Pages

Wednesday, May 28, 2014

স্মরনে কবি নজরুল

kazi-nazrul.gif স জ ল আ হ মে দ স্মরনে কবি নজরুল পারিবারিক সীমাহীন দুঃখ দুর্দশার মধ্যেও যিনি আজীবন বাংলা কাব্য ও সাহিত্য চর্চায় কাব্য ও সাহিত্যে চর্চায় ব্রতী ছিলেন,যিনি ছিলেন বিস্ময়কর প্রতিভার অধিকারী,যিনি বাংলা কাব্য ও সাহিত্যে প্রচণ্ড বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন,যিনি দেশের স্বাধীনতা মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্যে জালেম শাসক গোষ্ঠীর অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলমকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে কারাগারে বন্দী জীবন কাটিয়েছিলেন।যার কাব্য ও সাহিত্যে ইসলামী ও ঐতিহ্য বলিষ্ঠ ব্যঞ্জনায় মূর্ত হয়ে উঠেছে,যার কবিতায় ,হামদ ,নাত,গজল ও ইসলামী গান প্রায় প্রতিটি বাঙ্গালী মুসলিমের হৃদয়কে করেছে জাগরিত,যিনি ছিলেন একধারে শ্রমিক ,সৈনিক,কবি ,সাহিত্যিক,অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী এবং একজন খাঁটি দেশ প্রেমিক তাঁর নাম কাজী নজরুল ইসলাম। (জন্মঃ-১৩০৬সালের১১ই জৈষ্ঠ মোতাবেক ১৮৯৯সালের ২৫মে বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে।কবি নজরুলের জীবনি সম্বন্ধে না জানে এমন কাউকে দেখিনা তাই তার জীবনি সম্বন্ধে লিখা প্রয়োজন মনে করিনা) বাল্যকাল কাঁটে কবির সীমাহীন দুঃখ কষ্টে! কবি নজরুল পারেননি উচ্চশিক্ষিত ১১১৯সালে কবির একনিষ্ঠ সাহিত্য রচনা শুরু হয়। ১৯২১সালে মাত্র ২২বছর বয়সে তিনি রচনা করেন তার বিখ্যাত অমর কবিতা 'বিদ্রোহী'যা বাংলা সাহিত্যে তাঁকে বিদ্রোহী কবি হিসেবে অমর করে রেখেছে। কবি বল বীর বল চির উন্নত মম শির শির নেহারি নত শির ওই শিখর হিমাদ্রির। ১৭৯৭সালে লর্ড কর্ণওয়ালিশের প্রবর্তিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসক গোষ্ঠী এ দেশের বিশেষ করে মুসলমান কৃষকদের ক্রমান্বয়ে নিঃস্ব করে ফেলেছিল।মুসলমান কৃষকরা তাঁদের জায়গা জমি ও বাড়ি ঘর সব হারিয়ে প্রায় পথে বসেছিল।কবি নজরুল ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকচক্রের বিরুদ্ধে এদেশের কৃষক সমাজকে বিদ্রোহ করার আহবান জানান। তিনি সর্বহারা কাব্যগন্থে 'কৃষকের গান'নামক কবিতায় লিখেছেন।বর্তমানে সেটা বাংলার রণসঙ্গীতঃ চল্ চল্ চল্ উর্ধ্ব গগণে বাজে মাদল, নিম্নে উতলা ধরণী-তল, অরুণ পাতে তরুণ দল চল্- রে চল্-রে চল। চল্ চল্ চল্।। ইসলামি আদর্শ এবং মুসলিম ঐতিহ্যের রূপায়নে নজরুলের অবদান অবিস্মরণী তিনি খেয়াপারাপারের তরণী কবিতায় লিখেছেন:- আবু বকর,উসমান,উমর আলী হায়দার, দাড়ী যে এ তরণীর,নাই ওরে নাই ডর। কান্ডারী এ তরীর পাকা মাঝি মাল্লা, দাড়ী মুখে সারী গান-লা শরীক আল্লাহ। কারবালার মর্মান্তিক বিয়োগান্ত ঘটনা কবি নজরুল কি সুন্দর ভাবে তাঁর কাব্যে ফুটিয়ে তুলেছেন- নীল সিয়া আসমান লালে লাল দুনিয়া। আম্মা!লাল তেরি খুনকিয়া খনিয়া কাঁদোকোন্ ক্রন্দসী কারবালা ফোরাতে সে কাঁদনে আসু আনে সীমারের ছোড়াতে। ইসলামী আদর্শ ও মুসলিম জাতির স্বরুপ ব্যাখা করতে গিয়ে তিনি লিখেছেন- ধর্মের পথে শহীদ যাহারা,আমরা সেই সে জাতী। সাম্য মৈত্রী এনেছি আমরা বিশ্বে করেছি জ্ঞাতি আমরা সেই সে জাতী। কবির আল্লাহর প্রতি ছিল অগাধ ভক্তি ও বিশ্বাস তাইতো তার শুকরিয়া জ্ঞাপন করে তিনি লিখেছেন- এই সুন্দর ফুল সুন্দর ফল মিঠা নদীর পানি খোদা তোমার মেহের বাণী।। এই শস্য শ্যামল ফসল ভরা মাটির ডালি খানি খোদা তোমার মেহের বাণী।। তুমি কতই দিলে মানিক রতন ভাই বেরাদার পুত্র স্বজন ক্ষুধা পেলে অন্ন জোগাও মানি না মানি খোদা তোমার মেহের বাণী। তিনি ইসলামের মৌলিক ইবাদত ও বিধানকেও বাংলা কাব্যে যথাযথভাবে প্রয়োগ করেছেন। তিনি লিখেছেন- মসজিদে ঐ শোন রে আযান,চল্ নামাযে চল্, দুঃখে পাবি সান্ত্বনা তুই বক্ষে পাবি বল। ওরে চল নামাযে চল্। ........................... ........................... তুই হাজার কাজের অছিলাতে নামায করিস কাজা, খাজনা তারে দিলি না,যে দিন দুনিয়ার রাজা। তারে পাঁচ বার তুই করবি মনে তাতেও এত ছল ওরে চল্ নামাযে চল্। ১৯৪২সালে কবি এক দূরহ রোগে আক্রান্ত হয়ে বাকশক্তি হারান।১৯৫৩সালে চিকিত্সার জন্যে কবিকে লন্ডন পাঠানো হয় কিন্তু সেখানেও কবির রোগমুক্ত করা সম্ভব হয়নি।তারপর ১৯৭২সালে তাঁকে বিদেশ থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানীতে আনা হয় এবং ঢাকার পিজি হাসপাতালে ভর্তি করাহয়।দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ১৩৩৮বাংলা সালের১৩ই ভাদ্র ১৯৭৬ইং সালের ২৯শে আগষ্ট এ বিখ্যাত মনীষী পিজি হাসপাতালে মৃত্যু বরন করেন।মৃত্যুর আগে তিনি অছিয়ত করে গিয়েছিলেন, মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই। যেন গোরে থেকেও মুয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই।। .................. আমার গোরের পাশ দিয়ে ভাই নামাযীরা যাবে, পবিত্র সেই পায়ের ধ্বনি এবান্দা শুনতে পাবে। গোর আযাব থেকে এ গুণাহ্গার পাইবে রেহাই।। তার এই অছিয়ত অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন উত্তর পার্শ্বে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কবিকে সমাহিত করা হয়। আজ কবি পৃথিবীতে নেই;কিন্তু কাব্যে কবি অমর হয়ে থাকবেন প্রতিটি শিক্ষিত বাঙ্গালী হৃদয়ে। >ব্লগ

