Pages

Thursday, July 10, 2014

ডাঃ জাকির নায়েকের যুক্তিতর্ক ও আলোচনা Download করুন

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।প্রিয় পাঠক অনেকে হয়ত অধির আগ্রহে পিস টিভির সামনে বসে থাকেন ড.জাকির নায়েকের ইসলামী আলোচনা যুক্তিতর্ক ও বয়ান শুনার জন্য।আর টেলিভিশনের সামনে বসে থাকতে হবেনা নিজের প্রিয় মোবাইলেই শুনবেন তার বয়ান!এবার আমি আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি ড. জাকির নায়েকের ইসলামি আলোচনা। Mp3 এবং ইউটিউবে দেখুন এখান থেকে। ••••• DOWNLOAD ••••• ভিডিওঃটেরোরিজম-জিহাদ

Wednesday, July 9, 2014

আসুন দেখি নারীর সম্মান কোন ধর্মে বেশি।

ইসলাম ধর্মে নারীর অধিকার: নারীদের প্রতি জুলুম ও অপমান ইসলাম বরদাস্ত করতে পারেনি। ইসলাম তাই মেয়েদের কে বিভিন্ন ভাবে সম্মান ও মর্যাদা দান করেছে। যেমন ১. কন্যা হিসাবে মর্যাদা ২. বোন হিসাবে মর্যাদা ৩. মা হিসাবে মর্যাদা ৪. স্ত্রী হিসাবে মর্যাদা । ইসলাম ধর্মে নারীরা পর্দা রক্ষা করে ব্যাবসা থেকে ভ্রমন পর্যন্ত করতে পারবে।নারীর আছে তালাকের অধিকার,নারীর আছে কথা বলার অধিকার,নারীর আছে সম্পত্তি লাভের অধিকার।নারীরা পারবে পর্দা রক্ষা করে পুরুষদের সাথে জিহাদেও যেতে! আপনি জানেন কি ইসলাম ধর্মে স্ত্রীকে অহেতুক মারার জন্য শাস্তির বিধান আছে?আপনি জানেন কি ইসলাম ধর্মে নারীর পায়ের নিচে করে দিয়েছে সন্তানের বেহেশত? ইসলাম ধর্মে নারী পায় পিতার সম্পত্তি ,সাথে স্বামীর সম্পত্তি।আপনি জানেন ইসলাম ধর্মে পুরুষ নয় নারীকে যৌতুক দেয়া হয় ?ইসলাম ধর্মে নারীকে দেয়া হয় মোহরানা।আর আল্লাহ পাক বলেছেন,যে ব্যাক্তি তার স্ত্রীর মোহরানার টাকা না দিয়ে স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়,আর ঐ স্ত্রী যদি মোহরানার টাকার দাবী না ছাড়ে তাহলে কেয়ামতের দিন ঐ স্বামীকে জেনাকারীর কাতারে দাঁড়াতে হবে!ইসলাম কন্যা সন্তান কে কতটা প্রাধান্য দেয় জানেন কি?রাসুলে আকরাম সঃ বলেন,যে ব্যাক্তির ৩টি কন্যা সন্তান হবে ঐ ব্যাক্তি জান্নাতি!সুবাহানআল্লাহি বিহামদিহি!নারীর অধিকার যতটা ইসলাম দিয়েছে অন্য কোন ধর্ম এর ১০০ভাগের একভাগ ও দেয়নি!ইসলাম বলে নারীদের সম্মান দিতে,তাদের মতামত এবং ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে যা অন্য কোন ধর্ম বলেনা! ইয়াহুদী ধর্মে নারীর অধিকার: যে নাপাক থেকে পাক হতে পারে? যে নারী থেকে জন্ম নিয়েছে সে কিভাবে সত্যবাদী হতে পারে? অর্থাৎ নারী নাপাক, নারী সত্তার মধ্যে সত্যবাদীতা নেই। এ কারনে তার থেকে যার জন্ম সে সত্যবাদীতা শুন্য। মানুষ যেহেতু নারী থেকে জন্ম তাই সে পবিত্র হতে পারেনা। কেননা নারীর মাথা থেকে পা পর্যন্ত সব নাপাক। ডঃ গেসটাউলীবান বলেন কিতাবে মোকাদ্দাস গ্রন্থে রয়েছে, নারী জাতি মৃত্যু হতেও অধিক তিক্ত। প্রাচীন যুগের ওয়াজের অধ্যায়ে রয়েছে যে ব্যক্তি সৃষ্টিকর্তার প্রিয় সে যেন নারী থেকে নিজেকে দুরে রাখে। আমি সহস্র মানুষের মাঝে একজন খোদার প্রিয় পেয়েছি কিন্তু সারা বিশ্বের নারী জাতির মধ্যে একজনকেও সৃষ্টিকর্তার প্রিয় পাইনি। হিন্দু ধর্মঃ এদেশেরই সখ্যালঘু অপর একটি ধর্ম, হিন্দু ধর্ম। যেখানে সেদিন পর্যন্ত নারীকে বিবাহের পর স্বামী হাজার অত্যাচার করলেও বিবাহ বিচ্ছেদের কোন উপায় ছিলনা। আজীবন স্বামীর চরনের দাসী হিসেবে বিবেচনা করা হত। তাছাড়া উত্তরাধিকার লাভের কোন অধিকার নারীর ছিলনা, স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর স্বতীত্ব প্রমানের জন্য স্বামীর চিতায় আত্মদান ছিল বাধ্যতামুলক। বর্তমান দু’ একদিনের বিবাহ কোন নারী যদি বিধবা হয় তাহলে তার আর সারা জীবনে পুর্ণ বিবাহের অধিকার নেই। বিবাহের সময় বাবা, ভাই থেকে সে সম্পদ নিয়ে শুশুর বাড়ীতে উঠবে, তারপর আর বাবা-ভাইদেরকে সম্পদের কথা বলতেও পারবেনা। হিন্দু ধর্মে নারীদের কোন অধিকার নেই। পুরুষের জন্য একই সময়ে দশজন স্ত্রী রাখার অনুমতি আছে। তালাকের সাথে সম্পর্ক নেই, যে কারনে নারীর ক্ষতিই বেশী, কারণ নারীর ভাল না লাগলে বা স্বামীর অত্যাচারে সে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে পারেনা। যত কষ্ট হোক, শত অত্যাচার করা হোক, স্বামীর কাছেই থাকতে হবে। সমস্ত ক্ষমতা স্বামীর, নারী দিন রাত্রীর কোন সময় স্বাধীন থাকতে পারবেনা। হিন্দু ধর্ম মতে তাকদীর, তুফান, মৃত্যু, জাহান্নাম বিষ ও বিষাক্ত সাপ এত ক্ষতিকর নয় যত ক্ষতিকর নারী। খৃষ্টান ধর্মঃ খৃষ্ট ধর্মের মতে নারী পুরুষ কেউ পবিত্র না, বিশেষ করে নারী জাতি। কারণ আদম (আঃ) হাওয়া (আঃ) উভয়ে নিষিদ্ধ খাবার খেয়েছিল, আদম আঃ পাপের দাগ মুছার জন্য একজন খোদার প্রিয় ব্যক্তির প্রয়োজন ছিল। যিশু এসে নিজে শুলিতে চড়ে সে পাপ হতে নিস্কৃতি পেলেও নারীদের ভিতর কেউ এমন হয়নি বিধায় নারীর অস্পৃশ্য/ পাপী। তাছাড়া খৃষ্টীয় ধর্মে মেয়ে সন্তান জন্ম দেওয়ার কারনে অনেক নির্দোষ সুন্দরী নারীকে জীবন্ত আগুনে জালানো বা ফাসিঁতে ঝুলানো হয়েছে, আবার খৃষ্ট ধর্মে তালাক প্রথা নেই, যে কারনে হিন্দু নারীদের মত খৃষ্ট ধর্মে নারীরা নির্যাতন ভোগ করে। সে কষ্টের শেষ নেই। পশ্চিমা খৃষ্টীয় সভ্যতায় প্রকৃত পক্ষে মানব মনের উপর কোন দাগ কাটতে পারেনি। কারণ তা সার্থপরতা ও ভোগান্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। ইসায়ী জগতের এক ধর্ম সাধক বলেন, নারী ছলনার কন্যা। তা থেকে দুরে থাক। নারী শয়তানের শক্তি। অজগর সাপের মত রক্ত পিপাসু। তার মধ্যে সাপের বিষ নিহিত রয়েছে। সমস্ত ত্রুটির উৎস শয়তানের বাদ্যযন্ত্র, শয়তানের সাহায্য কারিনী। যাকে বলে তুমি কে? আমার কাছে তোমর কি প্রয়োজন? গ্রেট পোলো একজন খৃষ্টীয় পুর্ণবান নেতা বলে খ্যাত। তিনি বলেন, পুরুষ নারীর জন্য সৃষ্টি হয়নি, নারীই পুরুষের জন্য সৃষ্টি হয়েছে, নারীর কোন অধিকার নেই, কুমারী মেয়েদের সম্পত্তিও বিয়ের পর স্বামীর বলে গন্য হতো। এমনকি স্ত্রীর নিজ নামটি পর্যন্ত স্বামীর নামের সাথে পরিচিত হতে হয়। জাহেলিয়্যাতের যুগঃ জাহেলী যুগে মেয়ে জন্ম নিলে জীবন্ত অবস্থায় তাকে মাটি চাপা দেয়া হত, নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হত। পাহাড় থেকে নিক্ষেপ করা হত। পাথর মেরে রক্তাক্ত করে মেরে ফেলা হত। মেয়েদের দাসী হিসাবে ক্রয় বিক্রয় করা হত। মেয়ে জন্ম হওয়াতে অসম্মান বোধ করত। ভাবে সম্মান ও মর্যাদা দান করেছে পরে রাসুল সঃ এই কালযুগের পতন ঘটায়। প্রিয় বুদ্ধিমান পাঠক এবার আপনারাই বিবেচনা করে বলুনতো নারী অধিকার কোন ধর্মে বেশি? আমি প্রথমেই বলে রাখছি ইসলাম ধর্মে।কেননা ইসলাম ধর্মের মত এতটা সম্মান,মর্যাদা,অধিকার পৃথিবীর অন্য কোন ধর্মে দেয় নাই।ওহে বিধর্মী ওহে নাস্তিক এরপর ও কি বলবে ইসলাম নারীদের ঠকিয়েছে?এরপর ও কি বলবে ইসলামে নারীদের সম্মান নাই? হে মা বোনেরা আপনারা কি এর পর ও বলবেন ইসলাম আমাদের পূর্ণ মর্যাদা দেয় নাই? হে মা বোনেরা স্বীকার করে নাও যে, ইসলামই সেই শ্রেষ্ঠ ধর্ম যারা তোমার পদতলে জান্নাত দিয়েছে!

