Pages

Wednesday, July 30, 2014

ইমাম বুখারী রহ. এর সংক্ষিপ্ত জীবনি

বুখারী ইমাম বুখারী উজবেকিস্তানের, সমরকন্দকাছাকাছি অবস্থিত মুহাম্মদ আল-বুখারী মাজার। উপাধিআমিরুল মুমিনীন ফিল হাদীস জন্ম১৩ই শাওয়াল, ১৯৪ হিজরী (৮১০ খ্রিস্টাব্দ) [১] বুখারাবর্তমান উজবেকিস্তানেঅবস্থিত মৃত্যু১লা শাওয়াল, ২৫৬ হিজরী( ৩১শে আগস্ট, ৮৭০ খ্রিস্টাব্দ) (৬২ বছর) [২] খরতঙ্গ, সমরকন্দেরনিকটে অবস্থিত জাতিভুক্ততুর্কী/পারসিক ধর্মবিশ্বাসস্বতন্ত্র মুজতাহিদ [৩] মূল আগ্রহহাদীসশাস্ত্র উল্লেখযোগ্য ধারণাশুধুমাত্র সহীহ হাদীসের সংকলন লক্ষণীয় কাজ সহিহ বুখারী, আদাবুল মুফরাদ যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন আহমাদ বিন হাম্বল আলী ইবনুল মাদীনী ইয়াহয়া বিন মায়ীন ইসহাক বিন রাহওয়াই যাদেরকে প্রভাবিত করেছেন ইমাম মুসলিম ইমাম বুখারী(জন্মঃ ৮১০-মৃত্যুঃ ৮৭০ খ্রিস্টাব্দ), আরব রীতি অনুযায়ী বংশধারাসহ পুরোনাম হলোমুহাম্মদ বিন ইসমাইল বিন ইবরাহীম বিন মুগীরাহ বিন বারদিযবাহ( আরবি/ ফার্সি ভাষায়: محمد بن اسماعيل بن ابراهيم بن مغيره بن بردزبه بخاری), একজন বিখ্যাত হাদীসবেত্তা ছিলেন। তিনি " বুখারী শরীফ" নামে একটি হাদীসের সংকলন রচনা করেন, যা মুসলমানদের নিকট হাদীসের সবোর্ত্তম গ্রন্থ বিবেচিত হয়। [৫]তার নাম মুহাম্মদ। উপনাম হলো আবু আবদুল্লাহ। আমিরুল মুমিনীন ফিল হাদীস তাঁর উপাধি। বুখারা তাঁর জন্মস্থান বলে তাকে বুখারী বলা হয়।ইমাম বুখারী রচিত গ্রন্থের সংখ্যা ২০টিরও বেশি। এগুলোর কিছু বিলুপ্ত হয়ে গেছে কিংবা পান্ডুলিপি আকারে সংরক্ষিত রয়েছে। আর কিছু গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর রচিত গ্রণ্থাবলীর মাঝে সবচেয়ে বিখ্যাত গ্রন্থ হলো বুখারী শরীফ। নীচে তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থের নাম দেয়া হলোঃ •কাজায়া আস-সাহাবা ওয়া আত-তাবিয়ীন(আরবীতেঃقضايا الصحبة و التابعين) •আত-তারীখ আস-সগীর(আরবীতেঃالتاريخ الصغير) •আল-আদাব আল-মুফরাদ(আরবীতেঃالأدب المفرد) •কিতাব আল-জুআফা আস-সগীর(আরবীতেঃكتاب الضعفاء الصغير) •কিতাব আল-কুনা(আরবীতেঃكتاب الكُنى) •কিতাবু খালকি আফআলিল ইবাদ(আরবীতেঃكتاب خلق أفعال العباد) •সহীহ আল-বুখারী(আরবীতেঃ صحيح البخاري ) •রাফওল ইয়াদাইন ফিস সালাত, •কিরাআত খলফিল ইমাম। •আত-তারিখুল কবির, •আত-তারিখুল ওয়াসাত, •খালকু আফয়ালিল ইবাদ, •আল জামেওল কবির, •আল মুসনাদুল কবির, •কিতাবুল আশরিয়া, •ওসামাস সাহাবা, •কিতাবুল মারসুত, •কিতাবুল বিজদান।ইমাম বুখারী (জন্মঃ ৮১০- মৃত্যুঃ ৮৭০ খ্রিস্টাব্দ), আরব রীতি অনুযায়ী বংশধারাসহ পুরো নাম হলো মুহাম্মদ বিন ইসমাইল বিন ইবরাহীম বিন মুগীরাহ বিন বারদিযবাহ (আরবি /ফার্সি ভাষায়: ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﺍﺳﻤﺎﻋﻴﻞ ﺑﻦ ﺍﺑﺮﺍﻫﻴﻢ ﺑﻦ ﻣﻐﻴﺮﻩ ﺑﻦ ﺑﺮﺩﺯﺑﻪ ﺑﺨﺎﺭﯼ ), একজন বিখ্যাত হাদীসবেত্তা ছিলেন। তিনি " বুখারী শরীফ" নামে একটি হাদীসের সংকলন রচনা করেন, যা মুসলমানদের নিকট হাদীসের সবোর্ত্তম গ্রন্থ বিবেচিত হয়। [৫] তার নাম মুহাম্মদ। উপনাম হলো আবু আবদুল্লাহ। আমিরুল মুমিনীন ফিল হাদীস তাঁর উপাধি। বুখারা তাঁর জন্মস্থান বলে তাকে বুখারী বলা হয়।[৬] জীবনী তিনি ১৩ই শাওয়াল শুক্রবার, ১৯৪ হিজরীতে (৮১০ খ্রিস্টাব্দ) খোরাসানের বুখারাতে (বর্তমানে উজবেকিস্তানের অংশ) জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ইসমাইল ইবনে ইব্রাহিম। তাঁর দাদার নাম ইব্রাহিম। তাঁর দাদার সম্পর্কে খুব বেশি জানা না গেলেও তাঁর বাবা ইসমাইল মুসলিম বিশ্বে একজন পরিচিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন হাদীসবিদ। তিনি হাদিস শাস্ত্রবিদ আল্লামা হাম্মাদ (রহঃ) এবং হযরত ইমাম মালেক (রহঃ) এর শাগরিদ ছিলেন। এছাড়াও বিখ্যাত মনিষী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক (রহঃ) এর শাগরিদ ছিলেন বলে জানা যায়। সমসাময়িক যুগের আরও অনেক বুজুর্গ আলেমদের কাছ থেকে দ্বীনই ফায়েজের জাহেরি ও বাতেনি ইলম হাসিল করে সুযোগ্য আলেম ও বিজ্ঞ মুহাদ্দিস হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ইমাম বুখারী (রহঃ) শিহ্মা, জ্ঞান ও যোগ্যতা শুধু পিতার দিক থেকেই পাননি বরং মাতার দিক থেকেও অর্জন করেছিলেন। ইমাম বুখারী (রহঃ) এর মাতা ছিলেন বিদুষী ও মহীয়সী মহিলা। নেককার মহিলা হিসেবে তাঁর পরিচিতি ছিল। এ সম্পর্কে একটা ঘটনা আছে। বাল্যকালে ইমাম বুখারী (রহঃ) এর একবার কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। এ রোগের প্রভাবে তাঁর দুই চোখ প্রায় অন্ধ হয়ে যায়। স্নেহময়ই মাতা পুত্রের চোখের আলোর পুনঃপ্রাপ্তির জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েন এবং আল্লাহ্ পাকের দরবারে প্রার্থনা করতে থাকেন। এ পর্যায়ে এক রাত্রে স্বপ্নে তিনি হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কে তার শিয়রে বসা অবস্থায় দেখতে পেলেন। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) তাকে বলেন, তোমার প্রার্থনা আল্লাহ্ পাক কবুল করেছেন। তাঁর দয়ার বরকতে তোমার পুত্র চোখের আলো ফিরে পেয়েছে। পরদিন সকালে ঘুম থেকে জেগে তাঁর পুত্র ইমাম বুখারী (রহঃ) বলে ওটলেন, আম্মা! আমি সবকিছু দেখতে পাচ্ছি। আমার চোখ ভাল হয়ে গেছে। এ ঘটনাটিই প্রমাণ করে ইমাম বুখারী (রহঃ) এর মাতা কত বড় মাপের বুজুর্গ মহিলা ছিলেন।