Pages

Wednesday, July 30, 2014

ইসলাম ও হিন্দু ধর্মে সমকামীতাকে কেমন চোখে দেখে থাকে

ইসলামী আইনে সমকামিতা ইসলামী যৌন আইনশাস্ত্রী সমকামীতা বা সমলীঙ্গ ের যৌনসঙ্গম নিষিদ্ধ অর্থাত্ হারাম,কথিত আছে সমকামীরা কখনো বেহেশতে প্রব েশ করতে পারবেনা। হাদীস শরীফে আছে ,হযরত লূহ আঃ এর সময়কালে তখনকার মানুষের মাঝে মহামারি আকারে সমকামীতা দ েখা যায় এবং তখনই সমকামীতা নিষিদ্ধ হয়ে যায়। ইসলামে homosexuality সম্পূর্ণ হারাম। এবং স্বাভাবিক ব্যভিচারের চেয়েও খারাপ। লুত (আ) এর কওমকে (Sodom আর Gomorrah নগরী) আল্লাহ ধ্বংস করে দিয়েছিলেন যেসব কারণে এর মধ্যে সমকামিতা ছিল একটি। আমি এখানে কুরআনের আয়াত আর হাদিসগুলো উল্লেখ করছি। "এবং আমি লূতকে প্রেরণ করেছি। যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বললঃ তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে সারা বিশ্বের কেউ করেনি ? তোমরা তো কামবশতঃ পুরুষদের কাছে গমন কর নারীদেরকে ছেড়ে। বরং তোমরা সীমা অতিক্রম করেছ।" (আরাফ ৭:৮১-৮২) "সারা জাহানের মানুষের মধ্যে তোমরাই কি পুরূষদের সাথে কুকর্ম কর? এবং তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের জন্য সঙ্গিনী হিসেবে যাদের সৃষ্টি করেছেন, তাদেরকে বর্জন কর? বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদ ায়।" (শুয়ারা ২৬:১৬৫-১৬৬) "স্মরণ কর লূতের কথা, তিনি তাঁর কওমকে বলেছিলেন, তোমরা কেন অশ্লীল কাজ করছ? অথচ এর পরিণতির কথা তোমরা অবগত আছ! তোমরা কি কামতৃপ্তির জন্য নারীদেরকে ছেড়ে পুরুষে উপগত হবে? তোমরা তো এক বর্বর সম্প্রদায়। উত্তরে তাঁর কওম শুধু এ কথাটিই বললো, লূত পরিবারকে তোমাদের জনপদ থেকে বের করে দাও। এরা তো এমন লোক যারা শুধু পাকপবিত্র সাজতে চায়। অতঃপর তাঁকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে উদ্ধার করলাম তাঁর স্ত্রী ছাড়া। কেননা, তার জন্যে ধ্বংসপ্রাপ্তদেরভাগ্যই নির্ধারিত করেছিলাম।" (কুরআন 27:54-57) "আমার প্রেরিত ফেরেশতাগণ সুসংবাদ নিয়ে ইব্রাহীমের কাছে আগমন করল, তখন তারা বলল, আমরা লুতের জনপদের অধিবাসীদেরকে ধ্বংস করব। নিশ্চয় এর অধিবাসীরা অপরাধী।" (২৯:৩১) দুর্ভাগ্য আমাদের, Al-Fatiha Foundation নামে একটা "মুসলিম" foundation আছে... যেটা মুসলিম গে, লেজবিয়ানদের প্রতিনিধিত্ব করে!!!! কুরআনের স্পষ্ট আয়াত থাকা সত্ত্বেও কীভাবে তারা এটা করতে পারে?? এবার হাদিস দেখুনঃ 1. "ইবনে আব্বাস বলেন, রাসুল (স) বলেছেন, তোমরা যদি কাউকে পাও যে লুতের সম্প্রদায় যা করত তা করছে, তবে হত্যা কর যে করছে তাঁকে আর যাকে করা হচ্ছে তাকেও।" (আবু দাউদ 38:4447) 2. "আবু সাইদ আল খুদ্রি বলেন, রাসুল (স) বলেছেন, একজন পুরুষ আরেক পুরুষের যৌনাঙ্গ দেখবে না। এক নারী আরেক নারীর যৌনাঙ্গ দেখবে না। এক পুরুষ আরেক পুরুষের সাথে অন্তত undergarment না পরে একই চাদরের নিচে ঘুমাবে না। এক নারী আরেক নারীর সাথে কখনও অন্তত undergarment না পরে একই চাদরের নিচে ঘুমাবে না।" (আবু দাউদ, 31:4007) 3. "আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স) বলেন, এক পুরুষ আরেক পুরুষের সাথে বা এক নারী আরেক নারীর সাথে ঘুমাতে পারবে না লজ্জাস্থান ঢাকা ব্যতীত। তবে ব্যতিক্রম করা যাবে, শিশু আর পিতার ক্ষেত্রে... রাসুল (স) ৩য় আরেকজনের কথা বলেছিলেন কিন্তু আমি ভুলে গিয়েছি।" (আবু দাউদ, 31:4008) 4. "জাবির (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স) বলেছেন, আমি আমার কওমের জন্য সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটা আশঙ্কা করি সেটা হল লুতের কওম যা করত সেটা যদি কেউ করে... " (তিরমিজি, 1457) এবার আসুন সমকামীদের শাস্তি কী সেটা দেখা যাক। হাদিস আমাদের জানাচ্ছেঃ 1. "ইবনে আব্বাস বলেন, অবিবাহিত কাউকে যদি সমকামিতায় পাওয়া যায় তাহলে তাঁকে পাথর মেরে হত্যা করতে হবে।" (আবু দাউদ, 38:4448 ) 2. "যে কাউকে লুতের কওমের মতো করতে দেখলে যে দিচ্ছে আর যে পাচ্ছে দুজনকেই হত্যা কর।" (তিরমিজি 1:152) 3. মুয়াত্তা শরীফের 41 41.111 নাম্বার হাদিসে এর শাস্তি বলা আছে পাথর মেরে হত্যা। 