মুক্তমনা এবং একজন ধূর্ত হেঁদু অভিজিত্

মুক্তমনা ব্লগের মডারেট অভিজিত্ রায় তার একটা ব্লগে লিখে বুঝাতে চেয়েছেনঃ-ব্লগার থাবা বাবা (নাস্তিক কুলাঙ্গার রাজীব/কদবেল হায়দার) ধর্মকে নিয়ে যে বক্তব্য পেশ করত এটা কোন খারাপ কাজ নয়!বরংচ এটা জ্ঞানমূলক ছিল। আপনারা লক্ষ্য করলে দেখতে পারবেন এই রাজীব শুধু ইসলামকেই কটাক্ষ করেছে।তিনি অন্য কোন ধর্মকে কটাক্ষ করেনি!রাজীব তার একটি ব্লগে লিখেছিলেন মা-ছেল,কন্যা-পিতা সেক্স করা কোন দোষের কিছু না!নাউযুবিল্লাহ।তিনি তার ব্লগ খানায় একটি ফটো দিয়েছিলেন যার উপর লেখা ছিলোঃ-I Aam Pregnent With My Dad's।রাজীবের সেই লেখা খানা নিয়ে লিখেছেন ফারাবী ভাই তার এই ব্লগে চাইলেই পড়তে পারেন।শেষের দিকে এই ব্লগটা পাবেন থাবা বাবা শিরোনামেঃ- http://www.farabiblo g.com যেই নাস্তিক কুলাঙ্গারকে নিয়ে অভিজিত্ এত মেতেছেন সেই থাবা বাবা ছিলেন ফ্রি সেক্সের পাগল!আর তার যারা গোলামি করে অবশ্যই তারাও ফ্রি সেক্সের গোলাম।অভিজিত্ রায়ের বিরুদ্ধে যারা লিখেন অভিজিত্ তাদের ডায়রেক্ট জামাত শীবির আক্ষ্যা দেয়!তাই অনেকে আছেন তার কুকীর্তীর বিরুদ্ধে লিখতে চায়না!এই অভিজিত্ হাদীসকে বিকৃতরুপে ভুল হাদীস প্রচার করেন!এটা আগেই ফারাবী ভাই তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন।অভিজিত্ লিখেছেন রাসূল সঃ নাকি সুন্দরী দেখলেই তাকে জীবনসঙ্গী করেছেন!নাউযুবিল্লাহ।মুক্তমনা যখন তার সাইটের নাম অবশ্যই সেখানে যার স্বাধীনমত সে লিখবে,কিন্তু এই কুলাঙ্গার অভিজিত্ শুধুমাত্র নাস্তিকদের পোষ্টই প্রথম পাতায় রাখেন।আর নাস্তিকদের কেউ ব্যাঙ্গ করলে সেই ব্লগ একাউন্ট খানাই বাদ করে দেয় এই অভিজিত্! অভিজিত্ যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি চায় ভাল কথা তাই বলে ইসলামকে কটাক্ষ করে?হাদীসকে বিকৃত করে?হাদীসের ভূল অনুবাদ করে কি যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি চান এই অভিজিত্?আপনারা লক্ষ্য করলে দেখবেন,হিন্দুদের নিয়ে কোন পোষ্ট যদি কেউ মুক্তমনায় প্রকাশ করে সেই পোষ্টখানা অভিজিত্ গোপনে মুক্তমনার প্রথম পাতা থেকে সড়িয়ে দেয়।কোন এক ব্লগার লিখেছেন জমজমের পানিতে শুক্রকিট,কুরআনের মিরাকল ইত্যাদি সকল প্রকার পোষ্ট কিন্তু অভিজিত্ তার ব্লগে প্রথম পাতাই স্থান দিয়েছে!একধারে তিনি গান গেয়ে যান তিনি মুক্তমনা(নাস্তিক)অন্য একধারে তিনি তার হিন্দুত্ব চালিয়ে যান! অভিজিত্ রায় ফারাবী ভাইকেও জামাত শিবির ট্যাগ দিয়েছেন শুধুমাত্র তার বিপক্ষে লেখায়!তার মুক্তমনায় প্রতিদিন যেই আকারে ধর্মকে অবমাননা করা হয়,এই রকমের ইসলামকে অবমাননা বাংলাদেশের অন্য কোন সাইটে করা হয়না! *তাই মাননীয় সরকারের কাছে বিশেষ অনুরোধ যতদ্রুত সম্ভব এই মুক্তমনা প্লাটফর্মটি বন্ধ করে দেয়া হোক।।।। •নাস্তিদের ফ্রি সেক্স নিয়ে কিছু কথা এখানে পাবেন

Monday, July 7, 2014

কোন মুসলিম কি হিন্দু ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ পারে?