ইমাম বুখারী (রহঃ) শৈশবেই বাবাকে হারান, ফলে মায়ের কাছে প্রতিপালিত হন। পিতা মারা যাওয়ার সময় প্রচুর ধনসম্পদ রেখে যান। ফলে ইমাম বুখারী (রহঃ) এর কোনরূপ প্রতিকূল অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়নি। মাতাই পুত্রের শিহ্মা-দিহ্মার ভার গ্রহণ করেন। ইমাম বুখারী (রহঃ) এর বাল্যকাল থেকেই শিহ্মা- দিহ্মার প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল। ইমাম বুখারী (রহঃ) প্রথমে কোরআন পাঠ শুরু করেন। মাত্র ৯ বছর বয়সে তিনি কুরআন মুখস্ত করেন। ১০ বছর বয়স থেকে তিনি হাদীস মুখস্ত করা শুরু করেন। ১৬ বছর বয়সেই তিনি "আবদুল্লাহ বিন মুবারক" এবং "ওয়াকীর পান্ডুলিপিসমূহ" মুখস্ত করে ফেলেন। মহান আল্লাহ্ পাক তাকে অনন্য সাধারন স্মরণ শক্তি দান করেছিলেন। [৭][৮] সফরসমূহ ষোল বছর বয়সে তিনি মা এবং বড় ভাইয়ের সাথে হজ্জে গমন করেন। হজ্জের পর তিনি মক্কাতে রয়ে গেলেন এবং হিজাযের হাদীসবিশারদদের কাছ থেকে হাদীস গ্রহণ করতে থাকলেন। এ সময় তিনি "কাজায়াস সাহাবা ওয়াত তাবীয়ীন" নামক গ্রণ্থ রচনা করেন। এরপর হাদীস অন্বেষণের জন্য তিনি ইরাক, সিরিয়া ও মিশরসহ বহু অঞ্চলে সফর করেন। একদা ইমাম বুখারি (রহঃ) মুহাদ্দিস দাখেলির দরসগাহে যোগ দেন। ইমাম দাখেলি (রহঃ) একটি হাদিসের সনদ বর্ণনা করবার সময় 'জুবাইর' এর স্থলে 'আবু জুবাইর' বলেছেন। ইমাম বুখারি নম্রস্বরে বললেন- এখানে আবু জুবাইর' এর স্থলে 'জুবাইর' হবে। অতঃপর ইমাম দাখেলি (রহঃ) বাড়িতে গিয়ে কিতাব দেখে তাঁর ভুল সংশোধন করেছেন। এর অব্যবহিত পরই দাখেলি (রহঃ) তাঁকে খুব স্নেহ করতেন। তিনি এতদ্ভিন্ন অন্য এক দরসগাহে ও যোগ দিতেন। সেখানে অন্য ছাত্রগন হাদিসগুলো লিখে নিতেন। তিনি তা লিখতেন না। তাঁর সহঃপাঠিগণ তাঁকে হাদিস না লিখে রাখার কারন জিজ্ঞেস করলে কোন ওতর দেননি। অতঃপর সহঃপাঠিগণ তাঁকে হাদিস লেখার জন্য জোর তাগিদ দিলে ও ওতর দিলেন- "আপনাদের লেখা কপিগুলো নিয়ে আসুন। তারা কপিগুলো নিয়ে আসলে তিনি ধা রাবাহিকভাবে তাদের সামনে হাদিসগুলো পাঠ করে শোনান। সেই মজলিসে তাদের লেখা অনুসারে প্রায় পনের হাজার (১৫,০০০) হাদিস মুখস্থ পাঠ করে শোনান। দীর্ঘ ১৬ বছর পর তিনি হাদীস অন্বষণের ভ্রমণ শেষ করে নিজ মাতৃভূমি বুখারায় ফিরে আসেন।[৯][১০] রচনাবলী ইমাম বুখারী রচিত গ্রন্থের সংখ্যা ২০টিরও বেশি। এগুলোর কিছু বিলুপ্ত হয়ে গেছে কিংবা পান্ডুলিপি আকারে সংরক্ষিত রয়েছে। আর কিছু গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর রচিত গ্রণ্থাবলীর মাঝে সবচেয়ে বিখ্যাত গ্রন্থ হলো বুখারী শরীফ। নীচে তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থের নাম দেয়া হলোঃ 1. কাজায়া আস- সাহাবা ওয়া আত-তাবিয়ীন (আরবীতেঃﻗﻀﺎﻳﺎ ﺍﻟﺼﺤﺒﺔ ﻭ ﺍﻟﺘﺎﺑﻌﻴﻦ) 2. আত-তারীখ আস-সগীর (আরবীতেঃﺍﻟﺘﺎﺭﻳﺦ ﺍﻟﺼﻐﻴﺮ) 3. আল-আদাব আল-মুফরাদ (আরবীতেঃﺍﻷﺩﺏ ﺍﻟﻤﻔﺮﺩ) 4. কিতাব আল-জুআফা আস-সগীর (আরবীতেঃﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻀﻌﻔﺎﺀ ﺍﻟﺼﻐﻴﺮ) 5. কিতাব আল-কুনা (আরবীতেঃﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻜُﻨﻰ) 6. কিতাবু খালকি আফআলিল ইবাদ (আরবীতেঃﻛﺘﺎﺏ ﺧﻠﻖ ﺃﻓﻌﺎﻝ ﺍﻟﻌﺒﺎﺩ) 7. সহীহ আল-বুখারী (আরবীতেঃ ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ) 8. রাফওল ইয়াদাইন ফিস সালাত, 9. কিরাআত খলফিল ইমাম। 10. আত-তারিখুল কবির, 11. আত-তারিখুল ওয়াসাত, 12. খালকু আফয়ালিল ইবাদ, 13. আল জামেওল কবির, 14. আল মুসনাদুল কবির, 15. কিতাবুল আশরিয়া, 16. ওসামাস সাহাবা, 17. কিতাবুল মারসুত, 18. কিতাবুল বিজদান [১১] বুখারী শরীফ ইমাম বুখারীর জীবনের শ্রেষ্ঠতম কর্ম হচ্ছে এই হাদীসগ্রন্থের রচনা। তিনি স্বীয় শিক্ষক ইসহাক বিন রাহওয়াইহ থেকে এই গ্রন্থ রচনার প্রেরণা লাভ করেন।একদিন ইসহাক একটি এমন গ্রন্থের আশা প্রকাশ তরেন,যাতে লিপিবদ্ধ থাকবে শুধু সহিহ হাদীস। ছাত্রদের মাঝে ইমাম বুখারী তখন এই কঠিন কাজে অগ্রসর হন।২১৭ হিজরী সালে মাত্র ২৩ বছর বয়সে তিনি মক্কার হারাম শরীফে এই গ্রন্থের সংকলন শুরু করেন। দীর্ঘ ১৬ বছর পর ২৩৩ হিজরী সনে এর সংকলনের কাজ সমাপ্ত হয়। বুখারী শরীফের সংকলনকালে তিনি সর্বদা রোজা রাখতেন এবং প্রতিটি হাদীস গ্রন্থ সন্নিবেশিত করার আগে গোসল করে দু' রাকাত নফল নামাজ আদায় করে মুরাকাবা ও ধ্যানের মাধ্যমে হাদীসের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতেন। [১২] এই গ্রন্থে তিনি সকল সহিহ হাদীস সংকলন করেননি। বরং সহিহ হাদীসের মাঝে যেগুলো তার নির্ধারিত শর্তে উন্নীত হয়েছে,সেগুলো লিপিবদ্ধ করেছেন। তিনি স্বয়ং বলেন, "আমি জা'মে কিতাবে সহিহ হাদিস ব্যতিত অন্যকোন হাদিস ওল্লেখ করিনি। তবে কলেবর বড় হয়ে যাওয়ার আশংকায় অনেক সহিহ হাদিসকে বাদ দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, আমি আমার কিতাবে প্রতিটি হাদিস লেখার পূর্বেই গোসল করেছি এবং দুরাকাআত আদায় করে নিয়েছি। অপর বর্ণনা হতে জানা যায় যে, ইমাম বুখারী (রহঃ) তাঁর স্বীয় কিতাবের শিরোনাম সমূহ রাসুলে করিম (সা) এর রওজা এবং মসজিদে নববির মধ্যস্থলে বসে লিখেছিলেন এবং প্রত্যেক শিরোনামের জন্য দুরাকায়াত নফ্ল নামাজ আদায় করেছেন। ইমাম বুখারীর প্রায় ৬ লাখ হাদীস মুখস্ত ছিল। বুখারী শরীফের পুরো নাম হলোঃ আল- জামি আল-সাহীহ আল-মুসনাদ মিন উমুরি রাসূলিল্লাহ ওয়া সুনানিহি ওয়া আইয়ামিহি। বুখারি শরীফ প্রণয়ের স্থানঃ আবুল ফজল মোহাম্মদ বিন তাহেরের বর্ণনা মতে, ইমাম বুখারী (রহঃ) তাঁর গ্রন্থখানি বুখারাতে বসে রচনার কাজ শেষ করেছেন। আবার কারো মতে মক্কা মুয়াজ্জামায় আবার কারো মতে বসরাতে। তবে ওল্লেখিত সকল বর্ণনা নির্ভুল। কেননা তিনি ওল্লেখিত সকল নগরীতে অবস্থান করেছেন। স্বয়ং ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেছেন, আমি আমার সহিহ বুখারি সঙ্গে নিয়ে বসরা শহরে ৫ বছর অবস্থান করেছি এবং আমার কিতাব প্রণয়ের কাজ শেষ করি। আর প্রতি বছরই হজ্ব পালন করি এবং মক্কা হতে বসরাতে ফিরে আসি।তিনি ৬ লাখ হাদিস হতে যাচাই বাছাই করে সর্বসাকুলে ১৬ বছর নিরলস সাধনা করে এ প্রসিধ্য গ্রন্থখানি প্রণয়ন করেন। এখানে মোট হাদিস আছে সাত হাজার একশত পচাতর খানি(৭,১৭৫)। আর পুনরুক্ত ছাড়া আছে চার হাজারের (৪,০০০) মতো। আর কারো মতে, বুখারিতে পুনরুক্ত হাদিস আছে মাত্র একখানি যা রুমালের বর্ণনা। মৃত্যু জীবনকালের শেষদিকে একবার বুখারার তৎকালীন শাসনকর্তা "খালিদ বিন আহমাদ যুহলী" হাদীসশাস্ত্রে ইমাম বুখারীর পান্ডিত্য দেখে তাকে দরবারে এসে শাসনকর্তা র সন্তানদেরকে হাদীস শেখাতে বলেন। ইমাম বুখারী এটাকে হাদীসের জন্য অবমাননাকর মনে করেন। ফলে উভয়ের মাঝে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। তখন তিনি মাতৃভূমি বুখারা ত্যাগ করে সমরকন্দের খরতঙ্গে চলে যান এবং সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ২৫৬ হিজরীর, ১লা শাওয়াল মোতাবেক ৩১শে আগস্ট, ৮৭০ খ্রিস্টাব্দের শুক্রবার দিবাগত রাতে মৃত্যুবরণ করেন। পরদিন শনিবার যোহরের নামাজের পর খরতঙ্গেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। [২][৮][১৩] তথ্যসূত্র 1. ↑ S. 'Abdul-Maujood, "The Biography of Imam Bukharee", Maktaba Dar- us-Salam, 2005, p. 13.