4. "ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স) বলেছেন, অভিশপ্ত সে যে কিনা কোন পশুর সাথে সেক্স করে, আর অভিশপ্ত সে যে কিনা সেটা করে যা লুতের সম্প্রদায় করত।" (Ahmad:1878) 5. "ইবনে আব্বাস (রা) বলেন, আলী (রা) তাঁর সময়ে ২ জন সমকামীকে পুড়িয়ে দেন। আর আবু বকর (রা) তাদের উপর দেয়াল ধ্বসিয়ে দেন।" (মিশকাত, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৭৬৫, প্রস্তাবিত শাস্তি) আশা করি ভাই আপনি আপনার প্রশ্নের ডিটেইল্ড উত্তর পেয়েছেন। হিন্দুধর্মে সমকামীতা সগরবংশীয় অংশুমানের পুত্র মহারাজা দিলীপ নিঃসন্তান হয়ে মৃত্যুবরণ করলে জন্ম রক্ষায় সমস্যা দেখা দেয়। শিব সে সময় আবির্ভূত হয়ে রাজার দু-জন বিধবা স্ত্রীকে আদেশ করেন সন্তান লাভের জন্য পরষ্পর দেহমিলন করতে। তাদের মিলনে সন্তান জন্মায় বটে কিন্তু সে সন্তান ছিল অস্থিহীন। পরে ঋষি অষ্টাবক্রের বরে সেই সন্তান সুস্থ এবং উত্তমাঙ্গ হন এবং ভগীরথ নামে রাজ্যশাসন করেন। এটিকে (দু- জন বিধবা স্ত্রীর মিলনে ভগীরথের জন্ম) নারী সমকামিতাকে গ্রহনযোগ্য করার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করেন হিন্দু উদারপন্থীরা। আরো কিছু দৃষ্টান্ত দেয়া যাবে হিন্দু পুরাণ থেকে। কথিত আছে লঙ্কা পরিভ্রমনের সময় হনুমান রাবনের স্ত্রীগনের আলিঙ্গনাবদ্ধ অবস্থা চাক্ষুষ দেখেছিলেন। সমকামিতার উল্লেখ ছাড়াও বৈদিক সাহিত্যে আমরা পাই লিঙ্গ-পরিবর্তনের কাহিনী। বিষ্ণুর মোহিনী অবতাররূপে ধরাধামে এসে শ িবকে আকর্ষিত করার কাহিনী এর একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এ ছাড়াও যে দুটো চরিত্র সবার আগে আলোচনায় আসবে তা হচ্ছে- মহাভারতের শিখন্ডী ও বৃহন্নলার কাহিনী। এমনকি, নর-নারীর ‘শারীরিক’ মিলন ছাড়াও সন্তান জন্ম নেওয়ার উপকথার সন্ধান মিলে রামায়ন এবং মহাভারতের মত বৈদিক সাহিত্যগুলোতে। যেমন, সীতার জন্ম মাটি থেকে আর দ্রৌপদীর জন্ম যজ্ঞের অগ্নি থেকে। জরাসন্ধের জন্ম হয় দু-জন পৃথক নারীর গর্ভে জন্ম নেয়া অর্ধ অংগবিশিষ্ট পৃথক সন্তানের সংমিশ্রণে ইত্যাদি। এগুলোকে উদারপন্থিরা ব্যবহার করেন এই বলে যে, হিন্দু ধর্ম সমকামিতা, উভকামিতা, উভলিঙ্গত্ব প্রভৃতি বিষয়ে অনেক উদার। কিন্তু যেটা তারা বলেন না তা হল এর উলটো চিত্রটি। মনুসংহিতার আইনে উল্লেখ আছে - ‘যদি কোন বয়স্কা নারী অপেক্ষাকৃত কম বয়সী নারীর (কুমারীর) সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করে, তাহলে বয়স্কা নারীর মস্তক মুণ্ডন করে দুটি আঙ্গুল কেটে গাধার পিঠে চড়িয়ে ঘোরানো হবে’ (Man u Smriti chapter 8, verse 370.)। যদি দুই কুমারীর মধ্যে সমকামিতার সম্পর্ক স্থাপিত হয়, তাহলে তাদের শাস্তি ছিলো দুইশত মূদ্রা জরিমানা এবং দশটি বেত্রাঘা ত (Manu Smriti chapter 8, verse 369.)। সেতুলনায় পুরুষদের মধ্যে সম্পর্কের শাস্তি তুলনামূলকভাবে অনেক কম। বলা হয়েছে - দু’জন পুরুষ অপ্রকৃতিক কার্যে প্রবৃত্ত হলে তাদেরকে জাতিচ্যুত করা হবে (Manu Smriti Chapter 11, Verse 68.) এবং জামা পরে তাকে জলে ডুব দিতে হবে (Manu Smriti Chapter 11, Verse 175.)। ইত্যাদি। ‘শুশ্রুত’ নামক প্রাচীন ভারতীয় চিকিৎসাশাস্ত্রে স্ত্রী- সমকামিতার কথা বর্ণিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে, দুই নারী যদি যৌনসম্পর্কে লিপ্ত হয় তাহলে অস্থিহীন সন্তানের জন্ম হবে। মহাভরতে ভগীরথের জন্মকাহিনীতে (উপরে বলা হয়েছে) এই ধরনের সংস্কারের সমর্থন মেলে।

