উড়ে গিয়েছিল ওরা এগিয়ে আসেনি!আমার মা ধর্ষিত হয়েছিল ওরা প্রতিবাদ করেনি!
তখন আমরা শুধু অসহায়ের মত চেয়ে থাকব ঐ ছেলেটির দিকে। আমাদের তো হায়া নেই তাই বেহায়ার মত চেয়ে থাকা ছাড়া আর কোন উপায়ই থাকবেনা। ইহুদির মত একটা নিকৃষ্ট অভিশপ্ত ,কুকুরের ন্যায় হিংস্র জাতী যারা কোন কালেই আল্লাহ্র শুকুর গুজার করেনি (সুরা ইয়াসিন আয়াত নং ১৩-২৬ এ পাবেন ইহুদিরা হল অভিশপ্ত) তাদের কাছে আজ মুসলিম রাষ্ট্রগুলো মাথানিচু করে আছে,Humanrights মাথা নিচু করে আছে ,Save The Children মাথা নিচু করে আছে! আফসুস এই যে পৃথিবীতে এখন Humanity বলতে কিছু নেই সব মিসাইলে পুড়ে গেছে। আর লজ্জা শরম ও উড়ে গেছে মুসলিম কান্ট্রি থেকে। স্বজাতীর প্রতি ভালবাসাও হয় পুড়ে গেছে মিসাইলে। শুধু রয়ে গেছে হায়াহীন খোসা মানুষ যারা না পারে করতে প্রতিবাদ,না পারে স্বজাতীকে রক্ষা করতে।একটা জঙ্গলের পশু ও কিন্তু স্বজাতীর বিপদ আপদে দৌড়ে আসে তাকে রক্ষা করতে যেটা আমরা পারিনা। কেন পারিনা? No Answer! নিজেকে নিজে লজ্জা দিতে চাইনা আমি। তাইতো ঐ প্রশ্নটা এড়িয়ে গেলাম। শুধু আমার ফিলিস্তিন ,গাজার নাগরিকদের বলি,ভাই তোমরা আমাদের ক্ষমা কর আজ আমাদের হাতে শৃঙ্খল পরানো আর হৃদয়ে পাথর তাইতো স্বজাতীর মৃত্যু খবর শুনে একটুও বুক কাঁপেনা।জাগেনা কোন ব্যাথার অনুভুতি। আমরা কি করব
Saturday, July 12, 2014
অসাধারন ৩টি ইসলামি পর্যালোচনার PDF বই ডাউনলোড করুন!
পাঠক ভাইদের জ্ঞান আহরনের উত্সাহ দেখে আরো ৩টি PDF বই আমাকে বানাতেই হল। এখানে ২জন প্রগতিশীল নবীন লেখকের ৩টি লেখা দিয়েছি।
১/মুক্তমনা ওয়েবসাইটটি কি মুক্তচিন্তার ধারক বাহক হতে পারে? ২/ইসলাম:জ্ঞান বিজ্ঞান ৩/বিল্লাল ফিল্পস আমরা আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থী।
আশা করি পাঠক ভাইয়েরা পড়ে ইসলামিক জ্ঞান বৃদ্ধি করতে পারবেন। তাহলে আর দেরী কেন সরাসরি ডাউনলোড লিঙ্কে চলে যান, DOWNLOAD DOWNLOAD DOWNLOAD৩টি ছোট বই মাত্র কয়েক Kbps.ছোট মরিচে যেমন ঝাল বেশি তেমনি এই বইগুলো ছোট হলেও যুক্তিতে ভরপুর।
চমত্কার ২টি ইসলামি বই!
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। পড়ুয়া পাগল ইসলামী মাইন্ডেড ভাই বোনদের জন্য সুন্দর দুটি বইয়ের সরাসরি ডাউনলোড লিঙ্ক নিয়ে এলাম।ডাউনলোড করে পড়ুন। ডাউনলোড-DOWNLOAD ডাউনলোড-DOWNLOAD বইগুলো সংগ্রহ করা হয়েছেঃamarboi.ওয়ার্ডপ্রেস.কম থেকে। সবাই ভাল থাকবেন।বই পড়ুন জ্ঞান আহরন করুন।
কিছু ইসলামিক বইয়ের সরাসরি ডাউনলোড লিঙ্ক!