চমত্‍কার কয়েকটি ইসলামি বইয়ের PDF FILE!

ইসলাম সম্বন্ধে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান সবারই থাকা দরকার। আজকালকার মডার্ণ ছেলে মেয়েরা সকল ইতিহাসের প্রতি আগ্রহী কিন্তু ইসলামি ইতিহাসের প্রতি আগ্রহী নয়। ঐ সকল মডার্ণ ছেলে মেয়েদের আমি বলছি,হে ভাইয়া এবং আপু আগে স্বজাতীর ইতিহাস জানুন পরে অন্যকিছু,ইসলামের ইতিহাস অন্যসব ইতিহাসের চেয়ে গৌরবের। আপনাদের আমি কিছু বই দিচ্ছি এগুলো ডাউনলোড করে পড়ুন ইনশাআল্লাহ্ ভাল লাগবে । বইগুলোতে আপনি যা পাবেন,
•ইসলামের ইতিহাস। •সাহাবাদের জিহাদ। •জিহাদের গুরুত্ব। •জিহাদ । •মাসয়ালা মাসায়েল ।
ইসলামের আরো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এই বইগুলোতে। বইগুলো ডাউনলোড করে পড়ুন। বইগুলো ডাউনলোড করতে ছবির উপরে ক্লিক করুন, ২য় খন্ড ইবই
ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারাক (রঃ) অনুবাদঃ মাওলানা জাকারিয়া আব্দুল্লাহ (দাঃ বাঃ) মারকাযুদ দাওয়াতিল ইসলামিয়া, ঢাকা”
ডাউনলোড করুন এই বইটি। বইগুলো আমদানি করা হয়েছেঃ- ইসলামিবই.ওয়ার্ডপ্রেস.কম থেকে। আমদানি করেছি আমি,সজল আহমেদ।আমাকে সাহায্য করেছেন আমার বড় ভাই,ইমরান হোসেন সজীব

Tuesday, July 29, 2014

ইসলামের ইতিহাস:Pdf Book

Pdf ইসলামের ইতিহাস ১ম খন্ড ২য় খন্ড ৩য় খন্ড Preview:

ইসলামের প্রথম শহীদ হলেন হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বার রা.By:ফারাবী