কোরআন শরীফ বাংলা অনুবাদ এবং চমত্‍কার একটি ইসলামি বই ডাউনলোড করুন

ইমাম বুখারী রহ. এর সংক্ষিপ্ত জীবনি

বুখারী ইমাম বুখারী উজবেকিস্তানের, সমরকন্দকাছাকাছি অবস্থিত মুহাম্মদ আল-বুখারী মাজার। উপাধিআমিরুল মুমিনীন ফিল হাদীস জন্ম১৩ই শাওয়াল, ১৯৪ হিজরী (৮১০ খ্রিস্টাব্দ) [১] বুখারাবর্তমান উজবেকিস্তানেঅবস্থিত মৃত্যু১লা শাওয়াল, ২৫৬ হিজরী( ৩১শে আগস্ট, ৮৭০ খ্রিস্টাব্দ) (৬২ বছর) [২] খরতঙ্গ, সমরকন্দেরনিকটে অবস্থিত জাতিভুক্ততুর্কী/পারসিক ধর্মবিশ্বাসস্বতন্ত্র মুজতাহিদ [৩] মূল আগ্রহহাদীসশাস্ত্র উল্লেখযোগ্য ধারণাশুধুমাত্র সহীহ হাদীসের সংকলন লক্ষণীয় কাজ সহিহ বুখারী, আদাবুল মুফরাদ যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন আহমাদ বিন হাম্বল আলী ইবনুল মাদীনী ইয়াহয়া বিন মায়ীন ইসহাক বিন রাহওয়াই যাদেরকে প্রভাবিত করেছেন ইমাম মুসলিম ইমাম বুখারী(জন্মঃ ৮১০-মৃত্যুঃ ৮৭০ খ্রিস্টাব্দ), আরব রীতি অনুযায়ী বংশধারাসহ পুরোনাম হলোমুহাম্মদ বিন ইসমাইল বিন ইবরাহীম বিন মুগীরাহ বিন বারদিযবাহ( আরবি/ ফার্সি ভাষায়: محمد بن اسماعيل بن ابراهيم بن مغيره بن بردزبه بخاری), একজন বিখ্যাত হাদীসবেত্তা ছিলেন। তিনি " বুখারী শরীফ" নামে একটি হাদীসের সংকলন রচনা করেন, যা মুসলমানদের নিকট হাদীসের সবোর্ত্তম গ্রন্থ বিবেচিত হয়। [৫]তার নাম মুহাম্মদ। উপনাম হলো আবু আবদুল্লাহ। আমিরুল মুমিনীন ফিল হাদীস তাঁর উপাধি। বুখারা তাঁর জন্মস্থান বলে তাকে বুখারী বলা হয়।ইমাম বুখারী রচিত গ্রন্থের সংখ্যা ২০টিরও বেশি। এগুলোর কিছু বিলুপ্ত হয়ে গেছে কিংবা পান্ডুলিপি আকারে সংরক্ষিত রয়েছে। আর কিছু গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর রচিত গ্রণ্থাবলীর মাঝে সবচেয়ে বিখ্যাত গ্রন্থ হলো বুখারী শরীফ। নীচে তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থের নাম দেয়া হলোঃ •কাজায়া আস-সাহাবা ওয়া আত-তাবিয়ীন(আরবীতেঃقضايا الصحبة و التابعين) •আত-তারীখ আস-সগীর(আরবীতেঃالتاريخ الصغير) •আল-আদাব আল-মুফরাদ(আরবীতেঃالأدب المفرد) •কিতাব আল-জুআফা আস-সগীর(আরবীতেঃكتاب الضعفاء الصغير) •কিতাব আল-কুনা(আরবীতেঃكتاب الكُنى) •কিতাবু খালকি আফআলিল ইবাদ(আরবীতেঃكتاب خلق أفعال العباد) •সহীহ আল-বুখারী(আরবীতেঃ صحيح البخاري ) •রাফওল ইয়াদাইন ফিস সালাত, •কিরাআত খলফিল ইমাম। •আত-তারিখুল কবির, •আত-তারিখুল ওয়াসাত, •খালকু আফয়ালিল ইবাদ, •আল জামেওল কবির, •আল মুসনাদুল কবির, •কিতাবুল আশরিয়া, •ওসামাস সাহাবা, •কিতাবুল মারসুত, •কিতাবুল বিজদান।ইমাম বুখারী (জন্মঃ ৮১০- মৃত্যুঃ ৮৭০ খ্রিস্টাব্দ), আরব রীতি অনুযায়ী বংশধারাসহ পুরো নাম হলো মুহাম্মদ বিন ইসমাইল বিন ইবরাহীম বিন মুগীরাহ বিন বারদিযবাহ (আরবি /ফার্সি ভাষায়: ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﺍﺳﻤﺎﻋﻴﻞ ﺑﻦ ﺍﺑﺮﺍﻫﻴﻢ ﺑﻦ ﻣﻐﻴﺮﻩ ﺑﻦ ﺑﺮﺩﺯﺑﻪ ﺑﺨﺎﺭﯼ ), একজন বিখ্যাত হাদীসবেত্তা ছিলেন। তিনি " বুখারী শরীফ" নামে একটি হাদীসের সংকলন রচনা করেন, যা মুসলমানদের নিকট হাদীসের সবোর্ত্তম গ্রন্থ বিবেচিত হয়। [৫] তার নাম মুহাম্মদ। উপনাম হলো আবু আবদুল্লাহ। আমিরুল মুমিনীন ফিল হাদীস তাঁর উপাধি। বুখারা তাঁর জন্মস্থান বলে তাকে বুখারী বলা হয়।[৬] জীবনী তিনি ১৩ই শাওয়াল শুক্রবার, ১৯৪ হিজরীতে (৮১০ খ্রিস্টাব্দ) খোরাসানের বুখারাতে (বর্তমানে উজবেকিস্তানের অংশ) জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ইসমাইল ইবনে ইব্রাহিম। তাঁর দাদার নাম ইব্রাহিম। তাঁর দাদার সম্পর্কে খুব বেশি জানা না গেলেও তাঁর বাবা ইসমাইল মুসলিম বিশ্বে একজন পরিচিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন হাদীসবিদ। তিনি হাদিস শাস্ত্রবিদ আল্লামা হাম্মাদ (রহঃ) এবং হযরত ইমাম মালেক (রহঃ) এর শাগরিদ ছিলেন। এছাড়াও বিখ্যাত মনিষী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক (রহঃ) এর শাগরিদ ছিলেন বলে জানা যায়। সমসাময়িক যুগের আরও অনেক বুজুর্গ আলেমদের কাছ থেকে দ্বীনই ফায়েজের জাহেরি ও বাতেনি ইলম হাসিল করে সুযোগ্য আলেম ও বিজ্ঞ মুহাদ্দিস হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ইমাম বুখারী (রহঃ) শিহ্মা, জ্ঞান ও যোগ্যতা