Sunday, May 18, 2014

সুলতান মাহমুদ সোমানাথ মনদির ভাঙেনি

asam5barighor.jpg সুলতান মাহমুদ এবং সোমনাথ মন্দির নিয়ে হিন্দুদের অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব আপনি যখনই বাবরী মসজিদ ধ্বংস নিয়ে কোন কথা বলতে যাবেন ঠিক তখনই হিন্দুরা বলা শুরু করে যে সুলতান মাহমুদ তো সোমনাথ মন্দির ধ্বংস করেছিল। তখন আমি লক্ষ্য করেছি যে অনেক মুসলমানই তখন চুপ হয়ে যায়। কিন্তু সুলতান মাহমুদ ঠিক কি কারনে গুজরাটের এই সোমনাথ মন্দির ধ্বংস বা সোমনাথ মন্দিরে অভিযান চালিয়েছিলেন তা খুব কম মুসলমানই জানে। আচ্ছা সুলতান মাহমুদ মোট ১৭ বার ভারত আক্রমন করেছিলেন। এই ১৭ বার সুলতান মাহমুদ খালি সোমনাথ মন্দির ছাড়া আর কোন মন্দিরেই উনার অভিযান চালান নি। সুলতান মাহমুদ যদি সত্যিই হিন্দু বিদ্বেষী হতেন তাইলে তো ভারতের সকল বড় বড় মন্দিরেই অভিযান চালাতেন। তাইলে ঠিক কি কারনে সুলতান মাহমুদের এই সোমনাথ মন্দিরের অভিযান ? সুলতান মাহমুদের জীবনীর উপর লেখা এনায়েত উল্লাহ আল তামাসের লিখিত বিখ্যাত ইতিহাসিক বই “সুলতান মাহমুদ গজনবীর ভারত অভিযান” থেকে আমরা জানতে পারি যে তৎকালিন সোমনাথ মন্দিরের পুরাহিতরা একজন মুসলিম তরুনীকে ঐ মন্দিরের কথিত ভগবানের অনুগ্রহ পাওয়ার আশায় ভগবানের সামনে ধর্ষণ ও বলি দেওয়ার চেষ্টা করলে মুসলিম তরুণীটি তার সম্ভ্রম রক্ষার্থে সোমনাথ মন্দিরের কুপে আত্মহত্যা করে। এই খবরটি জানতে পেরে সুলতান মাহমুদ গজনী থেকে শত শত মাইল পথ পাড়ি দিয়ে এসে সোমনাথ মন্দির আক্রমন করে এবং তা সম্পূর্ণ রুপে ধবংস করেন, এবং এই সোমনাথ মন্দিরের মূর্তির কিছু খণ্ডাংশ তৎকালিন দামেস্কের খলীফাকে উপহার হিসাবে প্রেরন করেন। এর থেকে বুঝা যায় যে সুলতান মাহমুদ সুদীর্ঘ শত শত মাইল পথ পাড়ি দিয়ে সোমনাথ মন্দির আক্রমণ করেছেন না কোন স্বর্ণ অলংকারের লোভে না কোন মসজিদ প্রতিষ্ঠার লোভে না কোন সাম্রাজ্য দখলের লোভে। সোমনাথ মন্দিরের স্বর্ণ অলংকার গনিমতের মাল হিসাবে নিয়ে যাওয়া হয়। যা প্রত্যেকটি যুদ্ধে বিজিত দল বা জাতি করে থাকে। এই ২০১৩ সালেও হিন্দুরা তাদের মা কালীর সামনে ছোট শিশুদের কে বলি দেয়। তাই ১০২৫ সালে একটা মুসলিম মেয়েকে সোমনাথ মন্দিরের বিগ্রহের সামনে বলি দেয়া হিন্দুদের জন্য কোন অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। ঐতিহাসিককের আরেকটি মত আছে সুলতান মাহমুদের সোমনাথ মন্দিরের অভিযানের ব্যাপারে। আর তা হল সোমনাথ মন্দিরের মূর্তি টি সব সময় শূন্যে মাঝামাঝি ঝুলে থাকত। এটি তৌহিদে বিশ্বাসী সুলতান মাহমুদের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হত । তাই সুলতান মাহমুদের সোমনাথ মন্দির আক্রমণের সময় গজনী থেকে সাথে করে প্রকৌশলী, ধাতুবিদ নিয়ে আসেন । তারা মূর্তি পরীক্ষা করে দেখেন সোমনাথ মন্দিরের মূর্তিটি লোহার তৈরি এবং সোমনাথ মন্দিরের চারিদিকের দেয়ালের পাথরে চৌম্বক লাগানো রয়েছে । তাই যখন সোমনাথ মন্দিরের দেয়ালের পাথর খুলে নেয়া হল তখনই লোহার তৈরি সোমনাথ মন্দিরের মূর্তি মাটিতে পড়ে গেল এবং প্রমাণিত হল যে, শূন্যে ঝুলে থাকার জন্য এই মূর্তির নিজস্ব কোন ক্ষমতা ছিল না। তাই রাজ্য বিস্তারের জন্য নয় সুলতান মাহমুদ সোমনাথ মন্দির আক্রমণ করেছিলেন এ মন্দিরের প্রতি তৎকালীন হিন্দুদের অন্ধ বিশ্বাস যা হিন্দুদের বিশেষ শক্তি প্রদান করত, তা নষ্ট করার জন্য। তাইলে আমরা দেখতে পেলাম সুলতান মাহমুদের সোমনাথ মন্দির অভিযানের পিছনে মোট ৩ টি কারন ঐতিহাসিকরা বলে থাকেন। প্রথমটি হল এক মুসলিম তরুনীকে ধর্ষন ও সোমনাথ মন্দিরের বিগ্রহের সামনে বলী দেয়ার কারনে সুলতান মাহমুদ গজনী থেকে গুজরাট অভিমুখে যাত্রা করেছিলেন সোমনাথ মন্দির ধ্বংস করার জন্য। দ্বিতীয় কারণটি হল সোমনাথ মন্দিরের মূর্তিটি ঠিক কি কারনে সব সময় শূন্যে মাঝামাঝি ঝুলে থাকত এই রহস্য উদ্ধঘাটন করা আর তৃতীয় কারণটি হল সেই তথাকথিত ২০০ মন স্বর্ণ উদ্ধারের লোভে। কিন্তু স্বর্ণ উদ্ধারের লোভে যদি সুলতান মাহমুদ সোমনাথ মন্দিরে অভিযান চালাতো তাইলে ভারত বর্ষের সকল মন্দিরই সুলতান মাহমুদ অভিযান চালাতেন। মূলত সেই মুসলিম তরুনীকে ধর্ষন ও সোমনাথ মন্দিরের বিগ্রহের সামনে বলী দেয়ার কারনেই সুলতান মাহমুদ সোমনাথ মন্দিরে অভিযান চালিয়েছিলেন। আল্লাহ সুবহানাতায়ালা পৌত্তলিকদের কে ধ্বংস করুক। তবে বেশীর ভাগ ঐতিহাসিকদের ধারনা সুলতান মাহমুদ সোমনাথ মন্দির ধ্বংস করেননি। সুলতান মাহমুদ শুধুমাত্র সোমনাথ মন্দিরের ২০০ মন স্বর্ন উনার নিজ দেশ গজনীতে নিয়ে গিয়েছিলেন। সুলতান মাহমুদ সোমনাথ মন্দিরের কোন বিগ্রহও ধ্বংস করেন নি, সোমনাথ মন্দিরের ভিতরে যেই সব ব্রাক্ষনরা পূজা অর্জনা করত সুলতান মাহমুদ তাদের কে হত্যাও করেননি। সুলতান মাহমুদের সোমনাথ মন্দিরের অভিযানের পর যথারীতি আবার হিন্দুরা সোমনাথ মন্দিরের ভিতরে তাদের পূজা অর্জনা শুরু করে। সুলতান মাহমুদ সোমনাথ মন্দির কে কোন মসজিদেও রূপান্তরিত করেন নি। Just সুলতান মাহমুদ সোমনাথ মন্দির থেকে ২০০ মন স্বর্ণ উদ্ধার করে নিজ দেশ গজনীতে নিয়ে গিয়েছিলেন। সুলতান মাহমুদ সোমনাথ মন্দিরের ভিতরে কখনই হিন্দুদের মূর্তি পূজা বন্ধ করেন নি। আর সুলতান মাহমুদের পরেও সোমনাথ মন্দিরে সুলতান আলউদ্দিন খলজী, গুজরাটের বিভিন্ন স্থানীয় শাসক আর বাদশাহ আওরঙ্গজেবও অভিযান চালিয়েছিলেন। মুসলমানরা যদি সোমনাথ মন্দির কে ভেঙ্গে মসজিদই তৈরী করে ফেলত তাইলে তো আর বারবার সোমনাথ মন্দির আক্রমন করার কোন দরকার ছিল না। সোমনাথ মন্দির মন্দির থাকার কারনেই মুসলমানরা এগুলি বারবার আক্রমন করত। এত মন্দির থাকতে মুসলমানরা খালি সোমনাথ মন্দির বারবার আক্রমন করত কেন ? এর কারন হচ্ছে সোমনাথ মন্দিরের ভিতরে পূজা অর্চনার বদলে দেশীয় রাজারা শলা পরামর্শ করত কিভাবে মুসলমান সুলতানদের কে পরাজিত করা যায়। আর সোমনাথ মন্দিরের ভিতরে হিন্দু রাজারা তাদের সোনা দানা লুকিয়ে রাখত। মূলত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারনেই এই সোমনাথ মন্দির কাশীনাথ মন্দির বারবার মুসলমানদের আক্রমনের শিকার হয়েছে। কিন্তু এর বিপরীতে দিল্লী থেকে শুরু করে ভারতের অন্যান্য এলাকার বড় বড় মন্দির কখনোই মুসলমানদের আক্রমনের শিকার হয় নি। কিন্তু এর বিপরীতে মালাউন হিন্দুরা আমাদের সাথে কি করল ? বাবরী মসজিদ ধ্বংস করার পর হিন্দুরা সেইখানে রাম মন্দির স্থাপন করল। আমরা মুসলমানরা বাবরী মসজিদের যেই জায়গায় নামায পড়তাম ঠিক সেই মেহরাবের উপরে মালাউন হিন্দুরা এখন তাদের রামের মূর্তি স্থাপন করেছে। ১৯৯২ সালের ১২ ডিসেম্বরের পর থেকে আজ ২১ বছর হল আমরা মুসলমানরা আর বাবরী মসজিদে এক ওয়াক্ত নামাযও পড়তে পারি নাই। বাবরী মসজিদ ধব্বংস করার সময় যেই সব মুসলমান হিন্দুদের কে বাধা দিতে এসেছিল হিন্দুরা তাদের প্রত্যেককেই হত্যা করে। এমনকি বাবরী মসজিদের আশপাশে মুসলিম অধ্যুষিত গ্রাম গুলিতে মালাউন হিন্দুরা যেয়ে আমাদের মুসলিম বোনদের কে ধর্ষন করে। এর বিপরীতে আমরা সুলতান মাহমুদের সোমনাথ মন্দিরের অভিযানে কি দেখতে পাই ? সুলতান মাহমুদ সোমনাথ মন্দিরের অভিযানের পর সোমনাথ মন্দিরের অবস্থিত হিন্দুদের কোন বিগ্রহও ধ্বংস করেননি, সোমনাথ মন্দিরের পূজা অর্জনায় লিপ্ত কোন ব্রাক্ষন কেও হত্যা করেন নি, এবং সর্বোপরী সুলতান মাহমুদ সোমনাথ মন্দির কে মন্দির হিসাবেই রেখেছিলেন উনি সোমনাথ মন্দির কে কখনই মসজিদে রূপান্তরিত করেন নি। তাইলে মালাউন হিন্দুদের বাবরী মসজিদ ধ্বংস করার সাথে অবশ্যই সুলতান মাহমুদের সোমনাথ মন্দির অভিযান কে এক করা ঠিক নয়। সুলতান মাহমুদ একটানা ১৫ বার অভিযান করে ভারতের বহু দেশীয় রাজাকে পরাজিত করেন। সেই সময় সুলতান মাহমুদ কে সবাই একটি অপ্রতিরোধ্য শক্তি ভাবত। সোমনাথ মন্দিরের বিগ্রহের খ্যাতি ছিল সমগ্র ভারতবর্ষ জুড়ে। সোমনাথ মন্দিরের ব্রাক্ষণ সেবায়করা বলা শুরু করে যে সোমনাথ মন্দিরের মাঝে শূন্যে ঝুলন্ত বিগ্রহের অসীম অলৌকিক ক্ষমতার বলে সুলতান মাহমুদের পক্ষে কখনই সোমনাথ মন্দির জয় করা সম্ভব হবে না। মূলত সোমনাথ মন্দিরের ব্রাক্ষণ পুরাহিতরাই সুলতান মাহমুদ কে সোমনাথ মন্দির আক্রমণ করার চ্যালেঞ্জ দিয়েছিল। সোমনাথ মন্দির সেই সময় হিন্দুদের রাজনৈতিক তীর্থক্ষেত্র ছিল। সোমনাথ মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ এবং যাবতীয় ব্যয় নির্বাহের জন্য ভারতীয় হিন্দু রাজন্যবর্গ দশ হাজার গ্রাম মন্দিরের সম্পত্তিরূপে দান করেন। সোমনাথ মন্দিরের পূজা-পার্বন ও অন্যান্য অনুষ্ঠানাদি পালনের জন্য এক সহস্র ব্রাহ্মণ নিয়োজিত ছিল। সর্বদা সোমনাথ মন্দিরের দেবতার সন্তুষ্টির জন্য পাঁচশ’ নর্তকী এবং দু’শ’ গায়িকা নৃত্য-গীত করতো। ভারতবর্ষের হিন্দু রাজাগণ তাদের কুমারী কন্যাদের এ মন্দিরের দেবতার সেবার জন্য উৎসর্গ করে কৃতার্থ হতেন। সে সময় হিন্দুরা তাদের ধন সম্পদ সোমনাথ মন্দিরে জমা রাখতেন অর্থাৎ সোমনাথ মন্দিরের ভিতরে অসংখ্য ধন- সম্পদ সঞ্চিত আছে, এ তথ্য জানতে পেরেই সুলতান মাহমুদ সোমনাথ মন্দির জয়ে প্রলুব্ধ হন। হিন্দুরা অভিযোগ করে সুলতান মাহমুদ সোমনাথ মন্দির ধ্বংস করে সেইখানে একটা মসজিদ তৈরি করে ছিলেন। সোমনাথ মন্দিরের পাশে যে মসজিদটা ছিল এটা সুলতান মাহমুদের সোমনাথ মন্দির অভিযানের ২০০ বছর আগেই তৈরি হয়েছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্মের বহু আগে থেকেই আরব বনিকরা গুজরাটে ব্যবসা বাণিজ্য করতে আসত। সেই ইসলামের শুরু থেকেই গুজরাটের মুসলমানদের আগমন শুরু হয়। গুজারটের স্থানীয় হিন্দু শাসকরাই মুসলমানদের কে সোমনাথ মন্দিরের অনতিদূরে একটি মসজিদ তৈরি করার অনুমতি দেয়। এটা আমার কথা না একটা হিন্দু ধর্ম ভিত্তিক ওয়েবসাইটেই তা বলা আছে। এই লিংকে যান সুলতান মাহমুদ খাইবার গিরিপথ অতিক্রম করে ভারতে আসেন। গজনী থেকে ৪২ দিনে হাজার মাইল পথ হেঁটে ১০২৫ সালের ৬ জানুয়ারী সুলতান মাহমুদ পৌঁছলেন সোমনাথের মন্দিরের অনতিদূরে। সুলতান মাহমুদ যদি পৌত্তলিকদের বিরোধী হতেন তাহলে গজনী থেকে গুজরাট আসার পথে তো রাস্তায় অনেক মন্দিরই পড়েছিল, সেগুলো নিশ্চয়ই সুলতান মাহমুদ আস্ত রাখতেন না। সুলতান মাহমুদের সেনাবাহিনীর মাঝে ১২ জন ছিল হিন্দু সেনাধ্যক্ষ। এর মধ্যে দুইজন সেনাধ্যক্ষ ছিল ব্রাক্ষণ। আর বাকীরা ছিল ক্ষত্রিয়। সুলতান মাহমুদের সোমনাথ মন্দির অভিযানে যারা অংশ নিয়েছিল তাদের অর্ধেকই ছিল হিন্দু। সোমনাথ মন্দির থেকে যে ২০০ মন স্বর্ণ উদ্ধার হয়েছিল সেই সব স্বর্ণ সুলতান মাহমুদ উনার সেনাবাহিনীর মাঝে ভাগ করে দেন। যেই সব হিন্দু সেনাপতি ও হিন্দু সৈনিকরাও সোমনাথ মন্দিরের অভিযানে অংশ নিয়েছিল তারাও সেই ২০০ মন স্বর্ণের ভাগ পেয়েছিল। ঐতিহাসিকরা বলে থাকেন যে সোমনাথ মন্দিরের অভিযানে অংশ নেওয়া প্রত্যেকটা সৈনিক কে সেই দিন সুলতান মাহমুদ ৫০০০০ করে দিনার দিয়েছিলেন। সোমনাথ মন্দিরের অভিযানে হিন্দু সৈনিকরাও অংশ নেবে হবে আর দোষ হবে খালি সুলতান মাহমুদের ! ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজী বাংলায় আসছেন ১২০৫-০৬ সালের দিকে। এটা আমার কথা না উইকিপিডিয়াতেই তা বলা আছে আর নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস হয়েছে ১১৯৩ সালে। তাইলে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজী কিভাবে এই নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস করেন ? নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় যখন ধ্বংস হয় সেই সময় অর্থ্যাৎ ১১৯৩ সালের দিকে এই বাংলার রাজা ছিলেন রাজা লক্ষন সেন। রাজা লক্ষন সেন ছিলেন একজন কট্টর বৌদ্ধ বিদ্বেষী। হাজার হাজার বৌদ্ধ ভিক্ষুকে উনি হত্যা করেছেন। বৌদ্ধদের গর্ব এই নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় কে এই রাজা লক্ষন সেনই ধ্বংস করেছেন। কিন্তু শুধুমাত্র একজন হিন্দু হওয়ার কারনে উপমহাদেশের এই সুশীল সমাজ এই রাজা লক্ষন সেনের কোন সমালোচনা করে না। যদি শুধুমাত্র ধর্মীয় বিদ্বেষের কারনেই মুসলমানরা সোমনাথ মন্দির আর কাশীনাথ মন্দির আক্রমণ করত তাইলে তো মুসলমানদের ৮০০ বছরের ইতিহাসে আর একটা হিন্দুও বেচে থাকত না। আর মুসলমান সুলতানরা যে অনেক বড় বড় মন্দিরে অর্থ সাহায্য দিত তা উইকিপিডিয়ার বিভিন্ন মন্দিরের লিংকেই বলা আছে। ৪৭ এর পর গুজরাট কাশ্মীরের মুসলমানদের উপর হিন্দুরা যেইরকম গনহত্যা চালিয়েছিল ভারতের মুসলমানদের ৮০০ বছরের শাসনামলে হিন্দুদের উপর মুসলমানরা কখনই কোন গনহত্যা তো দুরের কথা যুদ্ধক্ষেত্র ছাড়া মুসলমানরা একটা হিন্দুকেও হত্যা করেনি। শত শত প্রাচীন মন্দির ভারতের মুসলিম শাসনামলে অক্ষুণ্ণ ছিল। সুলতান মাহমুদের ভারত বিজয়ের পর পরাজিত ভারতের রাজাগণ কর্তৃক তার সাথে সম্পাদিত চুক্তি বারবার ভঙ্গ করার কারণে, তাকে বার বার ভারত অভিযান চালাতে হয়েছিল । আর মধ্যযুগে এ ধরনের রাজ্য বিস্তার বল্লালসেন , লক্ষণ সেন , গোপাল , ধর্মপাল সবাই করেছিলেন । বলা যায় , এগুলো ছিল সে সময়ের রীতি। সুলতান মাহমুদ কে হিন্দুরা সব সময় হিন্দু বিদ্বেষী বলে প্রমান করতে চায়। সুলতান মাহমুদ মোট ১৭ বার ভারত অভিযানের পর উনার প্রত্যেক অভিযানেই ভারতের বিভিন্ন দেশীয় রাজা যেমন জয়পাল, আনন্দপাল, সুখপাল কে যুদ্ধে পরাজিত করেন। সেই সময়ের মধ্যযুগীয় নীতি অনুসারে সুলতান মাহমুদ চাইলেই পারতেন যে পরাজিত সকল দেশীয় হিন্দু রাজাকে হত্যা করতে। কিন্তু সুলতান মাহমুদ উনার সাথে যুদ্ধে পরাজিত একজন দেশীয় হিন্দু রাজাকেও হত্যা করেননি। সুলতান মাহমুদ যে কোন হিন্দু বিদ্বেষী ছিলেন না এর সবচেয়ে বড় প্রমান হল কনৌজের রাজা রাজ্যপাল সুলতান মাহমুদের আনুগত্য স্বীকার করলে অন্যান্য পরাক্রমশালী হিন্দু রাজপুত রাজাগন অপমানিত বোধ করেন। কালিঞ্জরের চান্দেলা রাজা গোন্তা গোয়ালিয়রের রাজপুত রাজার সাথে জোটবদ্ধ হয়ে সুলতান মাহমুদের মিত্র কনৌজের রাজা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে এবং সকল রাজপুত রাজা মিলে কনৌজের রাজা রাজ্যপাল কে হত্যা করে। এরপর সুলতান মাহমুদ উনার বন্ধু হিন্দু রাজা রাজ্যপালের হত্যার প্রতিশোধকল্পে ১০১৯ খৃস্টাব্দে চান্দেলার রাজা গোন্তার বিরুদ্ধে সমরাভিযান পরিচালনা করেন। চান্দেলা রাজা গোন্তা সুলতান মাহমুদের বাহিনীর প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হয়ে রণক্ষেত্র থেকে পলায়ন করেন। পরবর্তীতে সুলতান মাহমুদ কনৌজের রাজা রাজ্যপালের ছেলেকে কনৌজ ও চান্দেলা উভয় রাজ্যের রাজা বানান। সুলতান মাহমুদের ভারত বর্ষের ১৩ তম অভিযান শুধুমাত্র উনার বন্ধু কনৌজের রাজা রাজ্যপালের হত্যার প্রতিশোধ নেবার জন্যই হয়েছিল। সুলতান মাহমুদ যদি সত্যিই হিন্দু বিদ্বেষী হতেন তাইলে কখনই কনৌজের রাজা রাজ্যপালের হত্যার প্রতিশোধ নিতেন না। সুলতান মাহমুদের ভারত বর্ষের এই ১৭ বার সফল অভিযানের পরেও সুলতান মাহমুদ যুদ্ধক্ষেত্র ছাড়া ভারতের কোন হিন্দু কেও হত্যা করেননি বা কোন হিন্দুকে দাস দাসী বানিয়ে গজনীতেও নিয়ে যান নি। আর সুলতান মাহমুদ চাইলেও তা করতে পারতেন না। কারন ইসলামী শরীয়তে মুসলমানরা যখন কোন দেশ জয় করে তখন খলিফা অথবা মুসলিম সুলতান সেই দেশের পরাজিত বিধর্মী নাগরিকদের কে জিম্মী ঘোষণা করেন। আর জিম্মীদের সম্মান নিরাপত্তা দেয়ার সার্বিক দায়িত্ব পরে সুলতান অথবা খলিফার উপর। জিম্মী রুপী পরাজিত বিধর্মী নাগরিকদের অভিভাবকও সুলতান অথবা খলিফা হন। আর যুদ্ধের পর কোন জিম্মীকে হত্যা করা বা দাস দাসী বানানো ইসলামী শরীয়তে হারাম। হযরত ওমর রাযিআল্লাহু আনহুর সময়ে মুসলমানরা সিরিয়া ইরাক, ইরান/ পূর্ব নাম পারস্য, তুরস্ক, সাইপ্রাস এত দেশ জয় করেছিলেন কোন দেশের নাগরিক কেই সাহাবীরা দাস দাসীতে রূপান্তরিত করেন নি। উল্টা ঐ সব দেশের আগে থেকে থাকা সব দাস দাসীদের কে সাহাবীরা মুক্ত করে দিয়েছিলেন আমরা মুলমানরা যে হিন্দুদের প্রতি কতটুকু সহনশীল ছিলাম তার একটা জ্বলজ্যান্ত উদাহরন আপনাদের কে দেই। ভারত বর্ষে আমাদের মুসলমানদের সাথে সবচেয়ে বেশী যুদ্ধ হয়েছে রাজপুত হিন্দুদের। কিন্তু রাজপুত হিন্দুরা প্রায় প্রতিযুদ্ধেই আমাদের কাছে পরাজিত হয়ে সন্ধি করত। কিন্তু এর কিছুদিন পরেই রাজপুত হিন্দুরা তাদের ক্ষত্রিয় স্বভাবের কারনে মুসলমানদের সাথে করা তাদের সন্ধি চুক্তিটি ভংগ করত। এরপর আবার মুসলমানরা যুদ্ধ করে রাজপুতদের কে পরাজিত করত। সেই সময় মধ্যযুগীয় রীতি অনুসারে এটা খুব স্বাভাবিক ছিল যে বারবার সন্ধি চুক্তি ভংগ করার কারনে পুরা রাজপুত জাতিটাকেই ধ্বংস করে দেওয়া। কিন্তু মুসলমানরা তা করে নি। আমাদের মহান মুসলমান সুলতানরা বারবার হিন্দু রাজপুত যোদ্ধাদের কে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। কিন্তু বারবার সন্ধি চুক্তি ভংগ করার কারনে মধ্যযুগীয় রীতি অনুসারে এটা খুবই স্বাভাবিক ছিল যে পুরা রাজপুত জাতিটাকেই মুসলমানদের কর্তৃক ধ্বংস করে ফেলা। রাজপুত জাতিটা কিন্তু এখনো ভারত বর্ষে বহাল তবিয়তে আছে। ভারতের মুসলমানদের উপর সন্ত্রাসবাদী হিন্দুদের ভয়াবহ নির্যাতন এবং হিন্দুদের ধর্ম বিশ্বাস রাম লক্ষন রাবন কিংবা রাম মন্দির যে ঠাকুরমার ঝুলি ছাড়া আর কিছুই না তা জানতে আপনারা আমার এই NOTE টি পড়ুন আর আমাদের ইতিহাস জানতে হবে ঐতিহাসিকদের লেখা বই থেকে। উইকিপিডিয় যে কেউ যে কোন নিবন্ধ যোগ করতে পারে ও সংযোজন বিয়োজন করতে পারে। উইকিপিডিয়ার অনেক নিবন্ধই পক্ষপাতদুষ্ট। ভারতবর্ষের মুসলমানদের ইতিহাস হিন্দু ঐতিহাসিকরাই লিখেছেন। সকল বড় বড় হিন্দু ঐতিহাসিকই মুসলমান সুলতানদের উচ্ছসিত প্রশংসা করেছেন। উইকিপিডিয়ার ইতিহাস আর ইতিহাস গ্রন্থের ইতিহাসের মাঝে অনেক পার্থক্য আছে। এমনকি ভারতের স্কুল কলেজের ইতিহাসের পাঠসূচিভুক্ত বইগুলিতেও মুসলমানদের ইতিহাস কে বিকৃত করা হয়েছে সরকারের চাপে। আমি এখন আপনাদের কে একটি বইয়ের কথা বলব যেই বইটি পড়লে আপনারা ভারতের মুসলমানদের গৌরবজনক ইতিহাস, পরবর্তীতে ইংরেজদের আগমন এবং কিভাবে তারা হিন্দু বেঈমান রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় এখানকার ক্ষমতা হাসিল করল সেই রক্তঝরা ইতিহাসগুলি। সেইসাথে এই ভারতবর্ষে আর্য জাতির আগমন, এখানকার অধিবাসীদের উপর এবং অন্যান্য নিম্নবর্ণের হিন্দুদের উপর আর্যরুপী ব্রাক্ষণ হিন্দুদের অত্যাচার এর নমুনা পরবর্তীতে মুসলমানদের আগমন এবং জাতি, বর্ণ নির্বিশেষে সবার মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে একেবারে ভারত বিভক্ত হওয়া পর্যন্ত অনেক অজানা ইতিহাস জানতে পারবেন আপনারা এই বইটি পড়ে। বইটির নাম হল গোলাম আহমদ মোর্তজার লেখা “চেপে রাখা ইতিহাস”. গোলাম আহমদ মোর্তজার লেখা “চেপে রাখা ইতিহাস” এই বইটিতে মুহাম্মদ বিন কাশিম, সুলতান মাহমুদ, মুহাম্মাদ বিন তুঘলক, বাবর, হুমায়ুন, শেরশাহ, জাহাঙ্গির, শায়েখ আহমদ ফারুক সেরহিন্দ, আওরঙ্গজেব, শায়েস্তা খান, হায়দার আলী, টিপু সুলতান, নবাব সিরাজুদ্দউলা থেকে শুরু করে শাহ ওলিউল্লাহ, সৈয়দ নিসার আলী তিতুমির, মাওলানা আলাউদ্দিন, হাজি শরিয়তউল্লাহ, মজনু শাহ এর মত কিংবদন্তীদের জীবনচরিত, সমসাময়িক ঘটনা এইখানে আলোচিত হয়েছে। বইটির ডাউনলোড লিংক হল এটা http:// www.sendspace.com/file/6mcpwz এছাড়া “চেপে রাখা ইতিহাস” এই বইটি বইয়ের লাইব্রেরীতেও কিনতে পারবেন। বিভিন্ন প্রিন্ট অনুযায়ী কমিশন সহ বইটির দাম ১৫০-২০০ টাকা। তথ্যসুত্রঃ ১. ইতিহাসের ইতিহাস, গোলাম আহমেদ মূর্তজা, মদীনা পাবলিকেশন্স, ৩৮/২ বাংলা বাজার, ঢাকা। ২. Somnath : a narrative of history, রোমিলা থাপার, পেঙ্গুইন প্রকাশনী । ইসলামী আক্বীদা সংশোধনের জন্য আরো পড়তে পারেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বহু বিবাহ প্রসঙ্গে ইসলাম বিদ্বেষীদের সমালোচনার জবাব আল্লাহ সুবহানাতায়ালার অস্তিত্ত্বের একটি বুদ্ধিবৃত্তিক প্রমান আল কোরআনের ব্যাকরণগত সৌন্দর্য্যের কিছু অসাধারন দিক বনী কুরায়জা গোত্রের সকল পুরুষ ইহুদি হত্যা করা প্রসঙ্গে একটি পর্যালোচনা ইসলামি শরীয়াহ কি কখনই দাস দাসী প্রথাকে সমর্থন করেছিল আমাদের মুসলমানদের কেন একটি কেন্দ্রীয় খিলাফত রাষ্ট্র প্রয়োজন ? হাতের কাছে রাখার মত কয়েকটি চমৎকার ইসলামী বই পুরুষ জাতির বহু বিবাহ প্রথা কে ইসলামী শরীয়াহ আসলে কতটুকু সমর্থন করে হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম ২য় পর্ব মেসওয়াক করার ফযীলত আমার উম্মতের মাঝে ৭৩ টি দল হবে এদের মাঝে মাত্র একটি দল জান্নাতে যাবে” এই হাদীস টির মূল ব্যাখ্যা টি কি ? সিজদায়ে সাহু সংক্রান্ত মাসলা- মাসায়েল সহিহ শুদ্ধ ভাবে নামায পড়ার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় মাসলা মার্ক জুকারবার্গ তো একজন নাস্তিক তাইলে তার আবিস্কৃত ফেইসবুক ব্যবহার করা কি আমাদের জন্য ঠিক হচ্ছে —— > পোষ্টটি 1417 বার পড়া হয়েছে । শেয়ারঃ ডিসেম্বর ১৮, ২০লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী

Tuesday, May 13, 2014

আসামে মুসলিম শিশু হত্যার কয়েকটি ছবি

আসামে হিন্দু বেশ্যা মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেয়া জারজ হারামীর বাচ্চা বেরো উপজাতীরা এভাবেই হত্যা করছে নিষ্পাপ মুসলিম!
Pleas stop!killing Muslims child!
চিত্রঃ-১
বিবেক কে নাড়া দিয়ে উঠে!
Stop killing muslims child!
asam2-dekarmoto-na.jpg
চিত্রঃ২
আহা!৩টি শিশু মরেই গেলো!
asam1-3ti-lash.jpg

চিত্রঃ৩
আহা!বেচারা বেরোর দ্বারা আহত হয়ে এভাবেই কাতরাচ্ছে!
asam3aha.jpg

চিত্রঃ৪
কয়েকটা শিশু ভয়ে ভয়েই নামাজ পড়ছে!
asam4-namaz.jpg

চিত্রঃ৫
মুসলমানদের বাড়িঘর পুড়িয়ে ফেলছে বেরোরা
asam6khondo-lash.jpg
চিত্রঃ৬
শিশুর খন্ড লাশ!
asam6khondo-lash.jpg
মানবতাবাদীরা কি এখনো চুপ করে ঘাপটি মেরে থাকবে?
হিন্দু মাতা রক্তপিপাষু কালীই কি এই অর্ডার করেছে ছোট্ট শিশুদের হত্যা করতে?
যদি তাই হয় তাহলে আসামের মুসলিমরাও প্রস্তুত হও জিহাদ কর এই সমস্ত নালায়েক জারজদের বিরুদ্ধে!
কচু কাঁটা কর তাদের।

Friday, May 9, 2014

জাভা বাংলা ইবুক

♦ডঃ মুহম্মদ জাফর ইকবালের বই

•••••••••••••••••
♥ব্যাংক ডাকাত

DOWNLOAD
•••••••••••••••••
♥বেজি
DOWNLOAD
•••••••••••••••••
♥একটি ভুতের গল্প
DOWNLOAD
•••••••••••••••••
♥একটি গহীন গ্রাম
DOWNLOAD
•••••••••••••••••
♥ফোবিয়ানের যাত্রি
DOWNLOAD
•••••••••••••••••
♥জল মানব
DOWNLOAD
•••••••••••••••••
♥রোবট
DOWNLOAD
•••••••••••••••••

♦সুকুমার রায় এর বই

•••••••••••••••••
♥আশ্চর্য কবিতা
DOWNLOAD
•••••••••••••••••
♥হ য ব র ল
DOWNLOAD
•••••••••••••••••
♥হুশিয়ারের ডায়েরী
DOWNLOAD
•••••••••••••••••
♥পাগলা দাসু
DOWNLOAD
•••••••••••••••••
EXTRA BOOK:-
•হিন্দুরা মালুর জাত
—BY SHAFIUR RAHMAN FARABI
Download-Zip


নীড় পাতা→»

Thursday, May 8, 2014

ধর্ষন নং-৭১

untitle.gif

ঐ তরে যা কইলাম তাই করিস,নইলে কিন্তু এক্কেরে খাসি কইরা দিমু!খাসি কিরাম করে জানস?
ইমাম সাব ঘাড় নাড়িয়ে বল্ল,জানিনা।
আছমত রাজাকার বলতে লাগল, ঐ হারামীর বাচ্চা,তোরে খাসি করমু কিরাম শুন,তোর পায়জামা খুইলা ,ব্লেড দিয়া অন্ডকোশ ফাইরা বিচি বাইর কইরা ফেলমু।
শুন বড় ছাব তোর ১৪ বচ্চর বয়সের অপরুপ যৌবন প্রাপ্ত মাইয়াডারে গোসল করবার সময় দেখছে,তোর মাইয়ার যৌবন,রুপ দেইখা ছাবের পছন্দ অইছে,বেশি না আইজকা রাইতটার জন্যি বড়ছাবের কাছে তোর মাইয়ারে পাঠাইয়াদিবি নইলে বাপমাইয়া ২ডারেই চীর জীবনেরলাই খোজা কইরা দিমু।
—ইমাম সাহেব ঠায় দাঁড়িয়ে আছে যেন একটা ঠাটা তার মাথায় পড়ল।যেই মসজীদে এই তেত্রিশ বছর ধরে ইমামতি করছে সেই মসজীদেরই এক আনকোড়া মুছল্লি তাকে আজ হুমকি দিচ্ছে তার মেয়েকে বড় ছাহেবের যৌন উপঢৌকন হিসেবে পাঠাতে!আহা কি আফসুস!
ইমাম সাহেব আল্লাহ পাক কে ডাকছেন আর উপরের দিক চেয়ে হাঁটছেন,এখন গিয়ে কিভাবে একথা তার মেয়েকে বলবে যে মিলিটারির প্রধান অফিসার তার সাথে রাত্রি যাপন করতে চায়!
ঘরের সামনে এসে ইমাম সাহেব হঠাত্‍ বসে পড়লেন।পিতাকে হঠাত্‍ বসে পড়তে দেখে ইমাম সাহেবের মেয়ে রহিমা দৌড়ে এসে পিতাকে প্রশ্ন করলেন,
আব্বা কি হইছে আপনার?
ইমাম।না কিছুনা
মেয়ে।শরীর খারাপ আব্বা?
ইমাম।না ,আছমত রাজাকারের লগে দেখা হইছিল মা।অয় কইছে!
রহিমা।কি কইছে আব্বা?
ইমাম।না কিছুনা!
রহিমা।আব্বা আপনি কনতো!(বিরক্ত মুখে)
ইমাম।মিলিটারির বড়ছাব নাকি তোরে খুব পছন্দ করছে আইজকা রাত্রে তোর তার কাছে যাইতে অইব মা!(ইমাম সাহেবের চোখে পানি।)শোন তুই আইজকা মাছায়(কাঠের তৈরী ঘরের ছাদ বিশেষ)পলায়া থাক।অরা খুঁজতে আসলে আমি বলমু রহিমা ঘরে নাই,নানা বাড়িত গেছে।
—আচ্ছা আব্বা আমি পলাইতেছি,আব্বা একটা কথা কই,আমিতো জীবনে পর্দার বাহির হইনায় ঐ পাকিস্তানি ব্যাডা আমারে দেখল ক্যামতে?
ইমাম সাহেব কিছুক্ষন ভেবে বল্ল,মন্কয় আছমত কইছে তোর কথা।যাহ মা কথা বাড়াইসনা পলা আগে পলা।
রহিমা পিতার নির্দেশ মত পালালো।
সন্ধ্যায় দেখা গেল আছমত রাজাকার আর কিছু মিলিটারি ইমাম সাহেবের বাড়ি এসেছে।আছমত ইমাম সাহেবেকে ডাক দিলেন।ইমাম সাহেব আছমত রাজাকারের গলা শুনে প্রায় দৌড় দিয়ে এলো।
ইমাম কে উদ্দেশ্য করে আছমত বল্ল,তোমার মাইয়া কই ওরে যাইতে কইলাম না?
—ওর নানা বাড়ি গ্যাছেগা ।বল্ল ঈমাম সাহেব।
আছমত প্রচন্ড রেগে ইমাম সাহেব কে বল্ল, ঐ হারামী তরে কি কইছিলাম মান্দির পুত?
ইমাম:—আমি আইসা দেখি ও বাড়িত নাই নানা বাড়িত চৈলা গেছে।
আছমত এ কথা শুনে ধপাস করে ইমাম সাহেবের বুকে লাথি মারল।
লাথিটা খেয়ে ইমাম সাহেব মাটিতে পড়ে গেল তার টুপিটা ছিটকে পড়ল প্রায় পাঁচ হাত দূরে,আর তজবিটা পড়ল মিলিটারিদের পায়ের সামনে।আছমত বন্দুকের নলটা ইমাম সাহেবের মাথায় ঠেকিয়ে চেচিয়ে বল্ল,শ্যালা মাদাচ্চোদ তুই মিথ্যা কৈতাছস কই লুকায়া রাখসস তাড়াতাড়ি ক!
ইমাম সাহেব ভয়ে ভয়ে বল্ল,অর নানা বাড়ি গ্যাছেগা কৈলাম তো।
আছমত রাজাকার মিলিটারিদের উদ্দেশ্য করে বল্ল,সাব ইয়ে সালে আচ্ছা মাদাচ্চোদ হ্যায় পাকড়াও সালেকো।
পরক্ষনে ঠাস,ঠাস করে কয়েকটি শব্দ হলো।ইমাম সাহেব আর্তনাদ করে উঠল,আল্লাহ গো!ইমাম সাহেবের মেয়ে মাছা থেকে লাফ মেরে নেমে এসে পিতার নিথর দেহের উপর লুটিয়ে পড়ে ,আব্বাগো আব্বা!আব্বা গো আব্বা !আব্বাগো আব্বা!মিলিটারির দল রহিমার মুখ চেপে ধরে অর একজন আরেকজন কে আনন্দের সহিত বলে,ইয়ে মাল আচ্ছা হ্যায়।রহিমাকে নিয়ে মিলিটারির দল ক্যাম্পে চলে যায় সাথে আছমত রাজাকার।বাড়িতে শুধু পড়ে থাকে ইমাম সাহেবের নিথর দেহ।
ক্যাম্পে পৌঁছে আছমত রাজাকার বড় ছাবের কাছে গিয়ে প্রায় ফিস ফিস শব্দে বল্ল,ছাব রহিমা আজায়ে!
বড় ছাবের মুখে আনন্দের হাসি।আছমত ও আনন্দের হাসি হেসে বলতে লাগল,ইয়ে মাল বড় আচ্ছা হ্যায় ছাব!বড় ছাব রহিমাকে তার সামনে নিয়ে আসতে বল্ল।কয়েকটা মিলিটারি রহিমাকে প্রায় টেনে হেঁচড়ে বড় ছাবের সম্মুক্ষে হাজির করল।
রহিমার সম্মুক্ষে পিছনে বড় ছাব ঘুরে ঘুরে হাঁটছে,তুমারা নাম কিয়া হ্যায়?
রহিমার মুখে কথা নেই।বড় ছাব রহিমাকে ধমক দিয়ে বল্ল,তুমারা নাম কিয়া হ্যায়?
বড় ছাব রহিমার একটি হাত ধরে টেনে টেনে তার রুমে নিয়ে যেতে চাইল।রহিমা একটা হেচকা টান মেরে তার হাতটা ছাড়িযে নিলো।আবার বড় ছাব তার হাতটা জোড়ে ধরল।রহিমা স্বজোড়ে একটা কামড় দিলো বড় ছাবের হাতে,চিত্‍কার মেরে বল্ল তোর কি মা বোন নাই ঘরে?
বড় ছাব রহিমার চুলের গোছাটা একহাতে ধরে স্বজোড়ে একটা চড় বসাল রহিমার গালে।রহিমা মাটিত বসে পড়ল,দুইটা মিলিটারি তাকে মাটিতে শুইয়ে ফেল্ল এবং কয়েকটা মিলিটারি তার কাপড় চোপড় খুলতে লাগল।রহিমা আত্মচিত্‍কার করছে আর বলছে বাবা রে মারে,কিন্তু মিলিটারিরা তাতে কর্নপাত করলেন না।
প্রায় উলঙ্গ বড় ছাব তার গায়ের উপর ঝাপিয়ে পড়ল।রহিমা শুধু চিত্‍কার করছে,তার আত্মচিত্‍কার শুধু প্রতিধ্বনিত হচ্ছে কিন্তু কেউ আসছেনা তাকে সাহায্য করতে।
তার আত্মচিত্‍কার শুনে পাশ থেকে কয়েকটি মিলিটারি শুধু দাঁত কেলিয়ে হাসছে।।রহিমা কাউকে কিছুই বলতে পারেনা।কথা বলার মতো সামান্য শক্তি তার নেই।
রহিমাকে প্রায় অর্ধমৃত,।রহিমার শক্তি ক্ষীন হয়ে এসেছে।পানির তৃষ্ঞায় তার ছাতি ফেঁটে যাচ্ছে।এ ঘরে কাউকে দেখা যাচ্ছেনা।শুধু আছমতকে দেখা গেল,আছমত লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রহিমার নগ্ন দেহের দিকে।রহিমা আছমতের কাছে পানি চাইল।আছমত পানি এনে রহিমাকে খাওয়াল।পরক্ষনে আছমত ও শকুনের মতো ঝাপিয়ে পড়ল রহিমার দেহের উপর।রহিমা বাক রোধ হয়ে গেল।এরপর আর কিছু রহিমার মনে নাই।যখন রহিমার জ্ঞান ফিরল,রহিমা লক্ষ্য করল আছমত রাজাকার মৃত অবস্থায় তার পাশে পড়ে আছে।দূরে কয়েকটা মিলিটারির লাশ।রহিমার বাংলাদেশের একটা পতাকা তার গায়ে জড়ানো।আস্ত একটা সূর্য উঁকি দিয়েছে জানালার পাশে।সারা গ্রামে জয় বাংলা প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।
রহিমা আকাশের দিক তাকিয়ে অঝোড় নয়নে বল্ল,
এতক্ষন পর ফিইরা চাইলা মাওলা?
রহিমা উঠে দাড়াতে চাইল কিন্তু সে শক্তি তার নাই।