ইসলামের ইতিহাসের প্রথম শহীদ হলেন একজন মহিলা সাহাবী এই কথাটা কি আমরা জানি ? হ্যাঁ হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা হলেন ইসলামের ইতিহাসের প্রথম শহীদ। মক্কী জীবনে হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহাকে নরাধম আবু জাহেল বর্শা মেরে হত্যা করেছিল। সাহাবী হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার এই পৃথিবীতে জন্ম হয়েছিল একজন দাসী হিসাবে। নরাধম আবু জাহেলের চাচা আবু হুজায়ফার গৃহে হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার জন্ম হয়। হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার স্বামী ছিলেন হযরত ইয়াসীর ইবনে আমির রাযিয়াল্লাহু আনহু। ইয়েমেন থেকে হযরত ইয়াসীর ইবনে আমির রাযিয়াল্লাহু আনহু একজন দাস হিসাবে আবু হুজায়ফার গৃহে নীত হন। পরবর্তীতে ইসলাম পূর্ব যুগেই আবু হুজায়ফা উনার দাসী হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা কে উনার দাস হযরত ইয়াসীর ইবনে আমির রাযিয়াল্লাহু আনহুর সাথে বিয়ে দিয়ে দেন। উনাদের বিয়ে হবার পরে আবু হুজায়ফা ইবনে আল মুগীরা উনাদের ২ জন কেই স্বাধীন করে দেন। তাই হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার সাথে হযরত ইয়াসীর ইবনে আমির রাযিয়াল্লাহু আনহুর সংসার জীবন একজন স্বাধীন মানব মানবী রুপেই শুরু হয়, কিন্তু আরব সমাজের রীতি ছিল কোন দাস দাসী স্বাধীন হয়ে গেলেও স্বাধীন হওয়ার পর আরবের একজন প্রভাবশালী গোত্রপতির অধীনেই উনাদের কে আরব সমাজে বসবাস করতে হবে। যেহেতু আবু হুজায়ফা আবু জাহেলের আপন চাচা ছিল তাই আবু হুজায়ফার মৃত্যুর পর ইসলাম পূর্ব যুগ থেকেই হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা এবং হযরত ইয়াসীর ইবনে আমির রাযিয়াল্লাহু আনহু আবু জেহেলের অধীনতা মেনেই একটি স্বাধীন মানুষ দম্পত্তি রুপে মক্কায় বসবাস করছিলেন। উনারা মুলত মক্কার বনু মাখযুম গোত্রের অধীনতা মেনেই মক্কায় বসবাস করতেন। হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা যখন বার্ধক্যে আক্রান্ত হন ঠিক তখনই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নব্যুয়ত পান। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্বীন ইসলাম প্রচার করার সাথে সাথে হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা ও উনার স্বামী হযরত ইয়াসীর ইবনে আমির রাযিয়াল্লাহু আনহু ও উনাদের ছেলে হযরত আম্মার রাযিয়াল্লাহু আনহু মুসলমান হয়ে যান। উনারা প্রথমে গোপনে মুসলমান হলেও কিছুদিন পর প্রকাশ্যে উনারা দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করার ঘোষণা দেন। মক্কায় উনাদের এমন কোন আত্মীয় স্বজন ছিল না যারা উনাদের কে কুরাইশদের নিষ্ঠুরতার হাত থেকে বাঁচাতে পারেন। হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা ছিলেন শুরুর দিক থেকে ইসলাম গ্রহন করার মাঝে ১৭ তম ব্যক্তি। ইসলাম গ্রহন করার পর হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার উপর নরাধম আবু জেহেল অকথ্য অত্যাচার শুরু করে। নরাধম আবু জাহেল হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা এবং উনার স্বামী হযরত ইয়াসীর ইবনে আমির রাযিয়াল্লাহু আনহা কে মক্কার আল-বাতহা উপত্যকার মরুভূমির তপ্ত বালুর মাঝে লোহার পোষাক পড়িয়ে শুয়িয়ে রাখত। যেহেতু হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার কোন নিজস্ব গোত্র ছিল না তাই আবু জাহেল তার ইচ্ছামত হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা কে অত্যাচার করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার পাশ দিয়ে যেতেন তখন বলতেন-” হে ইয়াসিরের পরিবার- পরিজন ! ধৈর্য্য ধর। তোমাদের জন্য সুসংবাদ। তোমাদের জন্য রয়েছে জান্নাত ! ” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা কে জান্নাতের সুসংবাদ দিতেন তখন হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতেন- “ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি জান্নাতের সুগন্ধ এই তপ্ত মরুভূমির বুকেই শুয়েই পাচ্ছি।” দীর্ঘদিন অত্যাচার নির্যাতন করার পরও যখন হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা দ্বীন ইসলাম পরিত্যাগ করল না তখন একদিন নরাধম আবু জাহেল হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার লজ্জাস্থানে বর্শা নিক্ষেপ করে উনাকে শহীদ করে ফেলে। হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার মৃত্যুর পর নরাধম আবু জেহেল উনার স্বামী হযরত ইয়াসীর ইবনে আমির রাযিয়াল্লাহু আনহু কেও তীরবিদ্ধ করে শহীদ করে ফেলে। হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার শাহাদাতের ঘটনাটা ঘটে ৬১৫ খ্রীষ্টাব্দে। অর্থ্যাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নব্যুয়ত পাওয়ার পর ৫ বছর পর হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা শাহাদাত বরন করেন। বদর যুদ্ধে নরাধম আবু জেহেল নিহত হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার ছেলে হযরত আম্মার রাযিয়াল্লাহু আনহুকে বলেন- “আল্লাহ সুবহানাতায়ালা তোমার মায়ের ঘাতককে হত্যা করেছেন।” হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার একমাত্র সন্তান হযরত আম্মার রাযিয়াল্লাহু আনহুর তত্ত্বাবধানেই মদীনার কুবা শহরে ইসলামের ইতিহাসের প্রথম মসজিদ তৈরি হয়। আজ থেকে ১৪০০ বছর পূর্বে এই মহান মহিলা সাহাবী হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা ইসলামের সুমহান সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়ে মুসলমান হয়ে যান। ইসলাম গ্রহন করার কারনে আবু জেহেল হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার প্রতি কত অত্যাচারই না করেছিল কিন্তু হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা দ্বীন ইসলাম থেকে একচুলও সরে যাননি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন দ্বীন ইসলাম প্রচার করা শুরু করেন তখন মক্কার একদম প্রান্তিক জন গোষ্ঠীর লোকেরাই প্রথম দ্বীন ইসলাম গ্রহন করেন। হযরত সুমাইয়া, হযরত বেলাল উনারা ছিলেন মক্কার সেই প্রান্তিক জন গোষ্ঠীর লোক। আজকে আমাদের মুসলিম ঘরের মেয়েদের আদর্শ হল হলিউঠের নায়িকা Angelina Jolie, Keira Neightly, Megan fox, Penelope Cruz, Paris Hilton. এলিট পরিবারের কয়টা মুসলিম মেয়ে জানে যে ইসলামের ইতিহাসের প্রথম শহীদ হলেন একজন মহিলা সাহাবী হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা ? এই মহান মহিলা সাহাবী মক্কা বিজয়, সাহাবীদের ইরাক ইরান মিশর তুরস্ক সিরিয়া, মুসলমানদের গৌরব উমাইয়া, আব্বাসীয়, উসমানীয় খিলাফত কিছুই দেখে যেতে পারেননি। হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা যখন শহীদ হন তখন সারা পৃথিবীতে ১০০ জনেরও বেশী মুসলমান ছিল না। আমরা মুসলমানরা তখন এতই অসহায় ছিলাম যে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা কে লোহার বর্ম পরিয়ে মরুভুমির উত্তপ্ত বুকে শুয়াইয়ে রাখা হত কিন্তু সাহাবীরা কিছুই করতে পারতেন না। কিন্তু মক্কার সেই রুঢ় পরিবেশেও হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা দ্বীন ইসলাম থেকে একচুলও সরে দাঁড়াননি। আর আজকে আমরা মুসলমানের ঘরে জন্ম নিয়েও ইসলাম পালন করিনা, মুসলমান ঘরের কত ছেলে আজকে নাস্তিক সংশয়বাদী হয়ে যাচ্ছে কিন্তু এই ছেলে গুলি যদি একটু কষ্ট করে হায়াতুস সাহাবা, আসহাবে রাসূলের জীবন কথা এই বই গুলি থেকে মহান সাহাবীদের জীবনী গুলি পড়ত তাইলে বুঝত ইসলাম গ্রহন করার জন্য এই মক্কী জীবনে সাহাবীদের উপর মক্কার কাফেররা কত অত্যাচারই না করেছে। কিন্তু সাহাবীরা এক চুলও ইসলাম থেকে সরে দাড়ান নি। বাংলা ভাষায় সাহাবীদের জীবনীর উপর ২ টা বই আছে। হায়াতুস সাহাবা ও আসহাবে রাসূলের জীবন কথা। তাছাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকেও “হাদীস চর্চায় মহিলা সাহাবীদের অবদান” শীর্ষক খুব সুন্দর একটি বই বের করেছে। সকল মুসলিম ভাই বোনকে সাহাবীদের জীবনী পড়ার জন্য বিনীত ভাবে অনুরোধ করছি।