ছবি আসলে হিন্দু ধর্ম কি কোন ধর্ম? না হিন্দু ধর্ম কোন ধর্মের ভিতরই পরে না এরা বিশেষ একটি উগ্র উপজাত! এদের প্রাচীন নাম আর্য্য। আর্য্যরা ছিল মূর্তি পূজারী।কথিত আছে যে এরা শয়তানের ধোঁকায় পরে দুষ্টু জ্বীন পূজা করা শুরু করে যা কিনা প্যাগানরাও করত!এর পরে তারা শুরু করে ঐ দুষ্টু জ্বীনদের প্রতিচ্ছবি পূজা অর্থাত্‍ তাদের মূর্তি বানিয়ে পূজা করা শুরু করে যা কিনা তাদের পূজার হাজার হাজার বছর আগে মারা গেছে। শিব,লক্ষী,গনেশ এদের মূর্তির পিছনে লুকিয়ে আছে একেকটা মৃত জ্বীন যা কিনা হাজার হাজার বছর আগে মারা গেছে [তথ্য সূত্র]।হিন্দুদের মৃত জ্বীন পূজারী বল্লে আপনি ভুল করবেননা। এখন কথা হল এই মৃত জ্বীনদের পূজা যারা করে তাদের ধর্মের প্রতি কি যেনে শুনে কোন মুসলমানরা আকৃষ্ট হতে পারে? অবশ্যই না। কিন্তু ফেসবুকে একটি হিন্দুত্ববাদী পেজ দাবী করেছে নাজমুল নামের একটি মুসলিম ছেলে নাকি এই মৃত জ্বীন পূজারী ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছে।এবং তার নাম রেখেছে 'পিন্টু রায়' [তথ্য সূত্র:জাগো বাংলার হিন্দু]। তাদের দাবী যে ,হিন্দু ধর্ম এমনই একটি ধর্ম যার ধর্মগ্রন্থ পড়লে যে কেউ আকৃষ্ট হবে তাদের ধর্মের প্রতি। হিন্দু ধর্ম যে কতটা মিথ্যা এবং বোকাদের তা আমি আলোচনা করেছি এই পাঁচটি পর্বেঃ •হেঁদু সমাচার ১ম পত্রহেঁদু সমাচার ২য় পত্রহেঁদু সমাচার ৩য় পত্রহেঁদু সমাচার ৪র্থ পত্রহেঁদু সমাচার শেষ পত্র। যারা প্রচার করেছে মুসলিম ছেলে হিন্দু হয়েছে আমি তাদের চ্যালেঞ্ছ ছুড়ে দিয়েছিলাম , তারা যে নিউজ দিয়েছে সে নিউজটা ১০০% ভূয়া। প্রমাণ:— •তারা যে খবরটা দিয়েছে খবরটা কোথা থেকে তারা পেয়েছে অর্থাত্‍ কোন তথ্যসূত্র/নিউজ লিঙ্ক নেই। •ঘটনাটা কোথায় ঘটেছে স্থান কোথায় তা দেয়া নাই। •নাজমুল ছেলেটা হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করার পর তার নাম হয়েছে নাকি পিন্টু রায়।আচ্ছা ভাই [রায়]তো একটা বংশের নাম।হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করলেই তো আর রায় হওয়া যায়না।তো ছেলেটা তো আগে কখনো হিন্দু ছিলনা তাইলে সে রায় উপাধিটা কোথায় পেলো? নাকি হিন্দু হওয়ার পরই বংশ উপাধি রায় হয়ে যায়? পাঠক আপনারাই বলেন যে নিউজের কোন তথ্যসূত্র নাই সেই খবরটা সত্য হয় কেমনে? অনেক হিন্দু মুসলিম হয় কিন্তু কোন মুসলিম হিন্দু হয়না। মুসলিম থেকে অনেকে ধর্মহীন হয় কিন্তু হিন্দু,বৌদ্ধ ,খ্রীষ্টান কিংবা ইহুদি হয়েছে কিনা তা আমার জানা নাই। হিন্দু থেকে মুসলমান হয়েছে এমন বহু তথ্য আমার কাছে আছে। এখানে একটা ঘটনা তুলে দিলামঃ ২০০৭ এ কোলকাতায় শিবছাগুদের হুটোপুটিতে মাওলানা আব্দুল খালেককে ভারতের কারাগারে বন্দি করা হল ইসলামের পক্ষে এবং হিন্দুধর্মের বিপক্ষে বলায়! পানির তৃষ্ঞায় মাওলানা পানি পানি করলেও ভারতী কুত্তাগুলো ১ফোঁটা পানি মাওলানাকে দেয়না! অনেকক্ষন পর ১গ্লাস ঠান্ডা পানি তাকে দেখিয়ে পানির গ্লাশটা মাটিতে ছেড়ে দেয়।পানি খাওয়া তার আর হয়না। ক্ষুধা নিবারনের জন্য ১পিস রুটি জেলের মধ্যে ধুলির উপর নিক্ষেপ করা হয়। তাকে আদালতে আনা হলে তাকে প্রমাণ করতে বলা হয় যে বেদের মধ্যে কোথায় আছে ইসলামের কথা? মাওলানা আঃ খালেক বল্লেন জনাব,বেদে আছেঃ একং ব্রহ্মং স্রষ্ঠং নে নাস্সিং কে কিংটং। অর্থাত্,ঐ সৃষ্টি কর্তাকে সেজদা কর যার কোন শরীক নেই,যাকে দুনিয়ার চক্ষু দিয়ে দেখা চাইলে অন্ধ হয়ে যায়। তখন মাওলানা বল্ল জনাব,আপনারা তো দূর্গাকে দেখে দেখে,কালিকে দেখে দেখে পূজা দেন!লক্ষিকে দেখে দেখে পূজা দেন!কোন দিন কি আপনাদের ভগবানকে দেখতে গিয়ে চোখ অন্ধ হয়েছে? তারা বল্লেন,না তাতো হয়নি!তখন মাওলানা বল্লেন জনাব,তাহলেতো এ দলিল তো আপনাদের ভগবানের না!এই দলিল তো মুসলিমদের দলিল। তখন বিচারক বল্ল আঃ খালেক তাহলে আপনাদের দলিলের প্রমাণ কি?আঃ খালেক বিবৃতি দিতে লাগলেনঃমূসা আঃ বল্লেনঃ রব্বি আরনি,খোদা তোমায় দেখতে চাই! আল্লাহ বলছেন,লান তারানি,সম্ভব না! মূসা নবী শোনেনা।আল্লাহ তাকে দাওয়াত দিলেন তূর পাহাড়ে। আল্লাহ তাকে দেখা দেয়ার জন্য প্রথম পর্দা খুললে মূসা নবী বেহুশ হয়ে পরে যায় তূর পাহাড় ছাড়খাড় হয়ে যায়! তাহলে এতেই কি প্রমাণ হয়না ঐ তত্ত্ব মুসলিমদের? এই তত্ত্ব যখন দেয়াহয় ঐ মহলের বিচারক সহ ৩৭জন ইসলাম গ্রহণ করেন![তথ্য সূত্র] আমি যতটা খবর জানি এবং দেখেছি তার মধ্যে আজকের এই মুসলিম ছেলে হিন্দু হয়েছে খবরটা আজগুবি।তারা মিথ্যা দিয়ে ধর্মকে বড় বানাচ্ছে।আর বানাবেই বা না কেন,তাদের ধর্মই তো মিথ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত। মিথ্যা খবর প্রচার করে কি হিন্দু ধর্মকে ইসলাম ধর্মের উপরে কখনোই মালাউনরা।ইসলামের সফলতা দেখে মালাউনরা শুধু ঈর্ষার আগুনেই পুড়ে যাবে,কখনো ইসলামের চেয়ে শ্রেষ্ঠ হতে পারবেনা। আমি সকল হিন্দুদের বলছি,হে ভাই আর কতদিন প্যাগানদের মতো মাটি মূর্তির পূজা করবে যার সৃষ্টি কর্তা তুমি? হে ভাই ফিরে আসো,তোমার জন্য এখনো অপেক্ষা করছে ইসলাম।হাত মিলাও সেই মুসলিমের সাথে যাদের সৃষ্টিকর্তা ১ ও অদ্বিতীয় যার কোন শরীক নাই। পড়,লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মাদুর রসুলুল্লাহ(সঃ)। একবার কালিমা পড়ে দেখ,তুমি পাবে মুক্তি,তোমার জন্য অপেক্ষা করছে চীর শান্তিময় স্থান জান্নাত!