Monday, May 5, 2014

←হুমায়ুন আহমেদ কি নাস্তিক ছিলেন?→

humaun-ahmed-120111113000.jpg প্রায় মাস পাঁচেক আগে স্যারের জীবনের শেষ লিখাটা পইড়া হাসতে হাসতে মাটিতে গড়া গড়ি খাইতাছিলাম।(পিপিলিকা নাটকটি পড়ে)।কিন্তু এক্কেবারে শেষের পৃষ্ঠায় আইসা আমি নিরব হইয়া পইড়া দুই চউক্ষু দিয়া টপ টপ কইরা কয়েক ফোঁটা পানিতে বালিশ ভিইজা গেল। আমার গিন্নি আইসা জিগায়,”কিয়ার লাই কান্দেন”? গিন্নিরে দেখাইলাম প্রকাশকের বড় বড় টাইপ করা লেখাটা,প্রকাশক লিখছে, “এই নাটকটাই স্যারের জীবনের শেষ লিখা,আমরা আর কোনদিন পাবনা স্যারের কোন নতুন লিখা,স্যার চলে গেছেন না ফেরার দেশে” আমার গিন্নির গলাটাও ভারি হইয়া গেল।আমার কষ্ট ভুলাইতে কইল,চা খাইতেন? আমি কইলাম,দেও। গিন্নি চা আনতে গেল,এর মধ্যে আমার ফোনে ফেসবুক দিয়া একটা টেক্সট আইল আমার কাছে,Tausifur Rahman Himel Update his status.(Tausifur Rahman Himel আমার চাচাত শ্যালক) আমি ফেসবুক লগইন করলাম এবং আমার শ্যালকের প্রোফাইলে গেলাম।শ্যালকের স্ট্যাটাসটা দেইখাতো আমি বোবা হইয়া গেলাম!আমার শ্যালক কি লিখছে দ্যাখেনঃ Tausifur Rahman Himel “Humayun ahmed ekjon nastik murtad,ashun tar lika pora theke biroto thaki,ebong tar lika borjon kori” উচ্চারনঃ-হুমায়ুন আহমেদ একজন নাস্তিক মুরতাদ ,আসুন তার লিখা পড়া থেকে বিরত থাকি,এবং তার লিখা বর্জন করি। কথাটা যদিও অনেক পুরানা,তবুও বাড় বাড় নাড়া দিয়া উঠে। ভাবছিলাম একবার কমেন্ট কইরা কমু,”হালার ঘরের হালা,তুমি এত বেশি বুঝ।বয়স তো মাত্র ১৩।এত বেশি বুঝ তোমার বা* কয়গছ উঠছে?” পরে আবার চিন্তা করলাম থাউক,এতবড় কথা ওরে কওয়া ঠিক হইবনা এর চাইয়া অরে একটা ব্লক মাইরা থুই।যেই ভাবা সেই কাম,শ্যালক মহাশয়রে চীর জীবনের জন্যকারাগারে ঢুকাইয়া থুইলাম(প্রিয় মানুষরে অপবাদ দিলে কয়জনের মাথা ঠিক থাকে বলেন?)। এখন কথা হইল ঐটা না,কথা হইল, অনেকেই কয় হুমায়ুন আহমেদ স্যার নাকি নাস্তিক আছিলেন।আসলে এইটা যারা কয় হেগো মাথায় জ্ঞানবুদ্ধি আছে বইলা আমি মনে করিনা।হেগো বাংলার সেরা ছাগল কইলেও ছাগলের অপমান হইয়া যায়। হুমায়ুন স্যার যে খাঁসা আস্তিক সেইটা “প্রথম আলো” প্রমাণ করছিল তার সাথে একজনের সাক্ষাত্কার তুইলা ধইরা। হুমায়ুন স্যারকে ধর্মের কথা জিগাইছিল পর তিনি কইল,”সব কিছুরই একটা ধর্ম আছে,এই যে দেখো বিজ্ঞানের ও ধর্ম আছে,তরিত্ এর ধর্ম আছে,চৌম্বকের ও ধর্ম আছে” যার জ্ঞানী তারা এতেই বুইঝা নিবে যে স্যার আস্তিক না নাস্তিক ছিলেন। তাছাড়া স্যারের লিখার মধ্যে “আল্লাহ”লিখেছে কোন সময় আল্লা লিখেন নাই।সাধারনত আমরা মুসলিমরাই অনেক সময় “আল্লাহ” কে আল্লা লেখি।হুমায়ুন স্যার কিন্তু অতি শুদ্ধ ভাবে আল্লাহ লিখতেন। হুমায়ুন আহমেদ স্যার কিন্তু রাসুল সঃ এর নাম এইভাবে লিখত”মুহম্মদ সঃ”।আর তিনি যদি নাস্তিক হইত তাইলে শুধু মোহাম্মদ লিইখা যাইতেন। তার লিখনির মইধ্যে মাঝে মাঝে হাদীস উইঠা আইত যার প্রত্যেকটাই ছিল সহীহ্ হাদীস। আচ্ছা একজন নাস্তিকের কি প্রোয়োজন লেখার মইধ্যে হাদীস দেয়ার?তাও আবার সহীহ্ হাদীস। শোনা যায় স্যার মৃত্যুর আগে তার প্রিয় কয়েকটা কুরআনের আয়াত পড়ছিলেন। আচ্ছা তিনি যদি নাস্তিক হইতেন তাইলে তিনি মৃত্যুর আগে কুরআনের আয়াত গুলা কেন পড়ছিলেন? যারা স্যারকে নাস্তিক বলেন তারা শোনেন,একজনার সম্বন্ধে আগে না জাইনা আমার শ্যালকের মত বা* পাকনামি যারা করে তারা কিন্তু অল্পেই ধরা খায়া যায়। আর অতিরিক্ত বা*পাকনামি লাইফ এবং সাস্থ্য দুইটার জইন্যই হুমকি স্বরুপ। আগে একজন সম্বন্ধে ভালো কইরা জানেন তারপর তার সম্বন্ধে বলেন আগে ভাগে নও। »পদটীকাঃ-অতিরিক্ত বা*পাকনামি লাইফের জন্যি ভয়ঙ্কর।এতে শত্রু বাড়ে।