Sunday, July 27, 2014

মার্ক জুকারবার্গ তো একজন নাস্তিক তাইলে তার আবিষ্কৃত ফেইসবুক ব্যবহার করা কি মুসলমানের জন্য ঠিক হচ্ছে?:শফিউর রহমান ফারাবী স্টিকি পোস্ট

মার্ক জুকারবার্গ তো একজন নাস্তিক তাইলে তাঁর আবিস্কৃত ফেইসবুক ব্যবহার করা কি মুসলমানদের জন্য ঠিক হচ্ছে ? লিখেছেনঃ শাফিউর রহমান ফারাবী (তারিখঃ বৃহঃ, ২৭/১২/২০১২ - ১৫:০৪) নাস্তিক ভাইয়া ও আপুরা প্রায়ই একটা প্রশ্ন করেন যে মার্ক জুকারবার্গ তো একজন নাস্তিক তাইলে তাঁর আবিস্কৃত ফেইসবুক ব্যবহার করা কি আমাদের জন্য ঠিক হচ্ছে ? আচ্ছা নাস্তিক আপুরা যে প্রতিদিন সকালে রিকশায় চড়ে ক্যাম্পাসে যান সেই রিকশাওয়ালা তো মুসলমান তাইলে সেই রিকশায় চড়া কি ঐ নাস্তিক আপুর জন্য ঠিক হচ্ছে ? এখন হয়তো ঐ নাস্তিক আপু আমাকে বলবেন যে - '' আমি তো আমার বাপের টাকা খরচ করেই রিকশায় চড়ছি কিন্তু তুমি তো FREE তে ফেইসবুক ব্যবহার করছ ? '' আপাত দৃষ্টিতে ফেইসবুক ব্যবহার করা FREE হলেও মার্ক জুকারবার্গ কিন্তু Google Adsense এর মাধ্যমেই আমাদের কে উনার ফেইসবুক ব্যবহার করতে উত্সাহ দেন। আর আমরা ফেইসবুক ব্যবহার করি বলেই মার্ক জুকারবার্গ ফেইসবুক থেকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোটি কোটি ডলার কামিয়ে বান্ধবীদের সাথে ছবি তুলতে পারেন। আর ফেইসবুকের সব কিছুই কিন্তু FREE না। সামান্য কিছু ডলারের অভাবে বর্তমানে অনেক বড় বড় পেইজের এডমিনরা এখন Like খরায় ভুগছেন। Gmail ব্যবহার করাও কিন্তু Free কিন্তু আপনি পিসি থেকে Gmail এ ঢুকলে Google ও আপনাকে অনেক বিজ্ঞাপন দেখাবে। ইন্টারনেটের অনেক কিছু আপাতদৃষ্টিতে Free মনে হলেও এটা দেখিয়ে ঐসব কোম্পানী তাদের user বাড়িয়ে তারপর ঐ user দের কে ভিত্তি করে তারা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোটি কোটি ডলার আয় করে। আচ্ছা মার্ক জুকারবার্গ তো একজন Programmer আর আমরা জানি কম্পিউটার Program করতে এলগরিদমের সাহায্য নিতে হয় ? আর এলগরিদম বীজগণিতের জনক তো মুসলমানরা। মুসলিম বিজ্ঞানী আল খাওরেজমি তো বীজগণিত ও এলগরিদমের জনক। এলগরিদম শব্দটি আল খাওরেজমি থেকেই এসেছে। আর আল খাওরেজমির লেখা ''আল জেবর ওয়াল মুকাবিলা '' বই থেকেই আল জেবরা শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। তাহলে মধ্যযুগের একজন মুসলিম গণিতবিদের আবিস্কৃত তত্ত্বের সাহায্যে ফেইসবুকের Programming চালানো কি মার্ক জুকারবার্গের জন্য ঠিক হচ্ছে ? আসলে এইখানে আমাদের একটা জিনিস বুঝতে হবে যে জ্ঞান বিজ্ঞান বস্তু উপকরন এইগুলি হচ্ছে মানব সভ্যতার অংশ। এইসব জড় বস্তু কোন জাতি বা ধর্মের নিজস্ব সম্পত্তি নয়। সাহাবীরা ইরাক ইরান মিশর তুরস্ক জর্ডান চীন এইসব দেশের খ্রিষ্ট ধর্ম, অগ্নি পূজ্ মূর্তি পূজা, এবং ইসলাম বিরোধী সংস্কৃতিকে অস্বীকার করেছিলেন কিন্তু ঐসব দেশের প্রযুক্তি ভাষা ও খাদ্যভাস কে সহজ ভাবে গ্রহন করেছিলেন। আর ধর্ম হচ্ছে যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার কিন্তু এই মানব সভ্যতার জ্ঞান বিজ্ঞান প্রযুক্তি হচ্ছে সমগ্র মানব জাতির সম্পদ। বর্তমানে ইউরোপ আমেরিকা পেটেন্টের মাধ্যমে প্রযুক্তি পণ্য গুলি খুব ব্যয়বহুল করে তুলেছে ইসলামী শরীয়াহ কিন্তু তথাকথিত পেটেন্টের এই কড়াকড়ি গুলি সমর্থন করে না। ইসলামী আক্বীদা সংশোধনের জন্য আরো পড়তে পারেন