শুধু পিতার দিক থেকেই পাননি বরং মাতার দিক থেকেও অর্জন করেছিলেন। ইমাম বুখারী (রহঃ) এর মাতা ছিলেন বিদুষী ও মহীয়সী মহিলা। নেককার মহিলা হিসেবে তাঁর পরিচিতি ছিল। এ সম্পর্কে একটা ঘটনা আছে। বাল্যকালে ইমাম বুখারী (রহঃ) এর একবার কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। এ রোগের প্রভাবে তাঁর দুই চোখ প্রায় অন্ধ হয়ে যায়। স্নেহময়ই মাতা পুত্রের চোখের আলোর পুনঃপ্রাপ্তির জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েন এবং আল্লাহ্ পাকের দরবারে প্রার্থনা করতে থাকেন। এ পর্যায়ে এক রাত্রে স্বপ্নে তিনি হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কে তার শিয়রে বসা অবস্থায় দেখতে পেলেন। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) তাকে বলেন, তোমার প্রার্থনা আল্লাহ্ পাক কবুল করেছেন। তাঁর দয়ার বরকতে তোমার পুত্র চোখের আলো ফিরে পেয়েছে। পরদিন সকালে ঘুম থেকে জেগে তাঁর পুত্র ইমাম বুখারী (রহঃ) বলে ওটলেন, আম্মা! আমি সবকিছু দেখতে পাচ্ছি। আমার চোখ ভাল হয়ে গেছে। এ ঘটনাটিই প্রমাণ করে ইমাম বুখারী (রহঃ) এর মাতা কত বড় মাপের বুজুর্গ মহিলা ছিলেন।ইমাম বুখারী (রহঃ) শৈশবেই বাবাকে হারান, ফলে মায়ের কাছে প্রতিপালিত হন। পিতা মারা যাওয়ার সময় প্রচুর ধনসম্পদ রেখে যান। ফলে ইমাম বুখারী (রহঃ) এর কোনরূপ প্রতিকূল অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়নি। মাতাই পুত্রের শিহ্মা-দিহ্মার ভার গ্রহণ করেন। ইমাম বুখারী (রহঃ) এর বাল্যকাল থেকেই শিহ্মা- দিহ্মার প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল। ইমাম বুখারী (রহঃ) প্রথমে কোরআন পাঠ শুরু করেন। মাত্র ৯ বছর বয়সে তিনি কুরআন মুখস্ত করেন। ১০ বছর বয়স থেকে তিনি হাদীস মুখস্ত করা শুরু করেন। ১৬ বছর বয়সেই তিনি "আবদুল্লাহ বিন মুবারক" এবং "ওয়াকীর পান্ডুলিপিসমূহ" মুখস্ত করে ফেলেন। মহান আল্লাহ্ পাক তাকে অনন্য সাধারন স্মরণ শক্তি দান করেছিলেন। [৭][৮] সফরসমূহ ষোল বছর বয়সে তিনি মা এবং বড় ভাইয়ের সাথে হজ্জে গমন করেন। হজ্জের পর তিনি মক্কাতে রয়ে গেলেন এবং হিজাযের হাদীসবিশারদদের কাছ থেকে হাদীস গ্রহণ করতে থাকলেন। এ সময় তিনি "কাজায়াস সাহাবা ওয়াত তাবীয়ীন" নামক গ্রণ্থ রচনা করেন। এরপর হাদীস অন্বেষণের জন্য তিনি ইরাক, সিরিয়া ও মিশরসহ বহু অঞ্চলে সফর করেন। একদা ইমাম বুখারি (রহঃ) মুহাদ্দিস দাখেলির দরসগাহে যোগ দেন। ইমাম দাখেলি (রহঃ) একটি হাদিসের সনদ বর্ণনা করবার সময় 'জুবাইর' এর স্থলে 'আবু জুবাইর' বলেছেন। ইমাম বুখারি নম্রস্বরে বললেন- এখানে আবু জুবাইর' এর স্থলে 'জুবাইর' হবে। অতঃপর ইমাম দাখেলি (রহঃ) বাড়িতে গিয়ে কিতাব দেখে তাঁর ভুল সংশোধন করেছেন। এর অব্যবহিত পরই দাখেলি (রহঃ) তাঁকে খুব স্নেহ করতেন। তিনি এতদ্ভিন্ন অন্য এক দরসগাহে ও যোগ দিতেন। সেখানে অন্য ছাত্রগন হাদিসগুলো লিখে নিতেন। তিনি তা লিখতেন না। তাঁর সহঃপাঠিগণ তাঁকে হাদিস না লিখে রাখার কারন জিজ্ঞেস করলে কোন ওতর দেননি। অতঃপর সহঃপাঠিগণ তাঁকে হাদিস লেখার জন্য জোর তাগিদ দিলে ও ওতর দিলেন- "আপনাদের লেখা কপিগুলো নিয়ে আসুন। তারা কপিগুলো নিয়ে আসলে তিনি ধা রাবাহিকভাবে তাদের সামনে হাদিসগুলো পাঠ করে শোনান। সেই মজলিসে তাদের লেখা অনুসারে প্রায় পনের হাজার (১৫,০০০) হাদিস মুখস্থ পাঠ করে শোনান। দীর্ঘ ১৬ বছর পর তিনি হাদীস অন্বষণের ভ্রমণ শেষ করে নিজ মাতৃভূমি বুখারায় ফিরে আসেন।[৯][১০] রচনাবলী ইমাম বুখারী রচিত গ্রন্থের সংখ্যা ২০টিরও বেশি। এগুলোর কিছু বিলুপ্ত হয়ে গেছে কিংবা পান্ডুলিপি আকারে সংরক্ষিত রয়েছে। আর কিছু গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর রচিত গ্রণ্থাবলীর মাঝে সবচেয়ে বিখ্যাত গ্রন্থ হলো বুখারী শরীফ। নীচে তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থের নাম দেয়া হলোঃ 1. কাজায়া আস- সাহাবা ওয়া আত-তাবিয়ীন (আরবীতেঃﻗﻀﺎﻳﺎ ﺍﻟﺼﺤﺒﺔ ﻭ ﺍﻟﺘﺎﺑﻌﻴﻦ) 2. আত-তারীখ আস-সগীর (আরবীতেঃﺍﻟﺘﺎﺭﻳﺦ ﺍﻟﺼﻐﻴﺮ) 3. আল-আদাব আল-মুফরাদ (আরবীতেঃﺍﻷﺩﺏ ﺍﻟﻤﻔﺮﺩ) 4. কিতাব আল-জুআফা আস-সগীর (আরবীতেঃﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻀﻌﻔﺎﺀ ﺍﻟﺼﻐﻴﺮ) 5. কিতাব আল-কুনা (আরবীতেঃﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻜُﻨﻰ) 6. কিতাবু খালকি আফআলিল ইবাদ (আরবীতেঃﻛﺘﺎﺏ ﺧﻠﻖ ﺃﻓﻌﺎﻝ ﺍﻟﻌﺒﺎﺩ) 7. সহীহ আল-বুখারী (আরবীতেঃ ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ) 8. রাফওল ইয়াদাইন ফিস সালাত, 9. কিরাআত খলফিল ইমাম। 