Sunday, May 4, 2014

মাহমুদুর রহমানের কলাম

সোমবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী , ২০১৩ এর দ্বারা পোস্ট করা Harunar Rashid এই সময়ে ৮:৪৩ am কোন মন্তব্য নেই: নাস্তিকতার আবরণে ইসলামবিদ্বেষ মাহমুদুর রহমান আমাদের ছাত্রজীবনে কেউ নাস্তিক শুনলে তার দিকে কৌতূহল মিশ্রিত দৃষ্টিতে তাকাতাম। মনে হতো ভিন গ্রহের বাসিন্দা বুঝি। তখন ডিজিটাল যুগ আসেনি, পত্রিকায় লিখেও কেউ তার নাস্তিকতার সবিস্তার জানান দিতেন না। সবকিছুই ছিল লোকমুখে শোনা। মাত্র গুটিকয়েক বিখ্যাত নাস্তিক ছিলেন। মুসলমান পরিবারের সন্তানদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ড. আহমদ শরীফ এবং জগন্নাথ কলেজের প্রিন্সিপাল সাইদুর রহমানের কথাই আমাদের ছাত্রজীবনের আড্ডায় সবচেয়ে বেশি আলোচিত হতো। কিন্তু তাদের কেউই ইসলাম কেন, কোনো ধর্ম নিয়েই অযথা নিন্দা করতেন বলে শুনিনি, আজকের তরুণ নাস্তিকদের মতো অশ্লীল বাক্য ব্যবহার তো দূরের কথা। তরুণ বয়সে ধর্ম সম্পর্কে আমাদের মধ্যেও যে এক ধরনের নির্বিকার মনোভাব ছিল না, এমন দাবি করলে সত্যের অপলাপ করা হবে। লেনিন বলেছেন, ধর্ম নাকি আফিম—এসব কথা নিয়ে তুমুল তর্ক বেধে যেত। ইসলামের ইতিহাস চর্চার চেয়ে সেই বয়সে বিপ্লবী চে- গুয়েভারার রোমাঞ্চকর জীবন কাহিনী পড়তেই বরঞ্চ বেশি উত্সাহ পেতাম। তবে, যে যতই বাম ঘরানার হোক না কেন, আমাদের মহানবী (সা.) সম্পর্কে ভীতি মিশ্রিত শ্রদ্ধাপোষণ করত না, এমন কোনো সহপাঠী কিংবা পাড়াতুতো বন্ধুর অস্তিত্ব ছিল না। শাহবাগের দুর্বিনীত, ইসলাম-বিদ্বেষী, বেপরোয়া ব্লগারচক্র সরকারের প্রকাশ্য মদতে ১৭ দিনব্যাপী একটানা নাটক মঞ্চস্থ করে দৃশ্যপট থেকে নিষ্ক্রান্ত হয়েছে বটে; কিন্তু যাওয়ার আগে বাংলাদেশের বর্তমান মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মূল্যবোধ সম্পর্কে আমার আস্থায় বড়সড় ফাটল তৈরি করে দিয়ে গেছে। নাস্তিকতা বা অঃযবরংস শব্দটি গ্রিক ভাষার ধঃযবড়ং থেকে এসেছে। এর অর্থ— ঈশ্বরের অস্তিত্বহীনতা (ঘড়হ- বীরংঃবহপব ড়ত্ রিঃযড়ঁঃ এড়ফ)। ইউরোপ ও এশিয়ায় দার্শনিক আলোচনায় এই তত্ত্বের উত্পত্তিকাল যদিও খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম অথবা ষষ্ঠ শতাব্দীতে ধারণা করা হয়, কিন্তু পশ্চিমে আধুনিককালে আঠারো শতকেই এর সর্বাধিক বিস্তারলাভ ঘটেছে। সমাজবিজ্ঞানের অনেক পণ্ডিত ধারণা করেন যে প্রধানত মূর্তিপূজার বিরুদ্ধেই এথিজমের দার্শনিকতার উত্পত্তি। বাংলাদেশের নাস্তিকরা অবশ্য মূর্তিপূজার প্রতি সহানুভূতিশীল থেকে ইসলামকেই একমাত্র প্রতিপক্ষ বানিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে সর্বপ্রথম এথিজম গ্রহণ করা হলেও ফরাসি বিপ্লবের অব্যবহিত পর ১৭৯৩ সালে ঈঁষঃ ড়ভ জবধংড়হ নামে নাস্তিক্যবাদী আইন স্বল্প সময়ের জন্য জবঢ়ঁনষরপ ড়ভ ঋত্ধহপব গ্রহণ করেছিল। সে বছর ১০ নভেম্বর বিলটি গৃহীত হলেও মাত্র ছয় মাসের মধ্যে ১৭৯৪ সালের ৭ মে সেটি বাতিল করে ধর্মভিত্তিক ঈঁষঃ ড়ভ ঃযব ঝঁঢ়ত্বসব ইবরহম গ্রহণ করা হয়। আশা করি, পাঠক এথিজম এর সঙ্গে সেক্যুলারিজমকে গুলিয়ে ফেলবেন না। সেক্যুলারিজম আজকের মন্তব্য প্রতিবেদনের বিষয়-বহির্ভূত বিধায় ভবিষ্যতে অন্য কোনো লেখায় এ বিষয়ে আলোচনা করার ইচ্ছে রয়েছে। পৃথিবীতে এথিস্টদের সংখ্যা একেবারে কম নয়। ২০১২ সালে ডওঘ/এওঅ পরিচালিত সমীক্ষায় ১৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী নিজেদেরকে এথিস্টরূপে পরিচয় দিয়েছেন। আবার অন্য এক সমীক্ষায় ২.৩ শতাংশ এথিস্ট এবং ১১.৯ শতাংশ ধর্মহীন (ঘড়হ-ত্বষরমরড়ঁং) মানুষের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়েছে। এসব সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে প্রধান পশ্চিমা দেশগুলোতে এথিস্টদের সংখ্যা নিম্নরূপ : ফ্রান্স ৩২% জার্মানি ২০% গ্রেট ব্রিটেন ১৭% স্পেন ১১% ইটালি ৭% যুক্তরাষ্ট্র ৪% আমাদের দেশের অধিকাংশ জনগণ যুক্তরাষ্ট্রকে যতই বাধা-বন্ধনহীন সমাজ মনে করুক না কেন, সমীক্ষা বলছে বর্তমান বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তিটি ধর্মের ব্যাপারে যথেষ্ট রক্ষণশীল। বাংলাদেশের সমাজে নাস্তিকতা কতখানি বিস্তার লাভ করেছে, তার কোনো সমীক্ষা কোথাও পাওয়া সম্ভব বলে আমার অন্তত জানা নেই। কেউ এ ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সহায়তা করলে উপকৃত হব। তবে এদের সংখ্যা নিয়ে আমি মোটেও উদ্বেগ পোষণ করি না। কেউ যদি আল্লাহ, ঈশ্বরে কিংবা ভগবানে বিশ্বাস করতে না চায়, সেটা তার একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। শাহবাগ পিকনিক দেখার পর এদেশের তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যত্ নিয়ে আমার দুশ্চিন্তার জায়গাটা অন্যত্র তৈরি হয়েছে। সে বিষয়ে লেখার আগে আমাদের প্রজন্মের বাল্য, কৈশোর ও প্রাকযৌবনকাল নিয়ে আলোচনা করা প্রাসঙ্গিক হবে বলে মনে করছি। আগের অনেক লেখাতেই উল্লেখ করেছি যে, আমার বাল্যকাল কেটেছে পুরনো ঢাকার নানার বাড়িতে। তিনি এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চিফ অ্যাকাউন্টেন্টের চাকরি করতেন। প্রতিদিন সকালে ক্লিন শেভ্ড হয়ে অফিসে যেতেন। পোশাক- আশাকে যথেষ্ট সৌখিন ছিলেন। হৃদরোগ ধরা না পড়া পর্যন্ত ধূমপানের প্রচণ্ড আসক্তি ছিল। বলতে গেলে চেইন স্মোকারই ছিলেন। নানার বই পড়ার প্রচণ্ড নেশা ছিল। গেন্ডারিয়াতে সীমান্ত গ্রন্থাগার নামে একটি লাইব্রেরি ছিল। সদস্যরা মাসিক চাঁদার বিনিময়ে সেখান থেকে বই নিয়ে পড়তেন। আমার দায়িত্ব ছিল নানার জন্য সপ্তাহে অন্তত দুটি গল্পের বই নিয়ে যাওয়া। আমার পড়াশোনার নেশাও সীমান্ত গ্রন্থাগারে সেই বই ঘাঁটাঘাঁটি থেকেই। আমার যথেষ্ট স্মার্ট সেই নানাকে জ্ঞান হওয়া অবধি কোনোদিন নামাজ রোজা কাজা করতে দেখিনি। তিনি আরবি ভাষায় তেমন দক্ষ ছিলেন না। বরং আমার নানী কোরআনে হাফেজ ছিলেন। নানার ভুল উচ্চারণে সুরা পাঠ নিয়ে নানী প্রায়ই ঠাট্টা- তামাশা করতেন। কোরআন তেলাওয়াতে ভুল-শুদ্ধ বোঝার মতো বিদ্যা আমার ছিল না। তবে প্রতি সুবেহ্ সাদেকে আধো ঘুম, আধো জাগরণের মধ্যে শোনা নানার নামাজ পড়ার শব্দ এখনও কানে বাজে। তিনি ধার্মিক, উদার ও নীতিবান মানুষ ছিলেন। আমাদের বাসার কাছে দুটি মসজিদ ছিল। কিন্তু একটা মসজিদে নানা কখনও নামাজ পড়তে যেতেন না। কারণ, যে জমির ওপর মসজিদটি তৈরি করা হয়েছিল, তার একটি অংশ নাকি একজন হিন্দু বিধবার ছিল। সম্ভবত তার কাছ থেকে জমি নেয়ার সময় উপযুক্ত দাম দেয়া হয়নি। নানা বলতেন, ওখানে নামাজ পড়লে নাকি শুদ্ধ হবে না। ১৯৬৪ সালে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার সময় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আমার এক শিক্ষক সপরিবারে আমাদের বাড়িতে আশ্রয়ও নিয়েছিলেন। যাই হোক, নানার শাসন খুব কড়া ছিল। যে কোনো পরিস্থিতিতে সূর্যাস্তের আগে বাড়িতে ফেরার কঠোর আইন ভাঙার সাহস আমাদের কোনোদিন হয়নি। সেই ষাটের দশকের একেবারে প্রথম দিকে আমার মা এবং মামা দু’জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন। তাদের কাউকেই নানার সামনে কথা বলার খুব একটা সাহস করতে দেখিনি। সেই সময়কার শিক্ষিত সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের পরিবেশ বোঝানোর জন্যই এত কথার অবতারণা করেছি। আর একটি ঘটনার কথা বলেই মূল প্রসঙ্গে ফিরব। আমি তখন ঢাকা কলেজে এইচএসসি পড়ি। আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বড় বোনের বিয়েতে দাওয়াত খেতে গেছি। সঙ্গে অন্যান্য বন্ধুও ছিল। মা বলে দিয়েছিলেন, অবশ্যই রাত দশটার মধ্যে বাড়ি ফিরতে। কিন্তু, ফিরতে এগারোটা হয়ে গেল। অপরাধটা আমার ছিল না। আমাদের সব বন্ধুকে একসঙ্গে সবার শেষে খেতে দেয়া হয়েছিল। ঢাকা কলেজে আমার সহপাঠী, বন্ধু রফিককে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরতেই দেখতে পেলাম, মা রাগে আগুন হয়ে বারান্দায় অপেক্ষা করছেন। সিঁড়ি বেয়ে দু’ পা এগোতেই তিনি আমাকে হাতের নাগালের মধ্যে পেলেন। দেরির কারণ ব্যাখ্যা করার আর সুযোগ মিললো না। কোনো প্রশ্ন ছাড়াই আমার গালে সপাটে চড়। বন্ধুর সামনে মায়ের হাতে মার, ব্যথা যত না লাগলো তার চেয়ে বেশি অপমানে চোখে পানি চলে এলো। কিংকর্তব্যবিমূঢ় বন্ধু পেছন ফিরেই দৌড়। রাগে-দুঃখে রাতে আর ঘুম এলো না। সারারাত জেগে পরিকল্পনা করলাম, ভোরের আগেই কেমন করে বাড়ি ছেড়ে যেদিকে দু’চোখ যায় চলে যাব। এমন নিষ্ঠুর, অবিবেচক মায়ের সঙ্গে আর থাকব না। যে বন্ধুর বোনের বিয়ে খেতে গিয়ে এই বিপত্তি এবং যার সঙ্গে বাসায় ফিরেছিলাম, দুজনই পরবর্তী সময়ে যথাক্রমে বোটানি এবং কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডি করেছে। একজন দীর্ঘকাল শিক্ষকতা করে অবসর নিয়েছে। অপরজন বোধহয় এখনও বিদেশে পড়ায়। কারও সঙ্গেই দীর্ঘদিন যোগাযোগ নেই। আমারও অবশ্য বাড়ি ছেড়ে পালানো হয়নি। আল্লাহ্র অশেষ রহমতে আমার সেই কঠিন মা এখনও আমার সঙ্গেই আছেন। দীর্ঘ তিন যুগ শিক্ষকতা করে অবসর নিয়েছেন, তাও এক দশক হয়ে গেল। বয়স হয়েছে, আগের সেই তেজ আর নেই। পাকিস্তানি আমলে আমাদের বাসায় টেলিভিশন ছিল না। কিন্তু, অন্যের বাসায় তিনি কোনোদিন টেলিভিশন দেখতে যাওয়ার অনুমতি দেননি। আজকের শাহবাগ প্রজন্মকে দেখে পুরনো সব স্মৃতি ভিড় করে আসছে। শাহবাগের ছেলে-মেয়েদের কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়নি। টেলিভিশনের পর্দায় দেখে যতটুকু ধারণা পেয়েছি, তাতে মনে হয়েছে অধিকাংশই হয়তো আমার মতো মধ্যবিত্ত পরিবার থেকেই এসেছে। আমাদের যেখানে সন্ধ্যার পর বাড়ির বাইরে থাকার অনুমতি ছিল না, এরা কী করে শাহবাগ চত্বরে ছেলেমেয়ে মিলে সব একসঙ্গে রাতের পর রাত কাটায়, সেটা বুঝতে পারি না। নতুন প্রজন্মের এইসব তরুণ-তরুণীর পিতা- মাতার চিন্তা-চেতনা, মূল্যবোধ কি তাহলে আমাদের পিতা- মাতার চেয়ে আলাদা? ধর্মবিশ্বাসের বিষয়টি বিবেচনা না করলেও বাঙালি সমাজের মূল্যবোধের মানদণ্ডে এই আচরণ কি সামঞ্জস্যপূর্ণ? নাকি যুগ একেবারেই পাল্টে গেছে? এসব প্রশ্নের জবাব আমার জানা নেই। নিহত ব্লগার রাজীব যদি তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি হয়ে থাকে, তাহলে বাংলাদেশ নিয়ে খুব আশাবাদী হতে পারছি না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ, এককালের অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরী একবাক্যে তাকে ‘দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের’ প্রথম শহীদের সম্মান দিয়েছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের ভাষায়, সে নাকি জাতীয় বীর। এই যদি ডিজিটাল তরুণের পরিণতি হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের এনালগ জামানাই বোধহয় অনেক ভালো ছিল। যে ছেলে ব্লগে ইসলাম ধর্ম এবং মহানবী (সা.) সম্পর্কে এমন কুিসত বাক্য অনায়াসে লিখতে পারে, নানা প্রকার মাদকে অভ্যস্ত হয়, সংসার জীবনে অনাচার করে বেড়ায় তাকে ডিজিটাল প্রজন্ম কীভাবে নেতার আসনে বসায় সেটা আমাদের মতো প্রাচীনপন্থীরা হয়তো বুঝতে পারব না। আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে আধুনিক ছেলে-মেয়েদের স্বাধীনতার মাত্রার গল্প শুনে আতঙ্কবোধ করি। আমার এক দূর সম্পর্কের ভাগ্নে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে হলেও কষ্ট করে তার অভিভাবক পিসি এবং ল্যাপটপ দুটোই তাকে কিনে দিয়েছে। সেই ছেলে পড়াশোনার অজুহাতে ঘরের দরজা বন্ধ করলে নাকি বাবা-মায়ের দরজায় টোকা দেয়ার পর্যন্ত অনুমতি নেই। ঝঃঁফু ঃরসব শেষ হলে তবেই নাকি তিনি দরজা খোলেন। রাজীব এবং তার সমগোত্রীয়দের অপকর্ম সম্পর্কে জানার পর থেকে আমার সেই ভাগ্নেকেও আমি সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখতে শুরু করেছি। আধুনিক প্রযুক্তি আমাদের ভবিষ্যত্ প্রজন্মের জন্য সর্বনাশ ডেকে আনলো কিনা সেটা নিয়ে ইদানীং আমি উদ্বেগ বোধ করি। কয়েকদিন আগে আমার অফিসে গল্প করার সময় অগ্রজপ্রতিম জনপ্রিয় সম্পাদক শফিক রেহমান সমাজ পরিবর্তনের একটা চমত্কার ব্যাখ্যা দিলেন। তিনি বললেন, ল্যাপটপ প্রযুক্তির বয়স খুব বেশি নয়। তাই যথেষ্ট পরিণত বয়সে পৌঁছেই কেবল আমরা প্রযুক্তির সংস্পর্শে আসার সুযোগ পেয়েছি। তার আগে বাংলা- ইংরেজি ভাষায় নানা ধরনের বই পড়াটাই আমাদের জ্ঞানার্জন ও বিনোদনের প্রধান মাধ্যম ছিল। বর্তমান তরুণ প্রজন্মের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টো। তারা প্রযুক্তির সঙ্গে আগে পরিচিত হচ্ছে, তারপর পড়াশোনা। এর ফলে তাদের মননে চিরায়ত মধ্যবিত্তের মূল্যবোধের বিকাশ ঘটছে না। অনেকে হয়তো শফিক ভাইয়ের ব্যাখ্যার সঙ্গে একমত হবেন না। কিন্তু আমি সেখানে চিন্তার খোরাক পেয়েছি। লেখার শুরুতেই পশ্চিমা বিশ্বে নাস্তিকের সংখ্যা সম্পর্কে একটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি। ফ্রান্স, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যে সেই সংখ্যা যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য হলেও সে সব দেশে নাস্তিকরা খ্রিস্টধর্ম কিংবা যিশুখ্রিস্টকে নিয়ে ফেসবুকে ঠঁষমধত্ কোনো পোস্ট দিচ্ছে না। মৌলবাদী ইহুদি ও খ্রিস্টানদের একাংশের তীব্র ইসলাম বিদ্বেষের কারণে কখনও কখনও আমাদের ধর্ম এবং রসুল হজরত মোহাম্মদ (সা.)