Sunday, July 6, 2014

মাহমুদুর রহমানের কলাম:গনতান্ত্রিক শাসনের বিকল্প নেই

mamdur-sml.jpg মন্তব্য প্রতিবেদন : গণতান্ত্রিক শাসনের বিকল্প নেই মাহমুদুর রহমান বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অক্টোবরে আমাদের দুই প্রবল ক্ষমতাধর প্রতিবেশী রাষ্ট্র সফর করে দেশে ফিরেছেন। অন্য বিষয়াদির মতোই বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের দুই প্রধান নেত্রীর চরিত্রে লক্ষণীয় ভিন্নতা রয়েছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বরাবরই বিদেশে বেড়াতে বিশেষ পছন্দ করেন। তার সকল নিকট-জনেরাও সপরিবারে প্রবাসী। প্রধানমন্ত্রীর পরিবারে দুর্নীতির ব্যাপকতা নিয়ে চারদিকে গুঞ্জন ওঠার প্রেক্ষিতে কয়েক মাস আগে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পরিবারের সংজ্ঞা দেশবাসীকে জানিয়েছিলেন। সেই সংজ্ঞায় তিনি ছাড়া তার ছোট বোন শেখ রেহানা এবং উভয়ের পুত্র- কন্যাগণকেবল প্রধান-মন্ত্রীর পরিবারভুক্ত। পুত্রবধূ অথবা কন্যা- জামাতা এবং পৌত্র-পৌত্রীদের এই সংজ্ঞায় স্থান কোথায়, সে বিষয়ে শেখ হাসিনা অবশ্য কিছু বলেননি। যাই হোক, এরা সবাই আমেরিকা, কানাডা ও ব্রিটেনের বাসিন্দা। পদ্মা সেতু দুর্নীতির দেশে-বিদেশে তদন্তের প্রেক্ষিতে তিন দেশের মধ্যে সম্প্রতি কানাডা নিয়েই মিডিয়া ও জনগণের ঔত্সুক্য বিশেষভাবে বেড়েছে। সুতরাং, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ ভ্রমণপ্রীতির পেছনে ন্যায্য কারণ রয়েছে। অপরদিকে আগের ইতিহাসে দেখা গেছে, বেগম খালেদা জিয়া স্বদেশে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। পাঁচ বছরের সরকারি দায়িত্ব পালনকালে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাতেও দেখেছি, তিনি নিজে যেমন বিদেশে যেতে চান না, একইভাবে মন্ত্রী-আমলাদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণের প্রবণতাকেও যথেষ্ট অপছন্দ করেন। রাজনৈতিক এবং স্বাস্থ্যগত কারণে বিরোধীদলীয় নেত্রীর দুই পুত্র বিগত চার বছরেরও অধিককাল বিদেশে থাকলেও তিনি কিন্তু পরিবার থেকে দূরে থাকার যাতনা সয়ে অধিকাংশ সময় বাংলাদেশেই কাটিয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়া দশ বছর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে প্রায় নয় বছর পার করেছেন এবং এবারের মেয়াদ পূর্ণ করে তিনিও বেগম খালেদা জিয়ার ১০ বছরের রেকর্ড ধরে ফেলবেন বলেই সকলের ধারণা। মাঝখানের দুই বছরের মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীনের সরকারের সময়টুকু বাদ দিলে দুই নেত্রী দুই দশক ধরে পালাক্রমে সরকারপ্রধান এবং বিরোধীদলীয় প্রধান হয়েছেন। এই সময়ের বিদেশ ভ্রমণের তালিকা প্রণয়ন করলে একজনের বিদেশ ভ্রমণপ্রীতি এবং অপরজনের বিদেশ যেতে অনীহার চিত্রটি জনগণের কাছে পরিষ্কারভাবেই ফুটে উঠবে। ক্ষমতাবানদের বেড়ানোর গল্প রেখে এবার রাজনীতির গুরু-গম্ভীর আলোচনায় আসি। বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন হতে সংবিধান অনুসারে এখনও এক বছরেরও কিছু অধিক সময় বাকি আছে। জনগণ গভীর আশঙ্কা নিয়ে আগামী নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। দেশব্যাপী এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টির তাবত্ ‘কৃতিত্ব’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ভাগাভাগি করে নিতে পারেন। উভয়ে মিলে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রথা বাতিল না করলে এই অনভিপ্রেত অস্বস্তির সৃষ্টি হতো না। তবে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল না হলেও পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান কে হচ্ছেন, সেটা নিয়ে সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে ২০০৬ সালের মতো একটা টানাপড়েন যে থাকতো, সেটা অস্বীকার করা যাবে না। কারণ অপরিবর্তিত সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা বিতর্কিত প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকই আজ সেই পদের দাবিদার হতেন। ২০০৬ সালে বিচারপতি কেএম হাসানকে সত্তরের দশকে তার সঙ্গে বিএনপির কথিত সাংগঠনিক সম্পর্ক এবং কর্নেল রশীদের সঙ্গে আত্মীয়তার কারণে আওয়ামী লীগ গ্রহণ করেনি। তদুপরি ২০০৫ সালে চারদলীয় জোট সরকার কর্তৃক বিচারপতিদের অবসর গ্রহণের বয়স ২ (দুই) বছর বৃদ্ধি করার বিষয়টিকে তত্কালীন বিরোধী দল সন্দেহের দৃষ্টিতেই দেখেছে। কিন্তু একজন বিচারপতি হিসেবে কেএম হাসান প্রজ্ঞা, নিরপেক্ষতা, সততা এবং আইনের গভীর জ্ঞানের স্বাক্ষর রেখেছেন। তার প্রাতিষ্ঠানিক এবং ব্যক্তিগত আচরণ সর্বদাই বিচারপতিসুলভ ছিল। দীর্ঘ জজিয়তি জীবনে তিনি যে সকল রায় লিখেছেন, সেগুলো নিয়ে কখনোই কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হয়নি। অপরদিকে বিচারপতি খায়রুল হক আদালতপাড়ায় একজন চরম দলবাজ বিচারপতি হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতি তার ব্যক্তিগত বিদ্বেষের বিষয়টি সম্পর্কেও দেশবাসী অবহিত। কাজেই বিচারপতি খায়রুল হককে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান হিসেবে মেনে নেয়া বিএনপি’র পক্ষে সঙ্গত কারণেই সম্ভব হতো না। মনে রাখা দরকার, এই ধরনের জটিলতা থেকে উত্তরণের পন্থা ত্রয়োদশ সংশোধনীতেই দেয়া ছিল। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন পদ্ধতি সংক্রান্ত অনুচ্ছেদ, ৫৮গ (৫)-এ বলা ছিল— “যদি আপীল বিভাগের কোনো অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে পাওয়া না যায় অথবা তিনি প্রধান উপদেষ্টার পদ গ্রহণে অসম্মত হন, তাহা হইলে, রাষ্ট্রপতি, যতদূর সম্ভব, প্রধান রাজনৈতিক দলসমূহের সঙ্গে আলোচনাক্রমে, বাংলাদেশের যে সকল নাগরিক এই অনুচ্ছেদের অধীনে উপদেষ্টা হইবার যোগ্য তাহাদের মধ্য হইতে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করিবেন।” এক-এগারোর সরকার গঠনের সময় তত্কালীন রাষ্ট্রপতি প্রফেসর ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ছাড়াই শুধু সামরিক জান্তার নির্দেশে ড. ফখরুদ্দীন আহমদকে প্রধান উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন। তার এই পদক্ষেপ সরাসরি সংবিধানের লঙ্ঘন হলেও সে সময় সুশীল (?) সমাজভুক্ত আইনজীবীকুল এবং শেখ হাসিনাসহ মহাজোট নেতৃবৃন্দের মধ্যে কেউ কোনো আপত্তি উত্থাপন করেননি। যাই হোক, দেশের বর্তমান বিবদমান পরিস্থিতিতে উদ্ধৃত অনুচ্ছেদটি রাজনৈতিক সংঘাত থেকে হয়তো জনগণকে মুক্তি দিতে পারত। কিন্তু একতরফাভাবে প্রায় অকার্যকর, একদলীয় সংসদে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে পঞ্চদশ সংশোধনী গৃহীত হওয়ার ফলে আলাপ- আলোচনার মাধ্যমে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একজন ব্যক্তিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান পদে নিযুক্তির সুযোগ রহিত করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী বছর একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের পরিবর্তে প্রধান দুই দল এখন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়ন ছাড়াও দেশের অভ্যন্তরে আন্দোলন পরিচালনা এবং আন্দোলন প্রতিহত করার কৌশল নির্ধারণে ব্যস্ত। বিগত চার বছরে বিএনপি বিভিন্ন ইস্যুতে থেমে থেমে আন্দোলনের হুঙ্কার দিলেও তেমন কোনো সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তোলেনি। বরং আওয়ামী লীগের কট্টর সমর্থকও হয়তো স্বীকার করবেন যে, ১৯৯১- পরবর্তী বাংলাদেশের বিগত চারটি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সংসদীয় পদ্ধতির সরকারের মেয়াদকালে রাজপথের আন্দোলনের বিবেচনায় এবারই কোনো সরকার তুলনামূলকভাবে অপেক্ষাকৃত শান্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করে চলেছে। এখন পর্যন্ত জনগণের দৈনন্দিন জীবনযাপন হরণকারী রাজনৈতিক কর্মসূচি হরতাল দেয়াতে বিএনপি’র নীতিনির্ধারকদের মধ্যে পরিষ্কার অনীহা লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপিবিরোধীরা বিষয়টিকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করে অবশ্যই দাবি করতে পারেন যে, বিরোধী দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং সরকারের কঠোর পুলিশি ব্যবস্থার কারণেই দেশের রাজনীতি শান্তিপূর্ণ থেকেছে। যে কারণেই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই উত্তরণ ঘটে থাকুক না কেন, বাস্তবতা হলো মহাজোট সরকার সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘ চার বছর সময় পেয়েও চরম দলীয়করণ, নজিরবিহীন দুর্নীতি ও তীব্র প্রতিহিংসাপরায়ণতার কারণে দেশ পরিচালনায় সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের বিদেশি মুরব্বি গোষ্ঠীও বাংলাদেশে জনমতের পরিবর্তন সঠিকভাবে আন্দাজ করতে পেরে তাদের কৌশলেও পরিবর্তন এনেছে। তাদের সেই পরিবর্তনে এদেশের শাসকগোষ্ঠীও যে বিচলিত হয়ে পড়ছে, সেটাও বেগম জিয়ার সাম্প্রতিক ভারত সফর নিয়ে নেতৃবৃন্দের অকূটনৈতিক মন্তব্যের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। এ অবস্থায় নির্বাচনে পরাজয়- পরবর্তী অবধারিত জনরোষ থেকে রক্ষা পেতেই ক্ষমতাসীন মহল ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার আয়োজন করছে। ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করলে এই সর্বনাশা খেলা থেকে তাদের অবশ্যই নিবৃত্ত হওয়া উচিত। ১৯৭৫ সালে সংবিধান সংশোধনের ফলাফল হৃদয়বিদারক হয়েছিল। জেনারেল এরশাদ ১৯৮৬ এবং ১৯৮৮ সালে দুই দফায় একতরফা নির্বাচন করলেও কোনো বারই সংসদের মেয়াদ দুই বছরের বেশি টেকাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত তাকে গণধিকৃত হয়ে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছে। ১৯৯৬ সালে বিএনপি ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি সংযুক্তির জন্যই করতে বাধ্য হয়েছিল। সেই স্বল্পকালীন সংসদের মেয়াদও তাই ত্রয়োদশ সংশোধনী গ্রহণের সঙ্গেই সমাপ্ত হয়েছিল। ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচন প্রচেষ্টার বিপজ্জনক পথ ধরেই জেনারেল মইন-মাসুদ গং ক্ষমতা দখল করেছিল। রাষ্ট্রক্ষমতা হাতে পেয়ে তারাও আজকের মহাজোটের মতোই নব্বই দিনের মেয়াদের কথা ভুলে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। তথাকথিত ‘মাইনাস টু’ সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ ছিল। বাংলাদেশের সুশীল (?) সমাজ তত্কালীন অসাংবিধানিক সরকারকে শুধু সমর্থনই জানায়নি, ‘মাইনাস টু’ বাস্তবায়নে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিল। সে সময় ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনা : প্রচারণা ও বাস্তবতা’ শিরোনামে একটি কলাম লিখেছিলাম। ২০০৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তারিখে প্রকাশিত কলামের এক জায়গায় শেখ হাসিনা এবং বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে লিখেছিলাম— “বাস্তবতা হলো, এই দুই নেত্রী মিলে দীর্ঘ ১৫ বছর নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীরূপে বাংলাদেশ পরিচালনা করেছেন এবং কারাবন্দী অবস্থাতেও এই দু’জনই বাংলাদেশের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ধারার রাজনীতির অবিসংবাদিত নেত্রীর স্থানটি ধরে রেখেছেন। বর্তমান নীতিনির্ধারকদের মধ্যে কেউ হয়তো এমন ধারণা পোষণ করেন যে, জননন্দিত নেতা চাইলেই পাওয়া যায় অথবা হওয়া যায়। কিন্তু বিষয়টি এতটা সহজ হলে তথাকথিত মাইনাস টু কৌশল এতদিনে বাস্তবায়ন হয়ে যেত।” ২০০৮ সালের মাঝামাঝি দুই নেত্রী সংসদ এলাকার সাবজেল থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। তবে দুই মুক্তিতে অনেক ফারাক ছিল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তত্কালীন সামরিক জান্তার সঙ্গে আঁতাত করে ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের বন্দোবস্ত সমাপ্তি সাপেক্ষেই জেলের বাইরে পা রেখেছিলেন। বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থবিরুদ্ধ সেই অশুভ আঁতাত নিয়ে তখন লিখেছিলাম, ‘আঁতাতকারীরা ক্ষমতার পিঠা ভাগে মত্ত।’ ওই বছর জুলাইয়ের ১৭ তারিখে নয়া দিগন্তে প্রকাশিত সেই লেখায় আমার মন্তব্য ছিল— “বর্তমান ক্ষমতাসীনদের সাথে আওয়ামী লীগ এবং তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর মাখামাখি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। শেখ হাসিনা কারামুক্ত হয়ে দেশ ছেড়ে এখন বিশ্বভ্রমণ করে বেড়াচ্ছেন এবং সরকারের সাথে আওয়ামী লীগের একপ্রস্থ সংলাপ নাটকও সম্পন্ন হয়েছে। সর্বশেষ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এক-এগারোর অন্যতম রূপকার ও প্রচ্ছন্নের ক্ষমতাধর ব্যক্তিটির প্রশংসায় ফুলঝুরি ছোটাচ্ছেন। অপরদিকে এই সময়ের মধ্যে জাতীয়তাবাদী এবং ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীনদের নিপীড়ন তীব্রতর হয়েছে।” সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অন্যান্য মন্ত্রীর জাতিকে এক- এগারোর ভয় দেখানোর প্রেক্ষিতেই পাঠকদের পুরনো কথাগুলো মনে করিয়ে দেয়ার প্রয়োজন বোধ করলাম। তাদের স্মরণে রাখা আবশ্যক, এক- এগারো আওয়ামী লীগ ও সুশীল (?) গোষ্ঠীর যৌথ প্রকল্প ছিল এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সেই এক-এগারোর আঁতাতেরই ফসল। এটাই প্রকৃত ইতিহাস। সুতরাং, এক- এগারো সম্পর্কে সমালোচনার নৈতিক অধিকার বাংলাদেশের আর যে নাগরিকই হোক, অন্তত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাখেন না। ফখরুদ্দীন আহমদের শপথ গ্রহণের দিনে বঙ্গভবনে দলবলসহ তার সহর্ষ উপস্থিতি এবং সেই সরকারের ‘সকল কর্মকাণ্ডের’ আগাম বৈধতা প্রদানের ঘোষণার কথা ভুলো বাঙালি মুসলমান বোধহয় এখনও পুরোপুরি ভুলে যায়নি। তাছাড়া সেই ক্যু দেতা’র অন্যতম নায়ক লে. জে. (অব.) মাসুদউদ্দিন চৌধুরী চাকরিতে একের পর এক মেয়াদ বৃদ্ধির রেকর্ড সৃষ্টি করে আজ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। তাকে এই নজিরবিহীন পুরস্কার প্রদানের পেছনে যে শেখ হাসিনার কৃতজ্ঞতার ঋণ শোধের ব্যাপারটি ক্রিয়াশীল রয়েছে, সেটি দেশের সকল সচেতন নাগরিকই বুঝতে পারেন। এক-এগারোর সরকার দ্বারা শারীরিকভাবে নির্যাতিত বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর মইন-মাসুদকে লক্ষ্য করে যতই হুংকার ছাড়ুন না কেন, তার যে দুই সাবেক জেনারেলের কেশাগ্র স্পর্শ করারও ক্ষমতা নেই, এটা সম্ভবত তিনিও জানেন। তবু চেঁচামেচি করে গায়ের ঝাল যদি কিছুটা কমানো যায় আর কী! বেগম খালেদা জিয়ার সদ্যসমাপ্ত ভারত সফরের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে সহসাই জোর নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করবে বলেই মনে হচ্ছে। সংবিধানের বর্তমান অবস্থায় দশম সংসদ নির্বাচন আগামী বছর অক্টোবরের ২৫ থেকে ২০১৪ সালের জানুয়ারির ২৪- এর মধ্যবর্তী যে কোনো দিনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সাবেক প্রধান বিচারপতি ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ রায়ে আবার কমপক্ষে ৪২ দিনের নির্বাচন প্রস্তুতির একটা নির্দেশনা দিয়েছেন। রায়ের ওই অংশটি বিবেচনায় নিলে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ২০০৮ সালেও ওই মাসেই নবম জাতীয় সংসদের নির্বাচন হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাসে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে খানিকটা অতিরিক্ত উদ্দীপনা বিরাজ করে। দীর্ঘ তিরিশ বছরের অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ রাজনীতিবিদ শেখ হাসিনাও নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণে মনস্তাত্ত্বিকভাবে এগিয়ে থাকার এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিশ্চয়ই বিবেচনায় নেবেন। সব মিলে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা অব্যাহত থাকার বিষয়টি এখন সর্বতোভাবে শেখ হাসিনার ওপরই নির্ভর করছে। গণআকাঙ্ক্ষা মান্য করে তিনি একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করলে জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষার পাশাপাশি দেশও এক অবশ্যম্ভাবী বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাবে। ১৯৯৬ সালের বিএনপির মতো বর্তমান সংসদে মহাজোটের সংসদ সদস্যের সংখ্যা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। সে সময় সংসদে বিএনপির দুই- তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকার কারণেই বেগম খালেদা জিয়াকে ১৫ ফেব্রুয়ারির অজনপ্রিয় নির্বাচনের ঝুঁকি নিতে হয়েছিল। বর্তমান অবস্থায় শেষ হাসিনার ইচ্ছানুযায়ী সংবিধানে যে কোনো সংশোধনী আনার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা তার দলের রয়েছে। তার সরকারের মেয়াদের শেষদিন পর্যন্ত তিনি আইনগতভাবে বৈধ এবং নৈতিকভাবে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিবেচিত হবেন। কিন্তু মেয়াদ শেষে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে শেখ হাসিনা যদি দশম সংসদের একতরফা নির্বাচন সম্পন্ন করতেও পারেন, তাহলেও তাকে আর বৈধ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশে- বিদেশে কেউ মেনে নেবে না। সেক্ষেত্রে কেবল পেশিশক্তির ওপর নির্ভর করেই তাকে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে। আগেই উল্লেখ করেছি, বাংলাদেশের ৪১ বছরের ইতিহাসে সকল অত্যাচারী শাসকের ভয়ানক পরিণতি ঘটেছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিকভাবেও বর্তমান সরকার ক্রমেই বন্ধুহীন হয়ে পড়ছে। শেষ ভরসা ভারতীয় দুর্গতেও বেগম খালেদা জিয়া জোরেশোরে হানা দিয়েছেন। সুতরাং কেবল এক ইসলামী জঙ্গি জুজুর ভয় দেখিয়ে ২০০৮-এর মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতকে একসঙ্গে পাশে পাওয়ার সম্ভাবনা ক্রমেই ফিকে হয়ে আসছে। এমতাবস্থায় ক্ষমতাসীন মহলের যে কোনো মূল্যে ২০২১ পর্যন্ত ক্ষমতায় টিকে থাকার ফ্যাসিবাদী চিন্তাই বরং আবারও অসাংবিধানিক শক্তির ক্ষমতা দখলের সুযোগ সৃষ্টি করবে। ২০০৭ সালের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, সমগ্র জাতিকেই শেষ পর্যন্ত এ ধরনের বোধবুদ্ধিহীন দুঃসাহসিকতার মূল্য চুকাতে হয়। মইন- মাসুদ গংয়ের তুঘলকি রাজত্ব- পরবর্তী পাঁচ বছরে সেনাবাহিনী এবং বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) থেকে শুরু করে বাংলাদেশের প্রায় সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংসপ্রাপ্ত অথবা দুর্বল হয়েছে। দলগুলোর সংকীর্ণ ক্ষমতার রাজনীতি চর্চা বাংলাদেশকে আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় অধিকতর পরমুখাপেক্ষী করে তুলেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য দেশের স্বার্থে স্বাধীনতাকামী জনগণের ঐক্য প্রয়োজন। গণতন্ত্রের অনেক দুর্বলতা সত্ত্বেও দেশের স্বাধীনতা রক্ষার্থে অন্তত জাতীয় ইস্যুতে নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ করতে হলে ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক শাসন অপরিহার্য। আশা করি, শেখ হাসিনা উপলব্ধি করবেন, অসাংবিধানিক সরকারের আগমনী পথ প্রশস্ত করার চাইতে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে পরাজিত হয়ে বিরোধী নেত্রীর ভূমিকা গ্রহণ করাও অধিকতর নিরাপদ ও সম্মানজনক। ২০০৮ সালে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হওয়ার পর মাত্র চার বছরের ব্যবধানে জনসমর্থনের বিচারে বেগম খালেদা জিয়ার অবিশ্বাস্য ঘুরে দাঁড়ানো থেকে তিনি অনুপ্রেরণা লাভ করতে পারেন। ইমেইল : admahmudrahman@gmail.com