প্রাণপ্রিয় মুসলিম ভাইবোনদের জন্য কিছু ইসলামিক বইয়ের সরাসরি PDF ডাউনলোড লিঙ্ক।সাথে আমার বানানো কিছু pdf বই।ডাউনলোড করে পড়া শুরু করুন! আমাদের স্বাধীনতা পর্দার এপার ওপার Download আল কুর আন শিক্ষা Download যাবতীয় হাদীস Download আসহাবে রাসুলের জীবন কথা-১ Downloadআসহাবে রাসুলের জীবনকথা-২ Download]http://bnislamcdn.files.wordpress.com/2011/03/companions-of-prophets-with-interactive-link-part-02.pdf]Download আসহাবে রাসুলের জীবনকথা-৩ Download আসহাবে রাসুলের জীবনকথা-৩ Download সহীহমুসলিম-১ Download সহীহ মুসলিম-২ Download সহীহ মুসলিম-৩ Download সহীহ মুসলিম-৪ Download সহীহ মুসলিম-৫ Download সহীহ মুসলিম ৬ষ্ঠ খন্ড Download সহীহ মুসলিম ৭ম খন্ড Download সৃষ্টিকর্তা বলে কেউ কি আছে? Download শিয়া Download কোন ধর্মে নারীদের সম্মান কেমন Download চেতনা দন্ড chetonadondo.pdf আর নয় ভ্রুন হত্যা Download এলিয়েন কি সত্যিই আছে-১ম পর্ব Download এলিয়েন কি সত্যিই আছে-২য় পর্ব Download মাহমুদুর রহমানের কলাম-১ Download মাহমুদুর রহমানের কলাম-২ Download আমার যত লেখা Download
মাহমুদুর রহমানের কলাম
ক্রুসেডের লক্ষ্য এখন বাংলাদেশ মাহমুদুর রহমান এগার শতকের শেষ দশক থেকে পরবর্তী প্রায় দু’শ’ বছর ধরে ইউরোপীয় খ্রিস্টান সম্প্রদায় মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে লাগাতার যুদ্ধ চালিয়ে গেছে তাকেই ক্রুসেড নামে অভিহিত করা হয়েছে। ১০৯৫ সালে পোপ উরব্ান-২ (Pope Urban II) বাইজেনটাইন সম্রাট এলেক্সিয়াস-১ (Emperor Alexius I)-এর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইউরোপের প্রধানত লাতিন খ্রিস্টানদের সমন্বয়ে সেনাবাহিনী গঠন করে প্রথম তুর্কি সেলজুকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাভিযানে অবতীর্ণ হন এবং শেষ পর্যন্ত ১০৯৯ সালে তখন পর্যন্ত মুসলমানদের নিয়ন্ত্রণাধীন পবিত্র জেরুজালেম নগরী অধিকার করতে সক্ষম হন। প্রকৃতপক্ষে মুসলমানের অর্ধচন্দ্রের (Crescent) বিরুদ্ধে খ্রিস্টীয় ক্রসের (Cross) যে আগ্রাসন তাকেই লাতিন ইউরোপ ক্রুসেড বা ধর্মযুদ্ধ নাম দিয়ে মধ্যযুগে ইউরোপীয় খ্রিস্টানদের মধ্যে ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিল। মুসলমানদের বিরুদ্ধে পরিচালিত এসব তথাকথিত ধর্মযুদ্ধ তত্কালীন সময়ে খ্রিস্টান ধর্মগুরু পোপের অনুমোদন ও নির্দেশক্রমেই পরিচালনা করা হতো। প্রথম ক্রুসেডে মুসলমানরা জেরুজালেম থেকে বিতাড়িত হলেও ১১৮৭ সালের তৃতীয় ক্রুসেডে সুলতান সালাদিনের নেতৃত্বে মুসলমান বাহিনী জেরুজালেম পুনরুদ্ধার করে। ক্রুসেডের হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস বর্তমান দশকে নতুন করে প্রাসঙ্গিকতা পেয়েছে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে। নবরূপে ক্রুসেডের ধারণার সূত্রপাত অবশ্য ১৯৯৩ সালে স্যামুয়েল পি হান্টিংটন তার সভ্যতার সংঘাত (Clash of Civilizations) তত্ত্বের মাধ্যমেই করে গেছেন। গত এক দশক ধরে আফগানিস্তান ও ইরাকে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী যৌথবাহিনীর যে আগ্রাসন চলছে সেটি মূলত মধ্যযুগীয় ক্রুসেডেরই