Saturday, July 26, 2014

ইহুদিবাদী ইসরাইলের জন্মের ইতিকথা

গত ১৫ই মে ছিল ইহুদিবাদী ইসরাইল প্রতিষ্ঠার বার্ষিকী। এ দিনটি ফিলিস্তিনসহ মুসলিম বিশ্বের কাছে ‘নাকাবা দিবস’ হিসেবে পরিচিত। ‘নাকাবা’ অর্থ হলো বিপর্যয়। ১৯৪৮ সালের এ দিনেই আনুষ্ঠানিকভাবে দখলদার ইসরাইল প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এ বিষয়েই এখানে আমরা বিস্তারিত আলোচনার প্রয়াস পাব। পৃথিবীতে প্রতিনিয়তই ঘটছে নানা পরিবর্তন। কোনো কোনো পরিবর্তনে মানুষ নতুনকরে আশাবাদী হচ্ছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীতে নৈতিকতা ও মানবিকতার বিকাশ ঘটবে বলে অনেকেই আশা করেছিলেন। ভেবেছিলেন বিশ্বজুড়ে অন্যায় ও অবিচারের মাত্রা কমে আসবে। মানুষ নিজের অধিকারের বিষয়ে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি অন্যের অধিকারকেও সম্মান করবে। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন শ্লোগানে আন্তর্জাতিক সংস্থার সংখ্যা বৃদ্ধির কারণেও এ আশা জোরদার হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে এর কিছুই ঘটেনি। আধিপত্যকামীদের ক্ষমতা ও অর্থের লোভ সবকিছুতেই হতাশার ছোয়া লাগিয়ে দিয়েছে। অন্যায় ও জুলুমের পদ্ধতিতে হয়তো পরিবর্তন এসেছে, কিন্তু তা পুরোদমেই অব্যাহত রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- ইসরাইলের দখলদারি এবং হত্যা- নির্যাতনে কোন পরিবর্তন আসেনি। নিঃসন্দেহে গত দুইশ’ বছরের মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য অপরাধের যেসব ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে সবচেয়ে কষ্টদায়ক হলো- ইহুদিবাদীদের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল। ফরাসি গবেষক রুযে গারুদি বলেছেন, “রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্যই ইহুদিবাদের উৎপত্তি। ইহুদিবাদীরা তাদের অবৈধ লক্ষ্য হাসিল করতে ইহুদি ধর্মকে অপব্যবহার করছে।” ইহুদিবাদীরা গত কয়েক দশক ধরে ফিলিস্তিনি জাতির ওপর চরম দুঃখ-দুর্দশা চাপিয়ে দিয়েছে। সেখানে চালানো হচ্ছে জাতিগত নিধনযজ্ঞ। ফিলিস্তিন দখল করে সেখানে এমন একটি অবৈধ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে যা গোটা মধ্যপ্রাচ্যকেই সংকটের গভীরে নিক্ষেপ করেছে। অবৈধ ইসরাইলের কারণে গত ৬৬ বছর ধরে গোটা মধ্যপ্রাচ্যই অশান্তি ও অনিরাপত্তার আগুনে জ্বলছে। এর জন্য সাম্রাজ্যবাদী সরকারগুলোর ক্ষমতালিপ্সাই প্রধান কারণ। ইসলামী জগতের একেবারে কেন্দ্রে ইহুদিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পেছনে সুদূরপ্রসারী অশুভ লক্ষ্য কাজ করেছে, তা বোঝা যায় ইতিহাস ঘাটলেই। ঊনবিংশ শতাব্দির দ্বিতীয়ার্ধে আধিপত্যের বলয় বাড়ানো নিয়ে তিন ইউরোপীয় দেশ ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছিল। বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য তারা নানা অপকৌশল অবলম্বন করছিল। ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের ওপরও তাদের লোলুপ দৃষ্টি ছিল। কারণ ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে এই ফিলিস্তিন। ভৌগলিক দিক থেকে এটি একটি কৌশলগত অঞ্চল। সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্টের শাসনামলে ফিলিস্তিনকে নিজের উপনিবেশে পরিণত করার জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালায় ফ্রান্স। ফ্রান্সের ষড়যন্ত্রের বিষয়টি টের পেয়ে এক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা হাতে নেয় ব্রিটেন। এ পরিকল্পনার আওতায় সাম্রাজ্যবাদ ও ইহুদিবাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা সৃষ্টি হয়। এরই আওতায় দখল হয়ে যায় কয়েক হাজার বছরের ঐতিহ্যের ধারক ফিলিস্তিন। ওসমানীয় সাম্রাজ্য যখন ক্ষয়িষ্ণু তখন পাশ্চাত্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিপ্লব চলছিল। এ অবস্থায় ওসমানীয় সাম্রাজ্যের পতনন্মুখ পরিস্থিতি ইউরোপকে বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে দেয়। তাদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য দু’টি জিনিস প্রয়োজন ছিল। এক- মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা ও ইউরোপের একাংশ নিয়ে গঠিত উসমানীয় সাম্রাজ্যকে ভেঙে টুকরো টুকরো করা। দুই- টুকরো টুকরো ভূখণ্ডে পাশ্চাত্যের স্বার্থ সংরক্ষণকারী পুতুল সরকার বসানো। ওসমানীয় সামাজ্যের পতন ও মুসলিম বিশ্বের প্রভাব ক্ষুণ্ন করার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৮৯৭ সালে থিয়োডর হার্জেল ও তার সহযোগীরা সুইজারল্যান্ডে এক সমাবেশের মাধ্যমে বিশ্ব ইহুদিবাদ সংস্থা প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়। হার্জেল পরবর্তীতে ইহুদিবাদের জনক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। বিশ্বে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা তার বড় লক্ষ্য। কোথায় ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে, সে ইস্যু সামনে আসলে বিভিন্ন এলাকার নাম উত্থাপিত হয়। হার্জেল ফিলিস্তিনেই ইহুদিদের জন্য প্রথম রাষ্ট্র ও সরকার গঠনের পক্ষে ছিলেন। ওসমানীয় সাম্রাজ্য হার্জেলের এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রাজি না হওয়ায় হার্জেলের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। সাম্রাজ্যবাদী ও ইহুদিবাদীদের নানা ষড়যন্ত্রের মাঝেই শুরু হয়ে যায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। যুদ্ধে নয়া শক্তির সমীকরণের এক পর্যায়ে ওসমানীয় সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। এরপর বিশ্ব ইহুদিবাদ সংস্থা নতুন করে শক্তি সঞ্চয় করে। ইহুদিবাদের প্রতি ব্রিটিশ সামাজ্যবাদের সমর্থন ফিলিস্তিনে প্রথম ইহুদিবাদী সরকার গঠনের ক্ষেত্র তৈরি করে। ১৯১৭ সালে উপনিবেশবাদী ব্রিটেন ও বিশ্ব ইহুদিবাদের মধ্যে সম্পর্কের নয়া অধ্যায় শুরু হয়। ওই বছর তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতির বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন। ১৯১৮ সালে নবপ্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রসংঘ ফিলিস্তিনের ওপর ব্রিটেনের একাধিপত্যকে স্বীকৃতি দেয়। তিন দশক ধরে ব্রিটিশ উপনিবেশ হিসেবে ছিল ফিলিস্তিন। তখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনের ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার সময় ছিল এটি। ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ শাসকরা ফিলিস্তিনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সব কাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছিল। এই তিন দশকে বিশ্ব ইহুদিবাদ সংস্থা ফিলিস্তিনে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফিলিস্তিনের দিকে ইহুদিদের ঢল নামে। নানা দেশ থেকে তাদেরকে সেখানে নিয়ে আসা হয়। ফিলিস্তিনিদের জমি দখল করে ইহুদিবাদীদের জন্য স্থায়ী আবাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়। শক্তি প্রয়োগ করে ফিলিস্তিনিদেরকে ভিটেমাটি ছাড়া করা হয়। এ সময় ব্রিটিশ সরকারের মদদে ইহুদিবাদীরা গোপনে ‘হাগানা’ নামের সন্ত্রাসী সেনাদল গঠন করে। তারা নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদেরকে হত্যার মিশনে নামে। একের পর এক বহু ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে। এ অবস্থায় পাশ্চাত্যের পুঁজিপতিরা ইহুদিবাদীদেরকে ব্যাপক অর্থ সাহায্য দেয়। এ অর্থে তারা ফিলিস্তিনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, কারখানা ও বিভিন্ন ইহুদিবাদী দপ্তর প্রতিষ্ঠা করে,যাতে সুযোগ এলেই ইহুদিবাদী সরকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়া যায়। অবশেষে ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ অন্যায়ভাবে ফিলিস্তিনকে ভাগ করার ইশতেহার প্রকাশ করে। এরই ভিত্তিতে ফিলিস্তিনকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়। এক অংশ দেয়া হয় ইহুদিবাদীদেরকে। সেখানে তারা ইহুদি সরকার প্রতিষ্ঠা করে। অন্য অংশ দেয়া হয় ফিলিস্তিনিদেরকে। একপেশে ওই ইশতেহারে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য ফিলিস্তিনের মোট ভূখণ্ডের অর্ধেককে বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু বিশ্বের মোড়লদের ইহুদিবাদপ্রীতির কারণে আজও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডেও মোতায়েন রয়েছে ইহুদিবাদী বাহিনী। জাতিসংঘের একপেশে ইশতেহারের পক্ষে ভোট দিয়েছিল ৩৩টি দেশ। এর মধ্যে ছিল আমেরিকা, ব্রিটেন ও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশ। ১৩টি দেশ ইশতেহারের বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল। ভোটদানে বিরত ছিল আরও দশটি দেশ। ইশতেহার প্রকাশের এক বছর পর