কে আক্রমণের নিশানা বানানো হলেও সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতার আলোকে স্বীকার করতে হবে যে, তার অসভ্যতা অথবা ব্যাপকতা এখনও কথিত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের পর্যায়ে পৌঁছায়নি। বাংলাদেশে নাস্তিকতার আবরণে প্রকৃতপক্ষে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধই ঘোষণা করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের জামায়াতে ইসলামীর স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকার সুযোগ নিয়ে একটি গোষ্ঠী ইসলামের সব প্রতীককে অনবরত আক্রমণ করে চলেছে। রাজাকারের ছবি আঁকতে গেলেই তাবত্ আওয়ামীপন্থী এবং সুশীল(?) মিডিয়ায় বীভত্স মুখ এঁকে মাথায় চাঁদ-তারা খচিত টুপি এবং থুতনিতে দাড়ি দেখানো হচ্ছে। অথচ ইসলামের আগমনকাল থেকেই চাঁদ-তারা আমাদের পূর্বপুরুষের পতাকা হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। দাড়ি এবং টুপি আমাদের মহানবী (সা.)’র সুন্নত। বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান জনগোষ্ঠীর এক বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের মুখেই দাড়ি এবং মাথায় টুপি রয়েছে। অনেক মুসলিম মুক্তিযোদ্ধার মুখেও দাড়ি রয়েছে। নামাজ পড়ার সময় তারাও টুপি ব্যবহার করেন। সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও একই ধরনের ভয়াবহ ইসলামবিরোধী পরিবেশ বিরাজ করছে। নাটক ও সিনেমায় অবলীলাক্রমে রাজাকার দেখাতে গিয়ে অহরহ মুসল্লিদের অপমান করা হচ্ছে। এ দেশের নাট্যকর্মীদের অধিকাংশই ভারত- প্রেমে বুঁদ হয়ে আছেন। সেই ভারতের নাটক, সোপ অপেরা ও সিনেমায় সাধারণভাবে হিন্দু ধর্মকে মহত্ভাবেই উপস্থাপন করা হচ্ছে। বাংলাদেশের নাস্তিক ভারতপ্রেমীদের মতো তাদের বিখ্যাত সব মেগাস্টাররা কখনোই ধর্মকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেন না। শাহবাগ থেকে আমার সহকর্মী ফটোসাংবাদিক মোস্তফা এক ভয়াবহ ছবি তুলে নিয়ে এসেছেন। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, টুপি মাথায় এক তরুণ রাজাকার সেজে দাঁড়িয়ে রয়েছে আর হাস্যোজ্জ্বল এক বালিকা তার মাথায় জুতো দিয়ে পেটাচ্ছে! ছবিটা দেখে অনেকক্ষণ নির্বাক হয়ে নিজের চেয়ারে বসে থাকলাম। ধর্মের প্রতি এ কেমন ঘৃণার বীজ শিশুর কোমল মনে রোপণ করা হচ্ছে? কাদের ইশারায় হচ্ছে এসব? শাহবাগের নাস্তিকদের বিষয়ে আমার অসংখ্য প্রশ্ন রয়েছে। এদের যত আক্রোশ কেবল ইসলাম ধর্মের প্রতি কেন? বিতর্কিত ব্লগগুলোতে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ইহুদি ধর্মকে আক্রমণ করে কোনো পোস্ট তো লেখা হচ্ছে না। আজান, নামাজ এদের চক্ষুশূল হলে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালানোতে এত উত্সাহ কেন? ইসলাম নিয়ে সমালোচনার ভাষাই- বা এত অশ্লীল, এত কুরুচিপূর্ণ হয় কী করে? যে সব ব্লগার এই অপকর্ম করছে, তারা কি সব মানুষরূপী শয়তান? এদের পিতা-মাতার পরিচয়ই- বা কী? সেসব পিতা-মাতা পুত্র- কন্যাদের এই বিকৃত মানসিকতা সম্পর্কে কি অবহিত? তরুণ প্রজন্মের মগজ ধোলাইয়ের কাজে কোনো বিশেষ বিদেশি রাষ্ট্র কিংবা গোয়েন্দা সংস্থার সংযোগ আছে কিনা, সেই রহস্যের উদ্ঘাটনই-বা কে করবে? ঝড়সবযিবত্ব রহ নষড়ম নামে যে ব্লগে অশ্লীল ইসলামবিরোধী প্রচারণা চলছে, তার মালিকানায় বিদেশি অস্তিত্বের সন্ধান মিলেছে। এ নিয়ে এখনই বিশদভাবে তদন্ত করা দরকার। কিন্তু, বিড়ালের গলায় ঘণ্টাটা বাঁধবে কে? কাকতালীয়ভাবে মহাজোট সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বাংলাদেশে এজাতীয় চরম ইসলাম- বিদ্বেষী গোষ্ঠীর তত্পরতা শুরু হয়েছে। ২০১২ সালে উচ্চ আদালতে এই অপকর্মের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হলে বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মো. খুরশিদ আলম সরকারের দ্বৈত বেঞ্চ অবিলম্বে ওয়েবসাইট ও ব্লগ বন্ধ এবং অপরাধীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করেন। হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়, “Pending hearing of the Rule, the respondents are hereby directed to take all necessary steps to block the above noted facebooks/websites/webpages and URL and/or any other similar internet sites and also to initiate investigation to identify the perpetrators of all such offensive websites, at once and submit a report along with compliance within 2 weeks from the date of receipt of this order.” (রুল নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া চলাকালে, বিবাদী পক্ষকে নির্দেশ দেয়া যাচ্ছে যে তারা যেন এই মুহূর্তে আপত্তিকর সকল ফেসবুক/ ওয়েবসাইট/ওয়েব এবং ইউআরএল এবং/ অথবা অন্যান্য ইন্টারনেট সাইট বন্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং এই সকল ওয়েবসাইটের হোতাদের খুঁজে বের করে। এই আদেশ প্রাপ্তির দুই সপ্তাহের মধ্যে নির্দেশ প্রতিপালন ও প্রতিবেদন পেশ করার নির্দেশ দেয়া হলো।) আদালতের নির্দেশের পর প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও সরকার চরম ইসলাম-বিদ্বেষী ও অশ্লীল ওয়েবসাইটগুলো বন্ধ এবং তাদের হোতাদের চিহ্নিত করে শাস্তিবিধান করেনি। উপরন্তু, প্রধানমন্ত্রী থেকে আরম্ভ করে মহাজোট সরকারের সব মন্ত্রী ও এমপি অপরাধীদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন। শাহবাগের এক ধর্মদ্রোহী, নষ্ট তরুণ অজানা ঘাতকের হাতে নিহত হলে তাকে শহীদের খেতাব দিয়ে প্রকৃত শহীদদের অবমাননা করতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সোল এজেন্সিধারীদের বাধেনি। স্বয়ং এটর্নি জেনারেল উচ্চ আদালতের রুলের বিষয়ে অবহিত হওয়া সত্ত্বেও তরুণ প্রজন্মের বখে যাওয়া স্বঘোষিত নেতাকে জাতীয় বীর আখ্যা দিয়েছেন। আদালত যাদেরকে খুঁজে বের করে শাস্তি প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে, তাদের নিরাপত্তার জন্য উল্টো প্রশাসন থেকে গানম্যান দেয়া হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সরকারের নীতিনির্ধারক মহল কেবল ইসলামের বিরুদ্ধেই সরাসরি অবস্থান গ্রহণ করেননি, তারা একইসঙ্গে আদালতেরও অবমাননা করেছেন। কথিত শাহবাগ গণজাগরণের প্রথম থেকেই আমার দেশ এটিকে সরকারের রিমোট কন্ট্রোলে পরিচালিত রাজনৈতিক চালরূপে বিবেচনা করছে। গত ১৭ দিনের অবস্থান কর্মসূচি চলাকালীন বিচিত্র কর্মকাণ্ডে আমাদের বিশ্লেষণের সত্যতা সর্বাংশে প্রমাণিত হয়েছে। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জবাব পাওয়া বাকি রয়েছে। কথিত গণজাগরণ প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের সঙ্গে ঢাকার কোন্ কোন্ বিদেশি রাষ্ট্রের দূতাবাস জড়িত ছিল এবং খাদ্য, পানীয়, ফুর্তির বিপুল অর্থায়ন কোথা থেকে হয়েছে সে তথ্যটি পাওয়া গেলেই সব রহস্যের অবসান ঘটবে। পবিত্র কোরআন শরীফে আল্লাহতায়ালা বলেছেন যে তিনিই সর্বোত্তম কৌশলী। অতএব, এসব প্রশ্নের জবাবও ইনশাআল্লাহ্, একদিন মিলবে। মুক্তিযুদ্ধের আবেগকে ব্যবহার করে রাজাকারবিরোধী প্রচারণার আড়ালে বাংলাদেশের অধিকাংশ মিডিয়া প্রকৃতপক্ষে ইসলামের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই ঘৃণা ছড়াচ্ছে। অথচ আজ তারাই ধর্মদ্রোহী ব্লগারদের কার্যকলাপ আমার দেশ এবং আরও কয়েকটি পত্রিকায় ছাপা হলে তাকে ঐধঃব ঈধসঢ়ধরমহ বলে গাল-মন্দ করছেন। এ দেশের অধিকাংশ মিডিয়া প্রকাশ্যে ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও হাতে- গোনা দুই-একটি মাত্র পত্রিকায় ইসলামের পক্ষে লেখালেখিও তারা সহ্য করতে পারছেন না। সুশীলত্বের আবরণে ঢাকা এই ফ্যাসিবাদী চিন্তা-চেতনা ক্রমেই দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার হয়ে উঠছে। কয়েকজন তথাকথিত পেশাদার আওয়ামীপন্থী সম্পাদক আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ এবং আমার গ্রেফতারের জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলে অনবরত দেন-দরবার চালাচ্ছেন। এদের এসব কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আমি বিশেষভাবে অবহিত আছি। এদের পেছনে যে একটি বিশেষ প্রতিবেশী রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সক্রিয় রয়েছে, সে তথ্যও আমার জানা। প্রায় আড়াই মাস পরিবার পরিজন বিচ্ছিন্ন অবস্থায় অনেক অসুবিধার মধ্যে অফিসে দিনযাপন করছি। শাহবাগ চত্বর থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজন চিহ্নিত খুনি প্রকাশ্যে আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। সরকারের মন্ত্রীরা প্রায় প্রতিদিন পত্রিকা বন্ধ এবং আমাকে দেখে নেয়ার হুঙ্কার ছাড়ছেন। সরকার সমর্থক সম্পাদকদের ষড়যন্ত্রের গল্প খানিক আগেই বলেছি। এত প্রতিকূলতাও আমাদের মনোবল ভাঙতে সক্ষম হয়নি। সম্পাদকীয় নীতি হিসেবে আমার দেশ দৃঢ়ভাবে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা এবং ইসলামের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এই পত্রিকায় কর্মরত সাংবাদিকরা ধর্মবিশ্বাসী এবং প্রত্যেকেই একে অপরের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমার দেশ পত্রিকার পাঠক ও দেশের সাধারণ জনগোষ্ঠীর অভাবনীয় ভালোবাসায় আমরা ধন্য হয়েছি। সাম্রাজ্যবাদের অনুসারী ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী এবং তাদের তল্পিবাহকদের নির্যাতন থেকে দেশপ্রেমিক ধর্মপ্রাণ জনগণের দোয়ার বরকতে আল্লাহই আমাদের রক্ষা করবেন। প্রথম পাতা মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে ৫ মামলা জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আমার দেশ সম্পাদক, সোমবার রোজা রাখুন- শাহবাগের মাধ্যমে সরকার সন্ত্রাসবাদ উসকে দিচ্ছে নাস্তিক ব্লগারদের শাস্তি দাবি ওলামা লীগের ইসলামী দলগুলোর আহ্বান, বিএনপিসহ ১৮ দলের সমর্থন : আজ সারা দেশে হরতাল রাঙামাটিতে প্রধানমন্ত্রী : মহানবীকে কটূক্তি ও পত্রিকায় এ খবর প্রচার সমান অপরাধ পাবনায় হরতালে পুলিশের গুলিতে ২ জন নিহত আমার দেশ নয়া দিগন্তে আগুনের জের : সড়ক অবরোধ করে অন্যসব পত্রিকা পুড়িয়ে এজেন্ট হকারদের প্রতিবাদ শুক্রবারের গণবিস্ফোরণ ইসলামী দলগুলোর শীর্ষনেতাসহ সারাদেশে লক্ষাধিক আসামি পুলিশের গুলিতে ৯ দিনে নিহত ১১ পুরনো ঢাকায় হরতালের সমর্থনে মিছিলে পুলিশের হামলা রায়েরবাজারে শাহবাগীদের সমাবেশ ফ্লপ : হরতাল প্রতিরোধের আহ্বান প্রতিবাদ সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা; গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে হুমকিদাতা ব্লগারদের গ্রেফতারে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম শাহবাগীদের বক্তব্য অনুযায়ী আমি রাজাকার হলে বঙ্গবন্ধু রাজাকার কমান্ডার : কাদের সিদ্দিকী সিসিটিভিতে ধারণকৃত ব্লগারদের কুকীর্তি ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়েই কনস্টেবল বাদলকে খুন! : সন্দেহের তালিকায় কয়েক ব্লগার সদস্য লগইন ইউজার আইডি : পাসওয়ার্ড : সাইন আপ পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন ? ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মাহমুদুর রহমান। প্রকাশক: আলহাজ্ব মোঃ হাসমত আলী কর্তৃক প্রকাশিত এবং আমার দেশ পাবলিকেশন্স লিঃ ৪৪৬/সি ও ৪৪৬/ডি তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে মুদ্রিত। বার্তা সম্পাদকীয় ও বাণিজ্য বিভাগঃ বিএসইসি ভবন, ১০২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫। পিএবিএক্সঃ ৮১৫৯৫৭৫ (অটোহান্টিং): বিজ্ঞাপন-৮১৫৯৫৮৪, সার্কুলেশন-৮১৫৯৫৮৩, ফ্যাক্সঃ ৮১৫৯৫৮১ ও ৮১৫৯৫৮২ (বার্তা), ৮১৫১৪৪৪ (মফস্বল)। info@amardeshonline.com Image Image Image Image Google-এ এটির সুপারিশ করুন বুধবার , ১৬ জানুয়ারী, ২০১৩ এর দ্বারা পোস্ট করা Harunar Rashid এই সময়ে ১০:৩৬ pm কোন মন্তব্য নেই: মন্তব্য প্রতিবেদন : জনগণের কাছে ন্যায়বিচার চাই মাহমুদুর রহমান আজ বুধবার, ১৬ জানুয়ারি, ইংরেজি সাল ২০১৩। আমার অফিস বন্দিত্বের এক মাস ৩ দিন চলছে। এর মধ্যে এ মাসের ৮ তারিখে হাইকোর্টে একবার আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। আমার দেশ পত্রিকার নিয়মিত পাঠক মাত্রই জানেন, সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চ সেদিন দীর্ঘ শুনানি শেষে আমার আবেদন ফিরিয়ে দিয়ে সিনিয়র কোনো বেঞ্চে যাওয়ার মৌখিক পরামর্শ দিয়েছিলেন। অবশ্য যে লিখিত আদেশ পরদিন বিচারপতিদ্বয় দিয়েছেন, সেখানে বোধগম্য কারণে ‘সিনিয়র বেঞ্চ’ এই কথাটি আর রাখেননি। বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী এবং বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন তাদের আদেশে লিখেছেন, Let it go out of list with liberty to mention the matter before any other appropriate bench (আবেদনটি তালিকার বাইরে পাঠানো হোক এই স্বাধীনতা সহকারে যাতে অন্য কোনো উপযুক্ত বেঞ্চে উত্থাপন করা যায়)। হাইকোর্টে বেঞ্চ গঠনের সময় আদালতের গঠনবিধি অনুসারে প্রতিটি বেঞ্চের এখতিয়ার বিশদভাবে বর্ণনা করা থাকে। সাধারণত উচ্চ আদালতের সাপ্তাহিক ছুটি ব্যতীত যে কোনো দীর্ঘ ছুটির পরই হাইকোর্ট বেঞ্চ পুনর্গঠন করা হয়। এছাড়া প্রধান বিচারপতি চাইলে যে কোনো সময়ই বেঞ্চ নতুন করে গঠন করতে পারেন। এ বছরের শীতের ছুটির শেষে উচ্চ আদালত ২ জানুয়ারি থেকে খুলেছে। তার একদিন আগে অর্থাত্ ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন ২০১৩ইং সনের ১নং গঠনবিধি শিরোনামে হাইকোর্ট বিভাগের বেঞ্চ গঠন করেছেন। তার উপরোক্ত আদেশের ১৪ নম্বর সিরিয়ালে বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী এবং বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের এখতিয়ার নিম্নরূপ : “একত্রে ডিভিশন বেঞ্চে বসিবেন এবং শুনানীর জন্য ডিভিশন বেঞ্চে গ্রহণযোগ্য ফৌজদারী মোশন; ফৌজদারী আপীল মঞ্জুরীর আবেদনপত্র এবং তত্সংক্রান্ত জামিনের আবেদনপত্র; মঞ্জুরীকৃত আপীল ও তত্সংক্রান্ত জামিনের আবেদনপত্র; ২০০৮ইং সন পর্যন্ত ফৌজদারী বিবিধ এবং ফৌজদারী রিভিশন ও রেফারেন্স মোকদ্দমাসমূহ এবং উপরোল্লিখিত বিষয়াদি সংক্রান্ত রুল ও আবেদনপত্র গ্রহণ করিবেন।” আইনি ভাষার কূট- কচালি বাদ দিলে মোদ্দা কথা আমার মতো নাগরিকের আবেদন শুনানির জন্য উল্লিখিত দ্বৈত বেঞ্চকে প্রয়োজনীয় সব এখতিয়ার দেয়া হয়েছে। তারপরও আমার জামিন আবেদন বিষয়ে মাননীয় বিচারপতিদ্বয় কেন তাদের বেঞ্চকে উপযুক্ত বিবেচনা না করে অন্য কোথাও যেতে আদেশ দিলেন? এই প্রশ্নের জবাব পেতে হলে সেদিনকার আদালতের বিচিত্র পরিস্থিতি বয়ান করতে হবে। জানুয়ারির ২ তারিখ আদালত খুললেও আমার জামিন আবেদনের শুনানি উল্লিখিত বেঞ্চ ৮ তারিখের আগে শুনতে সম্মত হননি। আমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী তার সাধ্যমত বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে সেই ১৩ ডিসেম্বর থেকে অফিসে অবরুদ্ধ রয়েছি, তাই শুনানি ৩ জানুয়ারি করা হোক। কিন্তু, আদালত অটল থেকে বলেছেন আগাম জামিন আবেদন শুনানির জন্য সপ্তাহের নির্ধারিত দিবস মঙ্গলবার ব্যতীত তারা আমার আবেদন শুনবেন না। এতে নাকি নিয়মের ব্যত্যয় হবে। অথচ বিশেষ ক্ষেত্রে মেনশনের দিনেই শুনানি হওয়ার ভূরি ভূরি নজির রয়েছে। তার মধ্য থেকে একটা প্রাসঙ্গিক উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। ২০০০ সালে ইনকিলাব পত্রিকার সম্পাদক এ. এম. এম. বাহাউদ্দীনের জামিনের শুনানি গ্রহণের জন্য রাত দশটায় প্রধান বিচারপতির নির্দেশে হাইকোর্টে বিশেষ বেঞ্চ বসানো হয়েছিল এবং তিনি সে রাতে আগাম জামিনও পেয়েছিলেন। সম্পাদক বাহাউদ্দীনের বিরুদ্ধেও তত্কালীন শেখ হাসিনা সরকার আমার মতোই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেছিল। এখন অবশ্য তার সঙ্গে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধুর সম্পর্ক রয়েছে। আমি মাওলানা মান্নানের পুত্র, ইনকিলাব সম্পাদকের মতো ভাগ্যবান নই তাই ৬ দিন অপেক্ষা করেই হাইকোর্টে গেলাম। পথিমধ্যে গ্রেফতার হওয়ার আশঙ্কা থাকায় আমার সহকর্মী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ এবং সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট আদিলুর রহমান খান আমার দেশ অফিস থেকে একই গাড়িতে উঠলেন। বর্তমান বাংলাদেশে গ্রেফতার হওয়া কোনো বিষয় নয়, ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমের মতো গুম হওয়াটাই অধিকতর আশঙ্কার। সেই জন্যই ছোটভাইসম দুই বন্ধু আমার সঙ্গেই আদালতে গেলেন। সাড়ে দশটায় আদালতে উঠতেই হতাশ হলাম। বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী জানালেন যে, শুনানি দুপুর দুটো পর্যন্ত মুলতবি থাকবে, কারণ ‘মহামহিম’ অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম স্বয়ং আসবেন জামিনের বিরোধিতা করতে। আর তার অভিপ্রায় উপেক্ষা করবে এমন ক্ষমতা কার? সরকার আমার মতো এক নগণ্য নাগরিককে এতখানি সম্মান দেয়ায় পুলকিত বোধ করলাম। আমার আইনজীবীরা দেখলাম খুবই আত্মবিশ্বাসী। সরকারের দায়ের করা মামলা এতই বানোয়াট যে পাঁচ মিনিটে জামিন হয়ে যাবে, ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি বাইরে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখালেও মনে মনে ঠিকই বুঝতে পেরেছিলাম ব্যাপারটা অত সহজ নয়। এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে গঠিত বাংলাদেশের ‘স্বাধীন’ আদালত, যেখানে বেছে বেছে ‘সেরা’ ব্যক্তিদের ‘মাননীয়’ বিচারপতি পদে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আমি চাইলাম আর তারা জামিন আবেদন মঞ্জুর করে ফেললেন, এতখানি আশাবাদী হতে পারছিলাম না। শেষ পর্যন্ত বেলা আড়াইটায় শুনানি শুরু হলো। কোথায় গেল পাঁচ মিনিটে জামিনের আশাবাদ। সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী আমার বিরুদ্ধে সরকারের অভিযোগ যে কতটা মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, হয়রানিমূলক এবং বেআইনি সেটা বিভিন্ন ধারা উল্লেখপূর্বক দীর্ঘক্ষণ ধরে বলেই যাচ্ছেন। আর মাননীয় বিচারকদ্বয়ের একজন স্মিতমুখে এবং অপরজন দৃষ্টি সামনের ফাইলে নিবদ্ধ করে বিষম গাম্ভীর্যের সঙ্গে অসীম ধৈর্যসহকারে সেই নিবেদন শুনেই যাচ্ছেন। মনে হলো তারা সামান্য জামিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নয়, মূল মামলার রায় যেন আজই দিয়ে ফেলবেন। প্রায় ঘণ্টাখানেক পর আমার পক্ষের আইনজীবী থামলেন। এবার অ্যাটর্নি জেনারেলের পালা। ততক্ষণ ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে আমার পা ব্যথা হয়ে গেছে। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার নিজস্ব রাজনৈতিক বাচনভঙ্গিতে জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে আধ ঘণ্টাখানেক বক্তৃতা দিলেন। তিনি বললেন, বিচারপতির সঙ্গে বিদেশে অবস্থানরত অপর এক ব্যক্তির চলমান মামলা সংক্রান্ত আলাপচারিতা প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমিই নাকি মহা অপরাধ করে ফেলেছি যদিও হ্যাকিংয়ের সঙ্গে আমার কোনোরকম সম্পৃক্ততার প্রমাণ সরকারের কাছে নেই। সে সব বিষয় এখনও প্রাথমিক তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে। বিচারপতির স্কাইপ সংলাপের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কোনো বিচারপতির এই আচরণ আইনসম্মত কিনা, আদালত সেটি জানতে চাইলে বিব্রত অ্যাটর্নি জেনারেল আমতা আমতা করে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের পদত্যাগী চেয়ারম্যানের পক্ষাবলম্বন করে কিছু একটা বলতে চাইলেন। আদালত কক্ষে উপস্থিত সবাই বুঝতে পারছিলেন যে, অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইছেন। তাছাড়া এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের আমার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন রুল দেয়া প্রসঙ্গেও অ্যাটর্নি জেনারেল কোনো যুক্তি খাড়া করতে ব্যর্থ হলেন। সেই বেআইনি রুল অবশ্য আপিল বিভাগ ইতোমধ্যে স্থগিত করে দেয়ায় অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলমের পক্ষে তার বিরোধিতা করাও সম্ভব হয়নি। বক্তব্যের শেষে তিনি আমার আদালত অবমাননার অভিযোগে সাজাপ্রাপ্তির পুরনো প্রসঙ্গ তুলে জামিন দেয়ার বিরোধিতা করলেন। অ্যাটর্নি জেনারেলের আর্গুমেন্টে আমি কৌতুক বোধ করছিলাম। আমার বিরুদ্ধে মামলার ধারা হলো রাষ্ট্রদ্রোহের, আর তিনি তুলছেন আদালত অবমাননার প্রসঙ্গ। অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতে আমার জামিন আবেদন দাখিল নিয়েও অসত্য বক্তব্য দিলেন। আমার বিরুদ্ধে সরকার ১৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে মামলা দায়ের করলে আমি পরবর্তী কার্যদিবস অর্থাত্ সোমবার, ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টে জামিন আবেদন দাখিল করি। অথচ অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম অম্লান বদনে দাবি করলেন, আমি নাকি ইচ্ছা করে ৮ জানুয়ারি জামিনের আবেদন করে মহা অন্যায় করে ফেলেছি। দুই পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষ হলে আদালতের আদেশ দেয়ার পালা। আদেশ শুনে আদালতে উপস্থিত সবাই স্তম্ভিত। আমার মামলাটি নাকি এতই জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ যে, আদালত তাদের চেয়েও সিনিয়র কোনো বেঞ্চে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন। তালিকার মামলা দীর্ঘ দুই ঘণ্টা শুনানির পর উচ্চ আদালতের এমন আদেশ নজিরবিহীন। হাইকোর্টের বেঞ্চের এখতিয়ার সিনিয়র-জুনিয়র বিবেচনা করে নির্ধারিত হয় না। মাননীয় প্রধান বিচারপতি নিজ অভিপ্রায় অনুযায়ী সেটি নির্ধারণ করে দেন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এবং অ্যাভভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী আদালতকে বিনীতভাবে অনুরোধ করলেন অন্তত পরবর্তী বেঞ্চে শুনানি না হওয়া পর্যন্ত আমাকে যেন পুলিশ হয়রানি না করে এ ধরনের একটি মৌখিক আদেশ প্রদানের জন্য। কিন্তু আদালত সেই অনুরোধও প্রত্যাখ্যান করে শুধু বললেন, আমরা দুঃখিত। পীড়াপী