আধুনিক সংস্করণ মাত্র। ২০০১ সালে মার্কিনিদের যুদ্ধ প্রস্তুতিকালীন সময়ে তত্কালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ ক্রুসেড শব্দটি একবার উচ্চারণও করেছিলেন। আন্তর্জাতিক মহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির আশঙ্কা থেকে তার উপদেষ্টারা আর দ্বিতীয়বার তাকে ওই শব্দটি উচ্চারণ করতে না দিলেও স্বঘোষিত Born again Christian জর্জ বুশ (জুনিয়র) যে বর্তমান বিশ্বকে ক্রুসেডের আলোকেই দেখে থাকেন এটা তার সামগ্রিক বক্তব্য, আচার-আচরণে পরিষ্কার। স্ক্যানডিনেভিয়াভুক্ত রাষ্ট্রসমূহসহ আধুনিক ইউরোপের অনেক দেশেই ইসলাম বিরোধিতা ক্রমেই প্রকট রূপ ধারণ করছে। ডেনমার্ক, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড ইত্যাদি রাষ্ট্রের ইসলামবিদ্বেষীরা রীতিমত উন্মাদের মতো আচরণ করছে। ক্যাথলিকদের ধর্মগুরু বর্তমান পোপ বেনেডিক্ট-১৬ তার প্রকাশ্য ইসলামবিরোধী বক্তব্যের জন্য কিছুদিন আগেও যথেষ্ট সমালোচিত হয়েছেন। বিশ্ব রাজনীতির উপরোক্ত বাস্তবতার আলোকে এবার বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক দৃশ্যপট বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। আমার অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশ পৃথিবীর একমাত্র মুসলমান প্রধান রাষ্ট্র যেখানে সরকারি মদতে গণমাধ্যমে অবিরত ইসলামবিরোধী কুিসত প্রচার চালানো হয়। আমাদের জাতীয় দিবসগুলোতেও ঐক্যের বাণী প্রচারের পরিবর্তে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকের ধর্ম বিশ্বাসের প্রতি ঘৃণা ছড়ানো হয়ে থাকে। বিস্ময়ের ব্যাপার হলো এই দুষ্কর্মটি যারা করে থাকেন তাদের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ আবার মুসলমান পরিবার থেকেই এসেছেন এবং পিতৃ প্রদত্ত মুসলমান নাম ধারণ করেই আছেন। পিতা-মাতার ধর্মবিশ্বাসের প্রতি এই অপরিসীম বিরাগ সৃষ্টির পেছনে ঠিক কোন দর্শন কাজ করেছে তা আমার জানা নেই। তবে বাংলাদেশকে যে একটি শ্রেণী মুসলমানপ্রধান, স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আর দেখতে চায় না, সেটি ক্রমেই প্রমাণিত হচ্ছে। তারা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের একাধারে বীরত্বপূর্ণ ও ট্র্যাজিক ঘটনাবলীকে দীর্ঘদিন ধরে সাফল্যের সঙ্গে তাদের উদ্দেশ্য পূরণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে চলেছে। পশ্চিম পাকিস্তানের পুঁজিপতি, সামন্তবাদী গোষ্ঠী ও সামরিক একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রামকে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ গণমাধ্যমে ইসলামের বিরুদ্ধে লড়াই হিসেবে দেখানোর অপচেষ্টা দীর্ঘদিন ধরে চললেও দৃশ্যত প্রচারণার তীব্রতা বেড়েছে নব্বইয়ের দশক থেকে। স্যামুয়েল হান্টিংটনের চরম ইসলামবিদ্বেষী সভ্যতার সংঘাত তত্ত্বের উদ্ভবও যে প্রায় একই সময়ে হয়েছে এই বিষয়টিকে কেবল কাকতালীয় ভেবে উড়িয়ে দেয়ার সুযোগ নেই। আগেই বলেছি হাজার বছর আগে ইসলামিক ক্রিসেন্টকে মোকাবেলা করার জন্যই খ্রিস্টান ধর্মযাজকরা ক্রুসেড আবিষ্কার করেছিলেন। বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে নির্যাতনকারী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের স্বল্পসংখ্যক এ দেশীয় দালালগোষ্ঠী মুসলমান ধর্মাবলম্বী হওয়ার বিষয়টিকে সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের বর্তমান দোসররা সুযোগ হিসেবে নিয়ে ইসলামের সব প্রতীককে জনগণের কাছে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে চলেছে। ইসলামের আদিযুগ থেকেই চাঁদ- তারা ইসলামী আন্দোলনের প্রতীক রূপে এই ধর্মাবলম্বীদের পতাকায় প্রদর্শিত হয়ে আসছে। এই প্রতীক কিংবা সবুজ রং পাকিস্তানের পতাকায় আছে বলেই এগুলো সে দেশটির সম্পত্তি হয়ে যায়নি। প্রসঙ্গক্রমে, সমাজতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে অনেক দেশেই যে কাস্তে- হাতুড়ি ব্যবহারের রেওয়াজ রয়েছে সেটিও পাঠক জানেন। মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় রং ছিল সবুজ এবং অনেক হাদিসে সবুজকে বেহেস্তিদের পোশাকের রং হিসেবে বর্ণনা করা আছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো পবিত্র কোরআন শরীফের সূরা আদ দাহার-এর ২১ নম্বর আয়াতে স্বয়ং আল্লাহ্তায়ালা জান্নাতবাসীদের পোশাকের যে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছেন তা নিম্নরূপ : ‘তাদের আবরণ হবে চিকন সবুজ রেশম ও মোটা সবুজ রেশম।’ দাড়ি রাখা ইসলাম ধর্ম পালনে অপরিহার্য না হলেও আমাদের প্রিয় নবী যেহেতু দাড়ি রাখতেন, কাজেই এটি আমরা সুন্নত হিসেবেই পালন করে থাকি। নামাজ আদায় করার সময় টুপি পরে মাথা ঢেকে রাখাও আমাদের ধর্ম পালনেরই রীতি। মস্তক আবৃত করার এই রীতি অন্যান্য সেমেটিক ধর্মেও রয়েছে। ইহুদি জনগোষ্ঠীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এক বিশেষ ধরনের টুপি (Skull Cap) পরাকে তাদের ধর্ম পালনের অত্যাবশ্যকীয় আচার বলেই মনে করে। খ্রিস্টান ধর্মযাজকরা যথেষ্ট জাঁকজমকপূর্ণ টুপি পরেই রোববার চার্চে ধর্মোপদেশ প্রদান করে থাকেন। অথচ, বাংলাদেশের অধিকাংশ গণমাধ্যমে আজ যুদ্ধাপরাধীর কল্পিত চেহারা দেখাতে গিয়ে মুখে দাড়ি এবং মাথায় সবুজ রংয়ের চাঁদ- তারাখচিত টুপি পরিহিত এক রক্তলোলুপ, বীভত্স দানবকে তরুণ প্রজন্মের সামনে উপস্থাপন করছে। পশ্চিমা মিডিয়াতেও সবুজ রংকে সচরাচর নেতিবাচকভাবেই প্রদর্শন করা হয়ে থাকে। হলিউডের অধিকাংশ ছবিতে শয়তানকে (Devil) সবুজ দেহাবরণবিশিষ্ট দেখানো হয়। এ দেশেও রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধী দেখানোর নামে ইলেক্ট্রনিক এবং প্রিন্ট উভয় মিডিয়াতেই ইসলামের চিহ্নসমূহকে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীদের মতো করেই নেতিবাচকভাবে প্রদর্শন করা হচ্ছে। এদিকে আবার সরকারের সব মহল থেকেও টুপি, দাড়ি এবং হেজাবকে জঙ্গিবাদের চিহ্ন হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কট্টর সাম্রাজ্যবাদী ও ইসলামবিদ্বেষী জর্জ বুশের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের একজন স্বঘোষিত সাথী। মন্ত্রিসভায় তার সহকর্মী, আইনমন্ত্রী বাংলাদেশের কওমী মাদ্রাসাগুলোকে জঙ্গিবাদের প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ইসলামী ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ইসলাম ধর্মকে জঙ্গিবাদের জন্য দায়ী করে