ফিলিস্তিন অংশটিও ইহুদিবাদীরা দখল করে নেয়। এর ফলে সেখানে নেমে আসে হাহাকার। শরণার্থীতে পরিণত করা হয় অসংখ্য ফিলিস্তিনিকে। তার হয়ে পড়েন সহায়-সম্বলহীন। ফিলিস্তিনি মুসলমানদের এ দুর্দশার মাঝে ইসলামি ও আরব দেশগুলোর মধ্যে অনৈক্য ও বিবাদ ছিল শতাব্দির সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি। এই সুযোগে অবশেষে ১৯৪৮ মাসের মে মাসে ফিলিস্তিন থেকে ব্রিটিশ বাহিনী চলে যায়। শুরু হয় ইহুদিবাদীদের দুঃশাসন। ১৯৫০’র দশকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মায়ার বলেছিলেন, “ফিলিস্তিনের বর্তমান প্রজন্মকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে। এর ফলে পরবর্তী প্রজন্ম আর ফিলিস্তিনের কথা মনেই করতে পারবে না।” ফিলিস্তিন ভূখণ্ড ইহুদিদের ভূখণ্ড বলেও তিনি জোর গলায় দাবি করেছিলেন। তবে ফিলিস্তিনিদের সাহসিকতা ও প্রতিরোধ প্রমাণ করে গোল্ডা মায়ারের মতো ইহুদিবাদীদের স্বপ্ন পূর্ণ হয়নি। কারণ ফিলিস্তিনের নতুন প্রজন্মও মাতৃভূমি উদ্ধারে সোচ্চার রয়েছে এবং প্রতিরোধ সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইল নামক অবৈধ রাষ্ট্রের অস্তিত্ব শুধু ফিলিস্তিন নয় গোটা মধ্যপ্রাচ্যের জন্যই দুঃখ-দুর্দশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইসরাইল সৃষ্টির পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তি ও অনিরাপত্তা জেকে বসেছে। ১৯৪৮ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত ইসরাইল মধ্যপ্রাচ্যের ওপর অন্তত ১০টি যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে। এসব যুদ্ধের মধ্যে ১৯৬৭, ১৯৮২ ও ২০০৬ সালের যুদ্ধের কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ফিলিস্তিন জবরদখলের দুই দশক পর ১৯৬৭ সালে ইহুদিবাদীরা আরব বিশ্বের ওপর ব্যাপকভিত্তিক যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়। এ সময় ইহুদিবাদী ইসরাইল জর্দান নদীর পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা, পূর্ব বায়তুল মোকাদ্দাস, সিরিয়ার গোলান মালভূমি ও মিশরের সিনাই মরুভূমি দখল করে নেয়। আরব ভূখণ্ড দখলের পর এসব এলাকায় ইহুদি উপশহর নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে। জমি দখলের পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের অবশিষ্ট বসতিগুলোকে একে অপরের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত করা হয়। এর ফলে ফিলিস্তিনিদের শহর ও গ্রামগুলো পরস্পর থেকে আলাদা হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনিদেরকে বিচ্ছিন্ন করতে ফিলিস্তিনি অধ্যুষিত এলাকার মাঝখানে ইহুদি উপশহর নির্মাণ করা হয়েছে। ইসরাইল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়ার পর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইহুদিদেরকে নিয়ে আসার প্রবণতা আরো বেড়ে যায় এবং ফিলিস্তিনিদেরকে তাদের ঘর- বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে সেখানে ইহুদি অভিবাসীদেরকে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। এর ফলে সব হারিয়ে শরণার্থীতে পরিণত হয় অগণিত ফিলিস্তিনি। ইসরাইলের এ ধরনের অমানবিক তৎপরতার বিরুদ্ধে জাতিসংঘ দুটি ইশতেহার প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘের ইশতেহারে ১৯৬৭ সালে দখলীকৃত ভূখণ্ড থেকে সরে আসতে ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু ইসরাইল ওই দুই ইশতেহারকে কোন গুরুত্বই দেয়নি। এখনও তারা পুরোদমে ইহুদি বসতি নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া ২০০২ সালে ইসরাইল ৭০০ কিলোমিটার দীর্ঘ দেয়াল নির্মাণ করেছে। এ দেয়ালের উচ্চতা ছয় মিটার। এটি বর্ণবাদী দেয়াল নামেও পরিচিত। এই দেয়ালের মাধ্যমেও ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের আরো একটা অংশ নতুনকরে দখলে নিয়েছে ইহুদিবাদী ইসরাইল। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কোনো প্রতিবাদকেই গুরুত্ব দিচ্ছে না ইসরাইল। গাজার ওপর ইহুদিবাদীদের ৭ বছরের সর্বাত্মক অবরোধও এখনও অব্যাহত রয়েছে। অবরোধের পাশাপাশি গাজার ওপর মাঝে মধ্যেই ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে ইহুদিবাদীরা। বিশেষকরে ২০০৮ সালে ২২ দিন ও ২০১২ সালে ৮ দিনের ব্যাপক হামলায় গাজাজুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। শাহাদাতবরণ করে বহু নিরপরাধ ফিলিস্তিনি। ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধের মুখে ইহুদিবাদী সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হলেও কাপুরুষের মতো ফিলিস্তিনের অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে তারা। পরমাণু অস্ত্র তৈরির মাধ্যমেও গোটা অঞ্চলকে হুমকির মুখে রেখেছে ইসরাইল। দিমুনা গ্রামে ইসরাইলের পরমাণু কেন্দ্র মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে। অবৈধ রাষ্ট্রটি পরমাণু অস্ত্রবিস্তার রোধ চুক্তি বা এনপিটিতে সই করেনি। তারা একের পর এক পরমাণু বোমার মজুদ গড়ে তুলছে। ইসরাইলের কাছে শত শত পরমাণু বোমা রয়েছে বলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ইসরাইলের অপকর্ম এখন গোটা বিশ্বের কাছেই সুস্পষ্ট। পরিস্থিতি এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, প্রথম দিকে যারা ইসরাইল প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছিলেন তারাই এখন এ কথা স্বীকার করছেন- ইসরাইল দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে এবং এটি ভেতর থেকেই ভেঙে পড়বে। যেসব ইহুদি ধোকায় পড়ে অন্য দেশ থেকে ইসরাইলে এসেছিল এখন তারা ইসরাইল ছাড়তে শুরু করেছে। সচেতন নাগরিকরা বলছেন, ইসরাইলি রাজনীতিবিদদের মাঝে নৈতিক অবক্ষয় এবং অর্থনৈতিক দুর্নীতি ইসরাইলের পতনের ঘন্টা বাজিয়ে দিয়েছে। সম্প্রতি ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেজ বলেছেন, “ইসরাইল এখন অভ্যন্তরীণভাবে গভীর সংকটের মধ্যে রয়েছে এবং এই সংকট ইসরাইলকে ভেতর থেকেই পতনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।” তিনি বলেছেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন, চেকোস্লোভাকিয়া ও ইউগোস্লাভিয়াও রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে ভঙুর হয়ে পড়েছিল। কারণ ভেতর থেকেই তাদের পচন ধরেছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসরাইলে গণঅসন্তোষ বেড়ে গেছে। মাঝে মধ্যেই লাখ লাখ বঞ্চিত মানুষ রাজপথে মিছিলে অংশ নিচ্ছেন। এসব বিক্ষোভকারী বৈষম্য, দারিদ্র, ক্ষুধা, বেকারত্ব, আবাসন সংকট, নৈতিক স্খলন এবং পতিতাবৃত্তির বিরুদ্ধে শ্লোগান দিচ্ছে। এই সেই ইসরাইল যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইহুদিদেরকে সুখের স্বপ্ন দেখিয়ে আনা হয়েছিল। বলা হয়েছিল তাদের জন্য ভূস্বর্গ বানিয়ে দেয়া হবে। এসব ভুয়া প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদেরকে ইসরাইলে আনা হলেও এখন উল্টো চিত্রটিই চোখে পড়ছে। সামাজিক বৈষম্যের প্রতিবাদে এরইমধ্যে ১৪ জন বিক্ষোভকারী নিজের শরীরে নিজেই আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ১৪ জন আত্মহত্যাকারীর প্রথম ব্যক্তি ছিলেন মুশে সালমান। শরীরে আগুন দেয়ার কয়েক দিন পর তিনি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে। তিনি নিজের শরীরে আগুন দেয়ার আগে এক বার্তায় বলেন, ইসরাইলি নেতারা হলো চোর। তারা মানুষের অর্থ-সম্পদ চুরি করেছে। সাধারণ মানুষের কথা তারা ভাবে না। ওই আত্মহত্যার ঘটনার পর বিপুল সংখ্যক মানুষ বিক্ষোভে নামে এবং তারাও মুশে সালমানের কথাগুলোর প্রতি সমর্থন জানায়। এ ধরনের নানা অভ্যন্তরীণ সংকট ইসরাইলি নেতাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। এ ধরনের অভ্যন্তরীণ সংকট থেকে মানুষের দৃষ্টিকে সরাতে তারা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন নতুন যুদ্ধ ও সংকট তৈরির পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। সিরিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধও সে ধরনের ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ। এছাড়া, ইরানভীতি ছড়িয়ে দিয়ে অভ্যন্তরীণ সঙ্কটকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করছে ইসরাইল। ঘরে- বাইরে কোথাও ভালো নেই ইসরাইল। বিশেষকরে আমেরিকা নিজেই অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হওয়ায় ইসরাইলের প্রতি দেশটির অর্থনৈতিক সহযোগিতা কমে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়েছে। সব মিলিয়ে ইসরাইলি নেতারা এখন নিজেরাই তাদের অস্তিত্বের সংকটের বিষয়টি উপলব্ধি করতে শুরু করেছেন। তারা নিজেরাই স্বীকার করছেন যে, ইসরাইল ভেতর থেকেই ভেঙে পড়তে পারে। আর এমনটি হলে গোটা বিশ্বই মুক্তি পাবে বলে সচেতন মহল আশা করছে।