10. আত-তারিখুল কবির, 11. আত-তারিখুল ওয়াসাত, 12. খালকু আফয়ালিল ইবাদ, 13. আল জামেওল কবির, 14. আল মুসনাদুল কবির, 15. কিতাবুল আশরিয়া, 16. ওসামাস সাহাবা, 17. কিতাবুল মারসুত, 18. কিতাবুল বিজদান [১১] বুখারী শরীফ ইমাম বুখারীর জীবনের শ্রেষ্ঠতম কর্ম হচ্ছে এই হাদীসগ্রন্থের রচনা। তিনি স্বীয় শিক্ষক ইসহাক বিন রাহওয়াইহ থেকে এই গ্রন্থ রচনার প্রেরণা লাভ করেন।একদিন ইসহাক একটি এমন গ্রন্থের আশা প্রকাশ তরেন,যাতে লিপিবদ্ধ থাকবে শুধু সহিহ হাদীস। ছাত্রদের মাঝে ইমাম বুখারী তখন এই কঠিন কাজে অগ্রসর হন।২১৭ হিজরী সালে মাত্র ২৩ বছর বয়সে তিনি মক্কার হারাম শরীফে এই গ্রন্থের সংকলন শুরু করেন। দীর্ঘ ১৬ বছর পর ২৩৩ হিজরী সনে এর সংকলনের কাজ সমাপ্ত হয়। বুখারী শরীফের সংকলনকালে তিনি সর্বদা রোজা রাখতেন এবং প্রতিটি হাদীস গ্রন্থ সন্নিবেশিত করার আগে গোসল করে দু' রাকাত নফল নামাজ আদায় করে মুরাকাবা ও ধ্যানের মাধ্যমে হাদীসের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতেন। [১২] এই গ্রন্থে তিনি সকল সহিহ হাদীস সংকলন করেননি। বরং সহিহ হাদীসের মাঝে যেগুলো তার নির্ধারিত শর্তে উন্নীত হয়েছে,সেগুলো লিপিবদ্ধ করেছেন। তিনি স্বয়ং বলেন, "আমি জা'মে কিতাবে সহিহ হাদিস ব্যতিত অন্যকোন হাদিস ওল্লেখ করিনি। তবে কলেবর বড় হয়ে যাওয়ার আশংকায় অনেক সহিহ হাদিসকে বাদ দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, আমি আমার কিতাবে প্রতিটি হাদিস লেখার পূর্বেই গোসল করেছি এবং দুরাকাআত আদায় করে নিয়েছি। অপর বর্ণনা হতে জানা যায় যে, ইমাম বুখারী (রহঃ) তাঁর স্বীয় কিতাবের শিরোনাম সমূহ রাসুলে করিম (সা) এর রওজা এবং মসজিদে নববির মধ্যস্থলে বসে লিখেছিলেন এবং প্রত্যেক শিরোনামের জন্য দুরাকায়াত নফ্ল নামাজ আদায় করেছেন। ইমাম বুখারীর প্রায় ৬ লাখ হাদীস মুখস্ত ছিল। বুখারী শরীফের পুরো নাম হলোঃ আল- জামি আল-সাহীহ আল-মুসনাদ মিন উমুরি রাসূলিল্লাহ ওয়া সুনানিহি ওয়া আইয়ামিহি। বুখারি শরীফ প্রণয়ের স্থানঃ আবুল ফজল মোহাম্মদ বিন তাহেরের বর্ণনা মতে, ইমাম বুখারী (রহঃ) তাঁর গ্রন্থখানি বুখারাতে বসে রচনার কাজ শেষ করেছেন। আবার কারো মতে মক্কা মুয়াজ্জামায় আবার কারো মতে বসরাতে। তবে ওল্লেখিত সকল বর্ণনা নির্ভুল। কেননা তিনি ওল্লেখিত সকল নগরীতে অবস্থান করেছেন। স্বয়ং ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেছেন, আমি আমার সহিহ বুখারি সঙ্গে নিয়ে বসরা শহরে ৫ বছর অবস্থান করেছি এবং আমার কিতাব প্রণয়ের কাজ শেষ করি। আর প্রতি বছরই হজ্ব পালন করি এবং মক্কা হতে বসরাতে ফিরে আসি।তিনি ৬ লাখ হাদিস হতে যাচাই বাছাই করে সর্বসাকুলে ১৬ বছর নিরলস সাধনা করে এ প্রসিধ্য গ্রন্থখানি প্রণয়ন করেন। এখানে মোট হাদিস আছে সাত হাজার একশত পচাতর খানি(৭,১৭৫)। আর পুনরুক্ত ছাড়া আছে চার হাজারের (৪,০০০) মতো। আর কারো মতে, বুখারিতে পুনরুক্ত হাদিস আছে মাত্র একখানি যা রুমালের বর্ণনা। মৃত্যু জীবনকালের শেষদিকে একবার বুখারার তৎকালীন শাসনকর্তা "খালিদ বিন আহমাদ যুহলী" হাদীসশাস্ত্রে ইমাম বুখারীর পান্ডিত্য দেখে তাকে দরবারে এসে শাসনকর্তা র সন্তানদেরকে হাদীস শেখাতে বলেন। ইমাম বুখারী এটাকে হাদীসের জন্য অবমাননাকর মনে করেন। ফলে উভয়ের মাঝে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। তখন তিনি মাতৃভূমি বুখারা ত্যাগ করে সমরকন্দের খরতঙ্গে চলে যান এবং সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ২৫৬ হিজরীর, ১লা শাওয়াল মোতাবেক ৩১শে আগস্ট, ৮৭০ খ্রিস্টাব্দের শুক্রবার দিবাগত রাতে মৃত্যুবরণ করেন। পরদিন শনিবার যোহরের নামাজের পর খরতঙ্গেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। [২][৮][১৩] তথ্যসূত্র 1. ↑ S. 'Abdul-Maujood, "The Biography of Imam Bukharee", Maktaba Dar- us-Salam, 2005, p. 13.