বক্তব্য দেয়ার পরও স্বপদে বহাল রয়েছেন। সরকার এবং তাদের সমর্থকদের কার্যকলাপে মনে হতে পারে অন্তত এদেশে ইসলামকে পরাজিত করতে এক হাজার বছর আগের মতো ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদীদের আর কষ্ট করার দরকার নেই, বাংলাদেশে ক্রুসেড পরিচালনার দায়িত্ব এদেশের মুসলমান নামের লেবাসে ইসলামবিরোধীরাই গ্রহণ করেছে। সরকার এবং তাদের সমর্থক গণমাধ্যমের অবস্থান হলো, জামায়াতে ইসলামী এ দেশে রাজনীতি করতে পারবে না, কারণ তারা যুদ্ধাপরাধী; হিযবুত তাহরিরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে কারণ তারা সরকারের বিবেচনায় জঙ্গি; দেশ থেকে কওমী মাদ্রাসা উঠিয়ে দিতে হবে, কারণ আইনমন্ত্রীর ভাষ্য অনুযায়ী সেখানে জঙ্গি প্রজনন কারখানা রয়েছে। সোজা কথা, ইসলাম ধর্মের আদর্শভিত্তিক কোনো রাজনীতি বাংলাদেশে করতে দেয়া হবে না। এ সবই বিদেশি প্রভুদের নির্দেশে ও তাদের সন্তুষ্টির জন্যই করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় বিএনপির নীতিনির্ধারকরা যদি আশা করে থাকেন যে, পশ্চিমারা বর্তমান সরকারের মতো অনুগত মিত্র ত্যাগ করে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে সমর্থন করবে তাহলে তারা এখনও বোকার স্বর্গে বাস করছেন। জামায়াতে ইসলামীও দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন তোষণ নীতি অনুসরণ করার ফল এখন ভালোভাবেই ভোগ করছে। বাংলাদেশের জনগণের উপলব্ধি করা প্রয়োজন, সপরিবারে শেখ মুজিব হত্যার জন্য আওয়ামী লীগ এক সময় সিআইএ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি দায়ী করলেও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে শেখ হাসিনার কোনো সমস্যা হয়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও একদা সোভিয়েতপন্থী আওয়ামী লীগকে বুকে টেনে নিয়েছে একবিংশ শতাব্দীর ক্রুসেডের সাথী হিসেবে। ইঙ্গ-মার্কিন-ইসরাইল-ইউরোপীয় ইউনিয়ন সমন্বয়ে গঠিত সাম্রাজ্যবাদী অক্ষশক্তি শত শত বিলিয়ন ডলার খরচ করে এবং নিজ দেশের হাজার হাজার নাগরিকের প্রাণহানি ও অঙ্গহানির বিনিময়ে ইরাক ও আফগানিস্তানে বুশ কথিত আধুনিক যুগের ক্রুসেড প্রায় এক দশক ধরে অব্যাহত রেখেছে। একবিংশ শতকের ক্রুসেডে ইরাক ও আফগানিস্তান ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দেশ দুটির লাখ লাখ নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে; মানব সভ্যতার আদি নিদর্শন লুটপাট করে বিজয়ীদের দেশে নিয়ে যাওয়া হয়েছে; উভয় দেশকে চিরস্থায়ী দাসত্বের বেড়াজালে আবদ্ধ করার প্রক্রিয়া চলছে। সাম্রাজ্যবাদী অভিন্ন গোষ্ঠী আজ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ইসলামিক রাষ্ট্র বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করেছে। এক নতুন ধরনের পরীক্ষা চালানো হচ্ছে আমাদের পবিত্র মাতৃভূমি নিয়ে। সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদীদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় জেনারেল মইন সেনাবাহিনীকে জাতিসংঘ শান্তি মিশন থেকে চাকরিচ্যুতির ভয় দেখিয়ে শিখণ্ডি রূপে দণ্ডায়মান রেখে তিন বছর আগে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিলেন। ২০০৭ সালে ক্ষমতা দখলের পর মইন-ফখরুদ্দীন জুটি তাদের বিদেশি প্রভুদের নির্দেশনা অনুযায়ী জাতীয়তাবাদী এবং ইসলামী শক্তিকে নির্মূল করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দেয়ার তার এই হীন প্রচেষ্টায় পেছন থেকে পাশ্চাত্যের সঙ্গে আঞ্চলিক আধিপত্যবাদী ভারতও জেনারেল মইনকে সেই সময় প্রয়োজনীয় সমর্থন প্রদান করেছে। এক- এগারো পরবর্তী সময়ে বহুবার লিখেছি, বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় ইসলাম বিদ্বেষী একটি সেক্যুলার গোষ্ঠীকে অধিষ্ঠিত করার যে পরিকল্পনা ২০০২ সাল থেকে ক্রমান্বয়ে প্রণয়ন করা হয়েছিল তারই একটি পর্যায় ছিল মইন-মাসুদ গংয়ের ক্ষমতা দখল। আনোয়ার চৌধুরী, বিউটেনিস, রেনাটা, ফ্রয়েন মিলিতভাবে যে কৌশল প্রয়োগ করে বাংলাদেশে চাঁদ- তারাকে পরাজিত করে বিনা খরচায় ক্রুসেডের ঝাণ্ডাকে বিজয়ী করতে পেরেছে সেখান থেকে অন্যান্য মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রসমূহেরও শিক্ষা নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। বাংলাদেশে ইউএনডিপি’র সাবেক প্রধান এদেশ থেকে বিদায়ের পূর্বমুহূর্তে ষড়যন্ত্রের সব দায়-দায়িত্ব অবশ্য জেনারেল মইন এবং সেই সময়কার অন্যান্য সিনিয়র জেনারেলদের ঘাড়ে চাপিয়ে গেছেন। এটাই পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের চিরকালের কৌশল। এক সময়ের মার্কিন মিত্র, সেক্যুলার ভাবাদর্শের সাদ্দাম হোসেনকে সপরিবারে হত্যা করতে বর্তমান বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তির নীতিনির্ধারকরা কোনো রকম বিবেকের তাড়না অনুভব করেনি। রেনাটাও বাংলাদেশের দেশদ্রোহী জেনারেলকে ভাগ্যের হাতে সমর্পণ করে চীনদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। এক-এগারোর বিদেশি কুশিলবদের মধ্যে এখনও যিনি সর্বশেষ ব্যক্তি হিসেবে বাংলাদেশে রয়ে গেছেন সেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ফ্রয়েন তার যাওয়ার মুহূর্তে বাংলাদেশের বিমূঢ় জনগণকে সর্বশেষ কী তথ্য দিয়ে যান সেটি জানার জন্য আমরা উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছি। বাস্তবতা হলো, দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের প্রচার চালিয়ে এদেশের জনগণের একটি বড় অংশের ধর্মবিশ্বাস দুর্বল করে দিয়েই সাম্রাজ্যবাদীরা রক্তপাতহীন ক্রুসেডে জয়লাভ করেছে। এখন সেই জয়কে সংহতকরণের পালা চলছে। বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মূল্যবোধের অবক্ষয়ের নমুনা প্রতিদিনই দেখতে পাচ্ছি। যে বিভ্রান্ত সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় মার্কিন ও ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদ তাদের উগ্র সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্য পূরণে সফল হয়েছে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সর্বপ্রথম সেই সেনাবাহিনীকেই চরম আঘাত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে নির্বাচন পূর্বকালে প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের লিখিত একটি নিবন্ধের উল্লেখ করা যেতে পারে, যেখানে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে একটি মৌলবাদী প্রতিষ্ঠান রূপে চিত্রিত করেছিলেন। সেই লেখায় তিনি সেনাবাহিনীতে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনারও আগাম ইঙ্গিত প্রদান করেছিলেন। সজীব ওয়াজেদ জয় কোন দেশের নাগরিক তা জাতির কাছে এখনও পরিষ্কার নয়। তার স্ত্রী মার্কিন নাগরিক এ তথ্য আমরা জানি। কিন্তু, তিনি খ্রিস্টান না ইহুদি ধর্মাবলম্বী তা নিয়েও অস্পষ্টতা রয়েছে। কাজেই তথাকথিত বিডিআর বিদ্রোহের নামে ২০০৯-এর ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার পিলখানায় নির্বিচার সেনা অফিসার হত্যাকাণ্ডকে শুধু কাকতালীয় বিবেচনার কোনো সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না। বিডিআর হত্যাকাণ্ড- পরবর্তী চৌদ্দ মাসে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি ইতিহাসের ঘৃণ্যতম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় কলঙ্কিত হয়েছে। বিরোধী দল এবং মতকে দমন করার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্র তার সব নির্মমতা ও ভয়াবহতা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটে চলছে, নারীর সম্ভ্রম ভূলুণ্ঠিত হয়েছে, রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের মাত্রা এক-এগারোর সরকারকে অতিক্রম করেছে, ইসলাম ধর্ম বিশ্বাসীদের ওপর নিপীড়ন রোমান যুগে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের করুণ অবস্থা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, বিচারের বাণী আর নিভৃতে নয় প্রকাশ্যেই কেঁদে চলেছে। যে বিদেশি কূটনীতিকরা উপদেশ- নির্দেশ দিয়ে চার দলীয় জোট সরকারকে পাঁচ বছর একেবারে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছিল, তারাই হঠাত্ করে ভিয়েনা কনভেনশনের প্রতি পরম শ্রদ্ধাশীল হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন সূত্রে শুনতে পাই, দূতাবাসের বিভিন্ন গোপনীয় বৈঠকে এরা নাকি বর্তমান সরকারের ইসলামবিরোধী সার্বিক কর্মকাণ্ডে যারপরনাই সন্তুষ্টি প্রকাশ করে থাকে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত চিহ্নিত চরম দক্ষিণপন্থী, ইসলামবিদ্বেষী দেশগুলোর কূটনীতিকরা বর্তমান সরকারকে পরবর্তী নির্বাচনে বিজয়ী করানোর কলাকৌশল প্রণয়ন নিয়ে আগাম আলাপ-আলোচনা আরম্ভ করে দিয়েছে। বাংলাদেশের সব প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সংসদ, সচিবালয়, আদালত, সেনাবাহিনী, নির্বাচন কমিশন, দুদক ইত্যাদির ভূমিকা এখন সুতোয় টানা পুতুলের চেয়ে বেশি কিছু নয়। এমতাবস্থায়, রাষ্ট্রকে রক্ষা করতে হলে সফল গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি প্রকৃত দেশপ্রেমিক, বিদেশিদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত, ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী, গণতান্ত্রিক মোর্চাকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসানোর বিকল্প নেই। প্রথম ক্রুসেডে জেরুজালেম হারানোর পর সেই পবিত্র নগরী তৃতীয় ক্রুসেডে সুলতান সালাদিনের নেতৃত্বে পুনরুদ্ধার করতে মুসলমানদের প্রায় একশ’ বছর অপেক ভাগ করুন ০ কোন মন্তব্য নেই:
Subscribe to:
Posts (Atom)