আসুন জেনে নিই নাস্তিক্যবাদ কি ?

আসুন জেনে নিই: নাস্তিক্যবাদ কি নতুন কিছু না আগেও ছিল এবং কুরআন অবিশ্বাসীদের মন্তব্য কেমন ছিল নাস্তিকতা বিষয়টি নতুন কোন বিষয় নয়, মানব জাতির ধর্মীয় অবস্থা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় , সুদূর প্রাচীন কাল থেকেই একদল মানুষ আল্লাহকে "রব" হিসেবে স্বীকৃতি না দিয়ে তারা প্রকৃতিবাদী হয়েছে। হুদ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জাতির মধ্যে এই জাতীয় চিন্তা- ভাবনা বিরাজমান ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। জীবন ও জগত সম্পর্কে তাদের ধারণার বহিঃপ্রকাশ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, তারা বলতোঃ “(তারা বলে, কিসের আবার পুনরুত্থান) দুনিয়ার জীবনইতো হচ্ছে আমাদের একমাত্র জীবন, আমরা (এখানে) মরবো, (এখানেই) বাঁচবো, আমাদের কখনই পুনরুত্থিত করা হবে না"। (সূলা আল-মুমিনূন : ৩৭) বর্তমানে সময়ে বিশ্বে এদের উত্তরসূরীদের অভাব নেই। কিন্ত জ্ঞানের এ অভিনব অগ্রগতির যুগে একদল চিন্তাশীল মানুষ যেমন আল্লাহকেই তাদের 'রব' বলে স্বীকার করে নিচ্ছে, তেমনি আরেকদল মানুষ আল্লাহকেই অস্বীকার করে বলেছে- আল্লাহ বলতে কিছুই নেই। এ জগত মহা বিস্ফোরণের ফল। আল্লাহ বলতে কেউ এসব সৃষ্টি করেনি; বরং মানুষই আল্লাহকে সৃষ্টি করেছে। পূর্বের কুরআন অবিশ্বাসীরা কুরআন সম্পর্কে যা বলতো: “আমরা চাইলে এধরণের কথাতো নিজেরাও বলতে পারি, এগুলো তো আগের লোকদের উপকথা ছাড়া আর কিছুই নয়”। (সূরা আল আনফাল : ৩১) বর্তমান সময়ে নাস্তিকরা এই কথাগুলোই বলে থাকে। নবীরা যখন অবিশ্বাসীদের এক আল্লাহর দিকে ডাকতো তখন তার জবাবে তারা বলতো: “আমরা তো দেখছি যে, তুমি সুস্পষ্ট গুমরাহীতে লিপ্ত রয়েছ” (সূরা আল আ’রাফ: ৬০) “আমরা তো তোমাকে নির্বুদ্ধিতায় লিপ্ত মনে করি” (সূরা আল আ’রাফ: ৬৭) “তোমরা যা মেনে নিয়েছ আমরা তা অস্বীকার করি, অমান্য করি” (সূরা আল আ’রাফ: ৭৬) কেউ যদি বর্তমানে কোন নাস্তিককে আল্লাহর দাসত্ব কবুল করে নেওয়ার কথা বলে তখন তারা এই কথাগুলোই বলে থাকে যেমন: তোমরা বোকা, তোমরা যা মান আমরা তার অস্বীকার করি। হঠকারিতা বক্তব্য হিসেবে তারা যা বলতো: “আচ্ছা, তাহলে নিয়ে আস সেই আযাব, যার তুমি আমাদেরকে ভয় দেখাচ্ছ”। (সূরা আল আরাফ: ৭০) আযাবের ভয় দেখালে বর্তমান সময়ের নাস্তিকরা বলে থাকে, আযাব যদি সত্যিই থাকতো তাহলে তা আমাদের পাকড়াও করে না কেন? যারা আল্লাহতে বিশ্বাসী তাদের বিরুদ্ধে তারা যা বলতো: “এই লোকদিগকে তো এদের দ্বীন (ধর্ম) ধোকার কবলে নিক্ষিপ্ত করেছে” (সূরা আল আনফাল: ৪৯) আল্লাহতে বিশ্বাসীদের এরা বোকা এবং ধোকার কবলে নিক্ষিপ্ত রয়েছে বলে একই মন্তব্য করে যাচ্ছে। শুধু পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু অবিশ্বাসী উত্তরসুরীদের কথাগুলো একই রয়ে গেছে। যেমন: ফিরাউন সুউচ্চ প্রাসাদ বানিয়ে তাতে আরোহন করে মূসা আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলেছিল, কই তোমার আল্লাহ, তাকে তো খুজে পেলাম না, ঠিক একই কথা বলেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন স্পুটনিক নিক্ষেপ করার পর, তারা বলেছিল, কই তোমাদের আল্লাহ, তাকে তো খুজে পেলাম না। এখন দেখুন তো এই দুই শক্তির কোনটি টিকে আছে?