মাহমুদুর রহমানের কলাম-সরাষ্ট্রমন্ত্রীর উচ্ছৃঙ্খল পুলিশ

মন্তব্য প্রতিবেদন : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উচ্ছৃঙ্খল পুলিশ মাহমুদুর রহমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন দীর্ঘদিন মেঠো রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থেকে এবং একাধিকবার সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের একজন মাঠকর্মী হিসেবে প্রবীণ বয়সে এমপি হওয়াটাই তার জন্য পরম গৌরবের বিষয় ছিল। কিন্তু বৃহস্পতি তুঙ্গে থাকায় তিনি প্রথম সুযোগেই কেবল ফুল মন্ত্রী নন, মহাশক্তিধর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদও দখল করতে পেরেছেন। সুতরাং তিনি যে রাষ্ট্র পরিচালনায় নীতি-নৈতিকতা শিকেয় তুলে অতিমাত্রায় দল এবং দলীয় প্রধানের প্রতি অনুগত থাকবেন, এটাই প্রত্যাশিত। সাহারা খাতুন তার বিভিন্ন বক্তব্যে প্রসঙ্গ থাকুক আর না-ই থাকুক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেনে এনে তার প্রতি যে কৃতজ্ঞতা ও আনুগত্যের বয়ান দেন, সেটার কারণও জনগণের বুঝতে অসুবিধা হয় না। এতে আমজনতার হয়তো তেমন কোনো সমস্যাও হতো না। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ হাতে পেয়ে তিনি প্রজাতন্ত্রের পুলিশ বাহিনীকে যে নিতান্তই ব্যক্তিগত এবং দলীয় সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করছেন, সেখানেই যত সমস্যা। গত সাড়ে তিন বছরে তার কণ্ঠে ‘আমার পুলিশ’ কথাটি যে কতবার উচ্চারিত হয়েছে, তার হিসাব রাখাই কঠিন। পুলিশ যে প্রজাতন্ত্রের, সাহারা খাতুনের নয়— এটা বোঝানোর মতো কেউ সম্ভবত তার পাশে নেই। আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে, মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান, তদীয় কন্যা শেখ হাসিনা এবং সামরিক স্বৈরাচারী এরশাদ ছাড়া বাংলাদেশের অন্য কোনো রাজনীতিবিদ বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো করে রাষ্ট্রকে একেবারে নিজস্ব সম্পত্তি বিবেচনা করেননি। একজন মন্ত্রী যখন তার মন্ত্রণালয়কে পৈতৃক অথবা দলীয় জমিদারি ভাবতে শুরু করেন, তখনই সুশাসনের বারোটা বেজে যায়। পুলিশ বাহিনীর মধ্যে আইন ও মানবাধিকারের প্রতি যে চূড়ান্ত অবজ্ঞা আজ পরিলক্ষিত হচ্ছে, তার প্রধান দায়-দায়িত্ব তাই বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেই বহন করতে হবে। সাহারা খাতুনের পুলিশ গত সপ্তাহ খানেকের মধ্যে যে অমার্জনীয় কাণ্ডগুলো ঘটিয়েছে, তার একটি সংক্ষিপ্তসার এবার প্রস্তুত করা যাক। গত মাসের ২৬ তারিখে রোকেয়া সরণিতে পলিটেকনিকের ছাত্রীদের অবরোধের ছবি তোলার সময় একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ প্রথম আলোর তিন ফটো সাংবাদিককে বেধড়ক লাঠিপেটা করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। পেটানোর সময় অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার চিত্কার করে বলেছে, পেটা সাংবাদিকদের, ওরাই যত নষ্টের গোড়া, এদেশে সাংবাদিক পেটালে কিছু হয় না। পুলিশ কর্মকর্তার দাবির পেছনে যুক্তি আছে। সত্যিই তো, ঘরে ঢুকে সাংবাদিক খুন করলে যে দেশে কিছু হয় না, সেখানে যত্সামান্য পিটুনি তো নস্যি! একই মাসের ২৯ তারিখে পুরনো ঢাকার আদালতপাড়ায় বাবা-মায়ের সঙ্গে আসা বিচারপ্রার্থী এক তরুণীকে পুলিশ ক্লাবে ধরে নিয়ে শ্লীলতাহানি করেছে আওয়ামী-বাকশালী পুলিশ। এই ন্যক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে নির্মমভাবে লাঠিপেটার শিকার হয়েছেন তিন সাংবাদিক, দুই আইনজীবীসহ অন্যান্য প্রতিবাদকারী জনতা। আহত তিন সাংবাদিক যথাক্রমে প্রথম আলো, কালের কণ্ঠ এবং বাংলাদেশ প্রতিদিনে কর্মরত আছেন। ঘটনার এখানেই শেষ নয়। অপকর্ম ধামাচাপা দেয়ার জন্য নির্যাতিত তরুণীকেই উল্টো কোতোয়ালি থানায় ধরে নিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে অতি ঘনিষ্ঠ আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল চক্রবর্তী খবর পেয়ে থানায় ছুটে না গেলে তরুণীটির কপালে আরও দুঃখ ছিল। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালকের সামনেই কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিনের উদ্ধত ব্যবহারের খানিকটা নমুনা আমরা টেলিভিশনে দেখতে পেয়েছি। কোতোয়ালি থানার এই ওসির সঙ্গে আমার রিমান্ড চলাকালীন সাক্ষাত্ হয়েছিল। ‘পবিত্র ভূমি’ গোপালগঞ্জের অধিবাসী পুলিশ কর্মকর্তাটি আমাকে সারা রাত থানা গারদে জনা পনেরো মাদকাসক্ত ও দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে দাঁড় করিয়ে রেখেছিল। সেই অসহনীয় পরিবেশে সন্ধ্যা থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত অবস্থানকালে এক গ্লাস পানি পানেরও প্রবৃত্তি হয়নি। মিনিট তিরিশের কথাবার্তায় আমার কাছে ওসি সালাহউদ্দিনকে পুলিশের পোশাকে ছাত্রলীগের একজন পাণ্ডার মতোই লেগেছিল। সে বার বার ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলছিল, গোপালগঞ্জের অধিবাসী হওয়ার অপরাধে বিএনপি জমানায় তার ভালো কোনো জায়গায় পোস্টিং হয়নি। ভাবখানা ছিল আমিই যেন সেজন্য দায়ী। ওসি সালাহউদ্দিন ছাড়াও ওই এলাকার বর্তমান ডিসি হারুন ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। ডিসি হারুন সংসদ এলাকায় বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুককে নৃশংসভাবে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেশব্যাপী বিশেষ ‘খ্যাতি’ অর্জন করেছে। তার সেই ‘বীরত্বপূর্ণ’ কর্মকাণ্ডের পুরস্কার হিসেবেই সাহারা খাতুন হারুন-উর রশীদকে তেজগাঁও জোনের এডিসি থেকে পদোন্নতি দিয়ে লালবাগ জোনের ডিসি বানিয়েছেন। হারুন-উর রশীদ এর আগে লালবাগ জোনে এসির দায়িত্বও পালন করেছেন। ২০১০ সালে লালবাগ জোনে দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ বিভাগীয় তদন্তে প্রমাণ হয়েছিল। ছাত্রলীগ সংযোগের জোরে সে যাত্রায় তার চাকরি রক্ষা পেয়েছিল। হারুন- সালাহউদ্দিনের যৌথ তাণ্ডবে লালবাগ- কোতোয়ালি এলাকার জনগণের কী হাল হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়। যা-ই হোক, অনেক টালবাহানা শেষে ৩০ তারিখ রাত দুটায় নির্যাতিত তরুণীর মামলা কোতোয়ালি থানা গ্রহণ করেছে। গত মাসের ৩০ তারিখে গাজীপুরের পুলিশ মামুন ভূঁইয়া নামে একজন ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে হাতকড়া পরিয়ে খুনিদের হাতে তুলে দেয়। পুলিশের উপস্থিতিতেই সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে অসহায় মামুনকে হত্যা করে। হত্যা নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ নিহতের হাতকড়া খুলে অকুস্থলে ফেলে রাখে। পুলিশ হেফাজতে আসামি খুনের এ এক লোমহর্ষক কলঙ্কজনক ঘটনা। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত একই সপ্তাহের অন্যান্য খবর পর্যালোচনা করলে থানা হেফাজতে অভিযুক্তদের পুলিশি নির্যাতনের আরও অনেক নৃশংস ঘটনা চোখে পড়বে। নজিরবিহীন পুলিশি নির্যাতন এবং আইনশৃঙ্খলার ভয়াবহ অবনতি সত্ত্বেও সাহারা খাতুন অব্যাহতভাবে দাবি করে চলেছেন, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাকি দশ বছরের মধ্যে সর্বোত্তম অবস্থায় রয়েছে। লজ্জার মাথা খেয়ে তিনি আরও দাবি করছেন, পুলিশও নাকি আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। এই দাবির পেছনে তার যুক্তি হলো, বিরোধী দলে থাকাকালীন রাস্তায় আন্দোলনের সময় পুলিশ পিটিয়ে তার একটি পা ভেঙে দিয়েছিল। এখন সেই পুলিশ জাতীয় সংসদের সামনে বিরোধী দলের চিফ হুইপের পা এবং মাথা ভেঙে দিলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য সেটাকে যথেষ্ট বিবেচনা করছেন না। বরং যে পুলিশ কর্মকর্তা এই গর্হিত কাজটি দিনদুপুরে টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে করেছিল, তাকে পদোন্নতি দিয়েছেন দিনবদলের সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন। তিনি যেদিন তার প্রিয় পুলিশের সাফাই গাইছিলেন, তার আগের দিনেই আদালত চত্বরে এক বিচারপ্রার্থী তরুণী পুলিশের শ্লীলতাহানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আরও অর্ধডজন নারী বর্তমান মন্ত্রিসভার শোভাবর্ধন করলেও তাদের কাছ থেকে ধর্ষকামী পুলিশের ন্যক্কারজনক আচরণের কোনো নিন্দা এ যাবত জাতির শোনার সৌভাগ্য হয়নি। গত শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সঙ্গে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও দুটি তাকলাগানো মন্তব্য করেছেন। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের সাড়ে তিন মাস পর তিনি দাবি করছেন, সাংবাদিক দম্পতি হত্যাকারীদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের কথা তিনি বলেননি। তিনি শুধু পুলিশকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর যুক্তি শুনে সেই ‘তৈলাধার পাত্র নাকি পাত্রাধার তৈল’ বিতর্কের কথা মনে পড়ে গেল। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের নির্দেশ প্রতিপালিত না হওয়ার অপরাধে পুলিশের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, সে বিষয়ে অবশ্য সাহারা খাতুন মুখ খোলেননি। একই অনুষ্ঠানে চমত্কৃত হওয়ার মতো তার দ্বিতীয় বক্তব্য ছিল, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুও সাংবাদিকদের পুলিশের কাছ থেকে দূরে থাকার কথা বলেননি। মিডিয়াই নাকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই মহা শক্তিধরের কথা বিকৃত করে ছেপেছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারের পর্বতসম ব্যর্থতা ঢাকতে মিডিয়াকে দোষারোপ করা প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রীদের রীতিমত মুদ্রাদোষে পরিণত হয়েছে। মজার ব্যাপার হলো, আওয়ামী-বিএনপি- সুশীল-বাম — সবপন্থী পত্রিকাতেই সাহারা খাতুন এবং শামসুল হক টুকুর বক্তব্য অভিন্নভাবে ছাপা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি সত্য হলে মেনে নিতে হবে বাংলাদেশের তাবত গণমাধ্যম একসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর পেছনে লেগেছে। সেক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক রীতি- নীতি অনুযায়ী উভয়েরই এবার পদত্যাগ অথবা পদচ্যুতির সময় এসেছে। পদত্যাগের সংস্কৃতি আমাদের দেশে তেমন একটা নেই। বিশেষ করে, কালো বিড়াল খ্যাত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সত্ত্বেও তিনি উজিরে খামাখার চেয়ারে বসে কিছুকাল নিশ্চুপ থেকে এখন আবার যেভাবে প্রায় প্রতিদিন টেলিভিশনে এসে জাতিকে জ্ঞান দিচ্ছেন, তাতে ভবিষ্যতে জনগণ ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বিদায় না করা পর্যন্ত মহাজোটের কেউ আর মন্ত্রিত্বের চেয়ার ছাড়বেন বলে মনে হচ্ছে না। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষেও যেহেতু বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্যদের মতো এতগুলো মেরুদণ্ডহীন চাটুকার একসঙ্গে খুঁজে পাওয়া আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যেও কঠিন হবে, কাজেই পদচ্যুতিরও প্রশ্ন ওঠে না। অতএব পুলিশ আগের চেয়ে অনেক ভালো— স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সার্টিফিকেটের পর বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের জন্য ভবিষ্যতে আরও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি যে অপেক্ষমাণ, সে আশঙ্কা ঘনীভূত হচ্ছে। বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী সম্পর্কে অন্য ধরনের একটি তথ্য দিয়ে আজকের মতো মন্তব্য প্রতিবেদন শেষ করব। বাংলাদেশ পুলিশের PRP (Police Reform Programme) নামে একটি প্রকল্প রয়েছে। প্রকল্পটি ইউএনডিপি (UNDP) এবং ডিএফআইডি (DFID)’র যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ইউএনডিপি প্রণীত প্রকল্পটির একটি সারসংক্ষেপ (Summary) পড়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। সেই নথিতে Outcome এবং Output নামে দু’টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। Outcome-এ বলা হয়েছে, “The human rights of children, women and vulnerable groups are progressively fulfilled within the foundations of strengthened democratic governance.” অর্থাত্ শিশু, নারী এবং সমাজের দুর্বল শ্রেণীর মানবাধিকার ক্রমান্বয়ে সংরক্ষিত হবে যার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার ভিত্তিও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। আর Output অংশে বলা হয়েছে, “Strengthened capacity of the justice system to ensure democratic governance, protect human rights and human security, improve participation in governance, and access to public services among poor communities.” অর্থাত্ গণতান্ত্রিক শাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিচার ব্যবস্থার দক্ষতা বৃদ্ধি, মানবাধিকার রক্ষা এবং নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, শাসন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং রাষ্ট্রীয় সেবা প্রতিষ্ঠানে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সহজ প্রবেশাধিকার। পিআরপি প্রকল্পের প্রাক্কলিত বাজেটের পরিমাণও বিশাল। ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল, এই পাঁচ বছরে ২৯.০১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের (২৪৫ কোটি টাকা) প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, যার মধ্যে ইউএনডিপি ৮ মিলিয়ন ডলার এবং ডিএফআইডি ১৬.৩ মিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করবে। প্রকৃতপক্ষে, পুলিশ বাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায় (PRP-Phase I) শুরু হয় ২০০৫ সালে এবং বর্তমানে দ্বিতীয় পর্যায়ের (PRP-Phase II) বাস্তবায়ন চলছে। প্রকল্পের বিপুল পরিমাণ অর্থ ঋণ হিসেবে গ্রহণ করা হয়ে থাকলে সেটি পরিশোধের দায় বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের। কাজেই জনগণের অর্থ ব্যয় করে প্রশিক্ষণ দেয়ার পর যদি পুলিশ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার পরিবর্তে অধিকতর বর্বর আচরণে অভ্যস্ত হয় এবং মানবাধিকার রক্ষার পরিবর্তে প্রতিনিয়ত লঙ্ঘন করে, তাহলে রাষ্ট্রের যে কোনো নাগরিকই এই প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য। বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে এ-জাতীয় প্রশিক্ষণে যে আসলে কোনো কাজ হয় না, সেটা আমরা বিচার বিভাগের ক্ষেত্রেও দেখেছি। বিশ্বব্যাংক থেকে প্রকল্প নিয়ে বিচারপতিদের বিদেশ যাত্রার সুযোগ বেড়েছে বটে; কিন্তু একই সঙ্গে আমাদের আদালতগুলোতে সাধারণ নাগরিকের বিচার পাওয়ার সুযোগও ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। পুলিশ বাহিনীর দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রণীত পিআরপি-তেও Justice system-এর দক্ষতা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সাম্প্রতিক সময়ে নিম্ন ও উচ্চ উভয় আদালতেই দলীয়করণের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে বিচারপতিগণ আগের মতো সাহসিকতার সঙ্গে ন্যায়বিচার করতে পারছেন না। গত মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনে কোনো রাখঢাক না রেখেই মন্তব্য করা হয়েছে যে, বাংলাদেশের রাজনীতি কলুষিত, আদালতে ভিন্নমতাবলম্বীদের বিচার পাওয়ার কোনো সুযোগই নেই। আমরা হতাশার সঙ্গে লক্ষ্য করছি, আদালত ও পুলিশ উভয়ই তীব্র বেগে রসাতলের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সুতরাং বৈদেশিক অর্থায়নে গৃহীত এ-জাতীয় যাবতীয় প্রকল্পের মূল্যায়ন জরুরি ভিত্তিতে করা প্রয়োজন। শেখ হাসিনার সরকার মূলত পুলিশ এবং আদালতের ওপর ভর করেই রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্ট এরশাদ ক্ষমতাচ্যুত হলে একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের সুযোগ আমরা পেয়েছিলাম। ১৯৯৬ সালে সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে পাঁচ বছর অন্তর অন্তর মোটামুটি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জনগণের ভোট দেয়ার সেই অধিকারটুকুও কেড়ে নিয়েছে মহাজোট সরকার। এরশাদ পতনের পর দুই দশক অতিক্রান্ত হলেও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন অধরাই থেকে গেছে। একটি নির্যাতক পুলিশি রাষ্ট্র তৈরির মাধ্যমে ক্ষমতাসীনরা তাদের মসনদে টিকে থাকার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। আড়িয়ল বিল এবং বিল কপালিয়ার জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধ দেখেও তাদের সংবিত্ ফিরছে না। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, কোনো দেশেই নির্যাতনকারীরা শেষ পর্যন্ত ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। তাদের দুঃখজনক পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ক’দিন আগে গণহত্যার অভিযোগে মিসরের এক সময়ের লৌহমানব হোসনি মোবারকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। বাংলাদেশের ছোটখাটো লৌহমানবীরা সেখান থেকে চাইলে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন। বি. দ্র. : গত সপ্তাহে ওসির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে এই সোমবার মামলা দায়ের করেছেন নিম্ন আদালতের একজন আইনজীবী। বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মারপিট, জখম ও হত্যার হুমকির অভিযোগ আনা হয়েছে। ই মেইল : admahmudrahman@gmail.com