চমত্‍কার কয়েকটি ইসলামি বইয়ের PDF FILE!

ইসলাম সম্বন্ধে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান সবারই থাকা দরকার। আজকালকার মডার্ণ ছেলে মেয়েরা সকল ইতিহাসের প্রতি আগ্রহী কিন্তু ইসলামি ইতিহাসের প্রতি আগ্রহী নয়। ঐ সকল মডার্ণ ছেলে মেয়েদের আমি বলছি,হে ভাইয়া এবং আপু আগে স্বজাতীর ইতিহাস জানুন পরে অন্যকিছু,ইসলামের ইতিহাস অন্যসব ইতিহাসের চেয়ে গৌরবের। আপনাদের আমি কিছু বই দিচ্ছি এগুলো ডাউনলোড করে পড়ুন ইনশাআল্লাহ্ ভাল লাগবে । বইগুলোতে আপনি যা পাবেন,
•ইসলামের ইতিহাস। •সাহাবাদের জিহাদ। •জিহাদের গুরুত্ব। •জিহাদ । •মাসয়ালা মাসায়েল ।
ইসলামের আরো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এই বইগুলোতে। বইগুলো ডাউনলোড করে পড়ুন। বইগুলো ডাউনলোড করতে ছবির উপরে ক্লিক করুন, ২য় খন্ড ইবই
ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারাক (রঃ) অনুবাদঃ মাওলানা জাকারিয়া আব্দুল্লাহ (দাঃ বাঃ) মারকাযুদ দাওয়াতিল ইসলামিয়া, ঢাকা”
ডাউনলোড করুন এই বইটি। বইগুলো আমদানি করা হয়েছেঃ- ইসলামিবই.ওয়ার্ডপ্রেস.কম থেকে। আমদানি করেছি আমি,সজল আহমেদ।আমাকে সাহায্য করেছেন আমার বড় ভাই,ইমরান হোসেন সজীব

Tuesday, July 29, 2014

ইসলামের ইতিহাস:Pdf Book

Pdf ইসলামের ইতিহাস ১ম খন্ড ২য় খন্ড ৩য় খন্ড Preview:

ইসলামের প্রথম শহীদ হলেন হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বার রা.By:ফারাবী