Saturday, July 5, 2014

সৃষ্টিকর্তা বলে কি কেউ আসলেই আছে?

Question_mark_(black_on_white).png সৃষ্টিকর্তা বলে কি আদৌ কেউ কি আছে এই বিশ্বব্রহ্মান্ডে? নাকি সৃষ্টিকর্তা মানুষের বানানো কোন স্বত্ত্বা? মহামতি স্টিফেন হকিং তার একটি বইতে লিখেছেন,সৃষ্টিকর্তাহীন এই পৃথিবী।পৃথিবীতে কোন সৃষ্টিকর্তা থাকতে পারেনা। -হকিং.jpg আসলে স্টিফেন হকিং যে প্রমাণগুচ্ছ পেশ করছে তা ঠাকুরমার ঝুলিকে ছাড়িয়ে গেছে তা আমাদের শফিউর রহমান ফারাবী তার এই নোটটিতে প্রমাণ করেছে।দেখুন এই নোটটিতে →বিজ্ঞান যুক্তিবাদ নাস্তিক্যতাবাদ ও ইসলাম এখন আপনি কোনটার প্রতি ঈমান আনবেন।← স্টিফেন হকিং মতে সৃষ্টিকর্তা বলে কেউ নাই। আচ্ছা তাইলে একটা প্রশ্ন প্রথমেই করা দরকার,একটা মেশিন কি একজন নিয়ন্ত্রক ছাড়া চলতে পারে? অবশ্যই না।একটি মেশিন চলতে হলে অবশ্যই একজন মানুষ চালক অথবা একটি রোবট অথবা একটি রিমোর্ট কন্ট্রোল দরকার।মোটকথা একটি মেশিন চলতে হলে একটি কন্ট্রোলারের দরকারই।কন্ট্রোলার না থাকলে মেশিন কোন ভাবেই চলবেনা ১০০% পরীক্ষিত। আচ্ছা একটা সামান্য মেশিন চালাতে যদি কন্ট্রোলারের দরকার কন্ট্রোলার ছাড়া মেশিন তো চলেনা তাইলে এই বিশাল পৃথিবীটা কি কন্ট্রোলার ছাড়া কিভাবে চলতে পারে? কখনোই একজন কন্ট্রোলার ছাড়া যেমন একটি কম্পিউটার,মেশিন অথবা অন্যান্য মেশিনারীজ চলতে পারেনা তেমনি একজন সৃষ্টিকর্তা ছাড়া এই পৃথিবী চলতে পারেনা। Creator of the universe can not go without.Such a machine can not be turned on without the driver.Except as obsolete as a machine operator can run the universe without a Creator. এখন স্টিফেন হকিংয়ের কথায় যেই নাস্তিকগুলা যে লাফায় তারা কিন্তু অন্ধবিশ্বাসী।অথচ এই নাস্তিকরা দাবী করে তারা মুক্তচিন্তার।তারা আমাদের অন্ধ বলে,তারা বলে আমরা ধর্মে অন্ধ হয়ে আছি অথচ ঐ নাস্তিক গুলোও কিন্তু স্টিফেন হকিংয়ে অন্ধ হয়ে আছে। স্টিফেন হকিং এর তত্ত্ব মতে ,এই পৃথিবীর কোন সৃষ্টিকর্তা নেই,পৃথিবী এমনিই এমনিই সৃষ্ট,মৃত্যুর পরে পরকাল বলতে কিছু নাই! আমি আগেই বলেছি Creator of the universe can not go without. Such a machine can not be turned on without the driver. Except as obsolete as a machine operator can run the universe without a Creator. মেশিন যেমন তার চালক ছাড়া অচল তেমনি সৃষ্টিকর্তা ছাড়াও পৃথিবী অচল। এখন আমি যদি বলি মহামতি স্টিফেন হকিংয়ের সকল আবিষ্কার ভূয়া তাইলে আপনারা আমাকে বলবেন তুমি একটা পাগল।অথচ আপনি বিশ্লেষন করে দেখুন মহামতি স্টিফেন হকিংয়ের ২-৩টা আবিষ্কারই কাল্পনিক। •সৃষ্টিকর্তাহীন পৃথিবী। •এলিয়েন তত্ত্ব। •উল্কপিন্ড থেকে পৃথিবীর প্রাণ সঞ্চার। মহামতি স্টিফেন হকিং কিন্তু রসায়ন নিয়া ঘাটাঘাটি করে ,তিনি রসায়নবীদ হয়ে কেমনে সৃষ্টিকর্তা নিয়ে ঘাটাঘাটি করে এইটা কিন্তু ভাববার বিষয়। মহামতি হকিং বলেছেন,এলিয়েন আছে,তারা পৃথিবীতে আসে এবং মানুষ তাদের দেখেও ফেলে,কোন কোন এলিয়েন মানুষকে খুন ও করে ফেলে।মাহামতি স্টিফেন হকিং তার এই তত্ত্বের কোন প্রমাণ নাই।পৃথিবীর ৮০%মানুষই বিশ্বাস করেননা পৃথিবীতে এলিয়েন নাই। পৃথিবীতে যো কোন এলিয়েন নাই আমি আমার দুটো সিরিজে প্রমাণ করব। আমি অতিশীঘ্রই এই সিরিজ দুটো প্রকাশ করব। আপনি এ বিষয়ে আমার দুটো Text file পড়তে পারেন।Text file গুলো পড়তে পারবেন Bangla ebook ক্যাটাগরিতে "এলিয়েন কি সত্যিই আছে?"এই শিরোনামে পাবেন। স্টিফেন হকিং য়ের সৃষ্টিকর্তা নেই আমি এই তত্ত্ব বিশ্বাস করার মত নও।বিজ্ঞানী নিউটনের অনেক আবিষ্কার এবং তত্ত্ব আছে যা বর্তমানে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। একদিন সময় আসবে স্টিফেন হকিংয়ের আবিষ্কার ও তত্ত্ব ও ভুল প্রামাণিত হবে। তখনই মানুষ সঠিক ভাবে বুঝবে আসলে এই বিশ্বব্রহ্মান্ডে সৃষ্টি বলে কেউ একজন আছেন আর তিনি হলেন আল্লাহ্। যা আমরা এখন বলে যাচ্ছি এবং লিখে যাচ্ছি তা হাজার বছর পর হয়ত বিজ্ঞানীরাও বলবে, Creator of the universe can not go without. Such a machine can not be turned on without the driver. Except as obsolete as a machine operator can run the universe without a Creator.