ইসলামের ইতিহাসের প্রথম শহীদ হলেন একজন মহিলা সাহাবী এই কথাটা কি আমরা জানি ? হ্যাঁ হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা হলেন ইসলামের ইতিহাসের প্রথম শহীদ। মক্কী জীবনে হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহাকে নরাধম আবু জাহেল বর্শা মেরে হত্যা করেছিল। সাহাবী হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার এই পৃথিবীতে জন্ম হয়েছিল একজন দাসী হিসাবে। নরাধম আবু জাহেলের চাচা আবু হুজায়ফার গৃহে হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার জন্ম হয়। হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার স্বামী ছিলেন হযরত ইয়াসীর ইবনে আমির রাযিয়াল্লাহু আনহু। ইয়েমেন থেকে হযরত ইয়াসীর ইবনে আমির রাযিয়াল্লাহু আনহু একজন দাস হিসাবে আবু হুজায়ফার গৃহে নীত হন। পরবর্তীতে ইসলাম পূর্ব যুগেই আবু হুজায়ফা উনার দাসী হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা কে উনার দাস হযরত ইয়াসীর ইবনে আমির রাযিয়াল্লাহু আনহুর সাথে বিয়ে দিয়ে দেন। উনাদের বিয়ে হবার পরে আবু হুজায়ফা ইবনে আল মুগীরা উনাদের ২ জন কেই স্বাধীন করে দেন। তাই হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার সাথে হযরত ইয়াসীর ইবনে আমির রাযিয়াল্লাহু আনহুর সংসার জীবন একজন স্বাধীন মানব মানবী রুপেই শুরু হয়, কিন্তু আরব সমাজের রীতি ছিল কোন দাস দাসী স্বাধীন হয়ে গেলেও স্বাধীন হওয়ার পর আরবের একজন প্রভাবশালী গোত্রপতির অধীনেই উনাদের কে আরব সমাজে বসবাস করতে হবে। যেহেতু আবু হুজায়ফা আবু জাহেলের আপন চাচা ছিল তাই আবু হুজায়ফার মৃত্যুর পর ইসলাম পূর্ব যুগ থেকেই হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা এবং হযরত ইয়াসীর ইবনে আমির রাযিয়াল্লাহু আনহু আবু জেহেলের অধীনতা মেনেই একটি স্বাধীন মানুষ দম্পত্তি রুপে মক্কায় বসবাস করছিলেন। উনারা মুলত মক্কার বনু মাখযুম গোত্রের অধীনতা মেনেই মক্কায় বসবাস করতেন। হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা যখন বার্ধক্যে আক্রান্ত হন ঠিক তখনই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নব্যুয়ত পান। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্বীন ইসলাম প্রচার করার সাথে সাথে হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা ও উনার স্বামী হযরত ইয়াসীর ইবনে আমির রাযিয়াল্লাহু আনহু ও উনাদের ছেলে হযরত আম্মার রাযিয়াল্লাহু আনহু মুসলমান হয়ে যান। উনারা প্রথমে গোপনে মুসলমান হলেও কিছুদিন পর প্রকাশ্যে উনারা দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করার ঘোষণা দেন। মক্কায় উনাদের এমন কোন আত্মীয় স্বজন ছিল না যারা উনাদের কে কুরাইশদের নিষ্ঠুরতার হাত থেকে বাঁচাতে পারেন। হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা ছিলেন শুরুর দিক থেকে ইসলাম গ্রহন করার মাঝে ১৭ তম ব্যক্তি। ইসলাম গ্রহন করার পর হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার উপর নরাধম আবু জেহেল অকথ্য অত্যাচার শুরু করে। নরাধম আবু জাহেল হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা এবং উনার স্বামী হযরত ইয়াসীর ইবনে আমির রাযিয়াল্লাহু আনহা কে মক্কার আল-বাতহা উপত্যকার মরুভূমির তপ্ত বালুর মাঝে লোহার পোষাক পড়িয়ে শুয়িয়ে রাখত। যেহেতু হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার কোন নিজস্ব গোত্র ছিল না তাই আবু জাহেল তার ইচ্ছামত হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা কে অত্যাচার করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার পাশ দিয়ে যেতেন তখন বলতেন-” হে ইয়াসিরের পরিবার- পরিজন ! ধৈর্য্য ধর। তোমাদের জন্য সুসংবাদ। তোমাদের জন্য রয়েছে জান্নাত ! ” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা কে জান্নাতের সুসংবাদ দিতেন তখন হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতেন- “ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি জান্নাতের সুগন্ধ এই তপ্ত মরুভূমির বুকেই শুয়েই পাচ্ছি।” দীর্ঘদিন অত্যাচার নির্যাতন করার পরও যখন হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা দ্বীন ইসলাম পরিত্যাগ করল না তখন একদিন নরাধম আবু জাহেল হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার লজ্জাস্থানে বর্শা নিক্ষেপ করে উনাকে শহীদ করে ফেলে। হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার মৃত্যুর পর নরাধম আবু জেহেল উনার স্বামী হযরত ইয়াসীর ইবনে আমির রাযিয়াল্লাহু আনহু কেও তীরবিদ্ধ করে শহীদ করে ফেলে। হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার শাহাদাতের ঘটনাটা ঘটে ৬১৫ খ্রীষ্টাব্দে। অর্থ্যাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নব্যুয়ত পাওয়ার পর ৫ বছর পর হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা শাহাদাত বরন করেন। বদর যুদ্ধে নরাধম আবু জেহেল নিহত হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার ছেলে হযরত আম্মার রাযিয়াল্লাহু আনহুকে বলেন- “আল্লাহ সুবহানাতায়ালা তোমার মায়ের ঘাতককে হত্যা করেছেন।” হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার একমাত্র সন্তান হযরত আম্মার রাযিয়াল্লাহু আনহুর তত্ত্বাবধানেই মদীনার কুবা শহরে ইসলামের ইতিহাসের প্রথম মসজিদ তৈরি হয়। আজ থেকে ১৪০০ বছর পূর্বে এই মহান মহিলা সাহাবী হযরত সুমাইয়া বিনতে খাব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা ইসলামের সুমহান সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়ে মুসলমান হয়ে যান। ইসলাম গ্রহন করার কারনে আবু জেহেল হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহার প্রতি কত অত্যাচারই না করেছিল কিন্তু হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা দ্বীন ইসলাম থেকে একচুলও সরে যাননি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন দ্বীন ইসলাম প্রচার করা শুরু করেন তখন মক্কার একদম প্রান্তিক জন গোষ্ঠীর লোকেরাই প্রথম দ্বীন ইসলাম গ্রহন করেন। হযরত সুমাইয়া, হযরত বেলাল উনারা ছিলেন মক্কার সেই প্রান্তিক জন গোষ্ঠীর লোক। আজকে আমাদের মুসলিম ঘরের মেয়েদের আদর্শ হল হলিউঠের নায়িকা Angelina Jolie, Keira Neightly, Megan fox, Penelope Cruz, Paris Hilton. এলিট পরিবারের কয়টা মুসলিম মেয়ে জানে যে ইসলামের ইতিহাসের প্রথম শহীদ হলেন একজন মহিলা সাহাবী হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা ? এই মহান মহিলা সাহাবী মক্কা বিজয়, সাহাবীদের ইরাক ইরান মিশর তুরস্ক সিরিয়া, মুসলমানদের গৌরব উমাইয়া, আব্বাসীয়, উসমানীয় খিলাফত কিছুই দেখে যেতে পারেননি। হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা যখন শহীদ হন তখন সারা পৃথিবীতে ১০০ জনেরও বেশী মুসলমান ছিল না। আমরা মুসলমানরা তখন এতই অসহায় ছিলাম যে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা কে লোহার বর্ম পরিয়ে মরুভুমির উত্তপ্ত বুকে শুয়াইয়ে রাখা হত কিন্তু সাহাবীরা কিছুই করতে পারতেন না। কিন্তু মক্কার সেই রুঢ় পরিবেশেও হযরত সুমাইয়া বিনতে খুব্বাত রাযিয়াল্লাহু আনহা দ্বীন ইসলাম থেকে একচুলও সরে দাঁড়াননি। আর আজকে আমরা মুসলমানের ঘরে জন্ম নিয়েও ইসলাম পালন করিনা, মুসলমান ঘরের কত ছেলে আজকে নাস্তিক সংশয়বাদী হয়ে যাচ্ছে কিন্তু এই ছেলে গুলি যদি একটু কষ্ট করে হায়াতুস সাহাবা, আসহাবে রাসূলের জীবন কথা এই বই গুলি থেকে মহান সাহাবীদের জীবনী গুলি পড়ত তাইলে বুঝত ইসলাম গ্রহন করার জন্য এই মক্কী জীবনে সাহাবীদের উপর মক্কার কাফেররা কত অত্যাচারই না করেছে। কিন্তু সাহাবীরা এক চুলও ইসলাম থেকে সরে দাড়ান নি। বাংলা ভাষায় সাহাবীদের জীবনীর উপর ২ টা বই আছে। হায়াতুস সাহাবা ও আসহাবে রাসূলের জীবন কথা। তাছাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকেও “হাদীস চর্চায় মহিলা সাহাবীদের অবদান” শীর্ষক খুব সুন্দর একটি বই বের করেছে। সকল মুসলিম ভাই বোনকে সাহাবীদের জীবনী পড়ার জন্য বিনীত ভাবে অনুরোধ করছি।

Sunday, July 27, 2014

মার্ক জুকারবার্গ তো একজন নাস্তিক তাইলে তার আবিষ্কৃত ফেইসবুক ব্যবহার করা কি মুসলমানের জন্য ঠিক হচ্ছে?:শফিউর রহমান ফারাবী স্টিকি পোস্ট

মার্ক জুকারবার্গ তো একজন নাস্তিক তাইলে তাঁর আবিস্কৃত ফেইসবুক ব্যবহার করা কি মুসলমানদের জন্য ঠিক হচ্ছে ? লিখেছেনঃ শাফিউর রহমান ফারাবী (তারিখঃ বৃহঃ, ২৭/১২/২০১২ - ১৫:০৪) নাস্তিক ভাইয়া ও আপুরা প্রায়ই একটা প্রশ্ন করেন যে মার্ক জুকারবার্গ তো একজন নাস্তিক তাইলে তাঁর আবিস্কৃত ফেইসবুক ব্যবহার করা কি আমাদের জন্য ঠিক হচ্ছে ? আচ্ছা নাস্তিক আপুরা যে প্রতিদিন সকালে রিকশায় চড়ে ক্যাম্পাসে যান সেই রিকশাওয়ালা তো মুসলমান তাইলে সেই রিকশায় চড়া কি ঐ নাস্তিক আপুর জন্য ঠিক হচ্ছে ? এখন হয়তো ঐ নাস্তিক আপু আমাকে বলবেন যে - '' আমি তো আমার বাপের টাকা খরচ করেই রিকশায় চড়ছি কিন্তু তুমি তো FREE তে ফেইসবুক ব্যবহার করছ ? '' আপাত দৃষ্টিতে ফেইসবুক ব্যবহার করা FREE হলেও মার্ক জুকারবার্গ কিন্তু Google Adsense এর মাধ্যমেই আমাদের কে উনার ফেইসবুক ব্যবহার করতে উত্সাহ দেন। আর আমরা ফেইসবুক ব্যবহার করি বলেই মার্ক জুকারবার্গ ফেইসবুক থেকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোটি কোটি ডলার কামিয়ে বান্ধবীদের সাথে ছবি তুলতে পারেন। আর ফেইসবুকের সব কিছুই কিন্তু FREE না। সামান্য কিছু ডলারের অভাবে বর্তমানে অনেক বড় বড় পেইজের এডমিনরা এখন Like খরায় ভুগছেন। Gmail ব্যবহার করাও কিন্তু Free কিন্তু আপনি পিসি থেকে Gmail এ ঢুকলে Google ও আপনাকে অনেক বিজ্ঞাপন দেখাবে। ইন্টারনেটের অনেক কিছু আপাতদৃষ্টিতে Free মনে হলেও এটা দেখিয়ে ঐসব কোম্পানী তাদের user বাড়িয়ে তারপর ঐ user দের কে ভিত্তি করে তারা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোটি কোটি ডলার আয় করে। আচ্ছা মার্ক জুকারবার্গ তো একজন Programmer আর আমরা জানি কম্পিউটার Program করতে এলগরিদমের সাহায্য নিতে হয় ? আর এলগরিদম বীজগণিতের জনক তো মুসলমানরা। মুসলিম বিজ্ঞানী আল খাওরেজমি তো বীজগণিত ও এলগরিদমের জনক। এলগরিদম শব্দটি আল খাওরেজমি থেকেই এসেছে। আর আল খাওরেজমির লেখা ''আল জেবর ওয়াল মুকাবিলা '' বই থেকেই আল জেবরা শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। তাহলে মধ্যযুগের একজন মুসলিম গণিতবিদের আবিস্কৃত তত্ত্বের সাহায্যে ফেইসবুকের Programming চালানো কি মার্ক জুকারবার্গের জন্য ঠিক হচ্ছে ? আসলে এইখানে আমাদের একটা জিনিস বুঝতে হবে যে জ্ঞান বিজ্ঞান বস্তু উপকরন এইগুলি হচ্ছে মানব সভ্যতার অংশ। এইসব জড় বস্তু কোন জাতি বা ধর্মের নিজস্ব সম্পত্তি নয়। সাহাবীরা ইরাক ইরান মিশর তুরস্ক জর্ডান চীন এইসব দেশের খ্রিষ্ট ধর্ম, অগ্নি পূজ্ মূর্তি পূজা, এবং ইসলাম বিরোধী সংস্কৃতিকে অস্বীকার করেছিলেন কিন্তু ঐসব দেশের প্রযুক্তি ভাষা ও খাদ্যভাস কে সহজ ভাবে গ্রহন করেছিলেন। আর ধর্ম হচ্ছে যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার কিন্তু এই মানব সভ্যতার জ্ঞান বিজ্ঞান প্রযুক্তি হচ্ছে সমগ্র মানব জাতির সম্পদ। বর্তমানে ইউরোপ আমেরিকা পেটেন্টের মাধ্যমে প্রযুক্তি পণ্য গুলি খুব ব্যয়বহুল করে তুলেছে ইসলামী শরীয়াহ কিন্তু তথাকথিত পেটেন্টের এই কড়াকড়ি গুলি সমর্থন করে না। ইসলামী আক্বীদা সংশোধনের জন্য আরো পড়তে পারেন