Pages

Sunday, September 14, 2014

হিন্দুধর্মে নারীরা→১ম পর্ব

নব্য নাস্তিক এবং সেক্যুলারদের কাছে ইসলামে নারীর অধিকার নেই ,অথচ তারা একবার ও বিশ্লেষন করেনা যে ইসলাম নারীকে অধিকার দেয়না নাকি অন্য কোন ধর্ম নারীকে অধিকার দেয়না ! নব্য নাস্তিক আর হিন্দুদের দাবী "ইসলামে নারীকে শষ্যক্ষেত বলা হয়েছে তাই ইসলাম ধর্মে নারী দের অধিকার নেই !" হ্যা ইসলাম স্ত্রীকে স্বামীর নিকট শষ্যক্ষেত বলা হয়েছে । আমার স্ত্রীকে আমার মনের মত যদি না সাজাই তাইলে আমি কেমন স্বামী? সূরা বাকারার ২২৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে-

ﺃَﻧَّﻯﺸِﺌْﺘُﻤْﻨِﺴَﺂﺅُﻛُﻤْﺤَﺮْﺛٌﻠَّﻜُﻤْﻔَﺄْﺗُﻮﺍْﺣَﺮْﺛَﻜُﻢْ (তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর।)

হঠাৎ করে এই আয়াতাংশ কারো সামনে পেশ করা হলে মনে হতে পারে যে এখানে পুরুষকে যখন ইচ্ছা তখন তার স্ত্রীর সাথে যৌনাচার অবাধ অনুমতি দেওয়া হচ্ছে, আসলেই কি তাই ? এটা ঠিক যে ইসলাম স্ত্রীদেরকে স্বামীর যৌন চাহিদার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেছে, কিন্তু স্বামীকে নিজ চাহিদা আদায়ের ব্যাপারে উগ্র হবার কোন অনুমতি যেমন দেয়নি তেমনি স্বামীকেও স্ত্রীর যৌন চাহিদার প্রতি যত্মবান হবার নির্দেশ দিয়েছে। ইসলাম স্ত্রীকে বলেছে যদি রান্নরত অবস্থায়ও স্বামী যৌন প্রয়োজনে ডাকে তবে সে যেন সাড়া দেয়, অন্য দিকে পুরুষকে বলেছে সে যেন তার স্ত্রীর সাথে ভালো আচরণ করে, স্ত্রীর কাছে ভালো সাব্যস্ত না হলে সে কিছুতেই পূর্ণ ঈমানদার বা ভালো লোক হতে পারবে না। এই কথা জানার পরও কোন পুরুষ কি স্ত্রীর সুবিধার প্রতি কোনরূপ লক্ষ না রেখেই যখন তখন তাকে যৌন প্রয়োজনে ডাকবে? ইসলাম পুরুষকে এব্যাপারেও সাবধান করে দিয়েছে যে নিজের যৌন চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে স্ত্রীর যৌন চাহিদার কথাকে সে যেন ভুলে না যায়।" ইসলাম স্ত্রীকে তার স্বামীর কাছে শস্যক্ষেত্র বলেছে অন্যকাউকে নয়। আমার জমিতে(স্ত্রীকে) যদি আমি ভাল চাষ না দেই তবে আমার ফসল কোন দিনও ভাল হবেনা । ইসলামের ভাল কথাও নাস্তিক আর ছুপা হিন্দুদের কাছে বিষের মত লাগে অথচ তারা একবারও নিজের ধর্মকে দেখেনা । ইসলামই একমাত্র নারীকে পূর্ণ অধিকার দেয় যা অন্যকোন ধর্ম দেয়না ! বৌদ্ধধর্মে নারীকে মলের ন্যায় বলা হয়েছে ,খ্রীষ্টধর্মে ও ইহুদিধর্মেও নারীকে ঠিক তাই । এবার আমি আলোচনা করব,হিন্দু ধর্মে নারীদের অধিকার এবং হিন্দুধর্মে নারীরা ।

হিন্দুধর্মে নারীদের অধিকার:→

মনু নারী জাতিকে পুরুষের হাতের প্রাণশূন্য পুতুল ভেবেই হয়ত নিচের বিধানটি প্রবর্তন করেছেন। মনু বিধান দিলেনঃ বন্ধ্যাষ্টমেহধি বেদ্যাব্দে দশমে তু মৃতপ্রজা। একাদশে স্ত্রীজননী সদ্যস্ত্বপ্রিয়ব াদিনী \\ ৮১\\ অর্থঃ নিঃসন্তান স্ত্রীকে বিয়ের আট বছর পর ত্যাগ করা যায়, মৃত সন্তানের জন্মদানকারী স্ত্রীকে ত্যাগ করা যায় দশ বছর পরে, যে স্ত্রী শুধুমাত্র কন্যা সন্তান জন্ম দেয় তাকে ত্যাগ করা যায় এগারো বছর পরে, ঝগড়া পরায়ন স্ত্রীকে ত্যাগ করতে বিলম্ব করা যাবে না।" সূত্রঃ [মনুসংহিতা- অধ্যায়-৯, শ্লোক- ৮১, পৃষ্ঠা- ২৫৭, অনুবাদ- সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ] [-] কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার কারণে স্ত্রীকে ত্যাগ করা ধর্ম- সিদ্ধ কিন্তু সন্তান জন্মের ব্যাপারে পুরুষের অক্ষমতাকে বিবেচনা করা হয়নি মনুর বিধানে। বলতে হয়, মনু বিজ্ঞানে বিশ্বাসী ছিলেন না। অথবা শ্রীভগবান তাকে বিজ্ঞান সম্পর্কে কোন জ্ঞান দান করেননি। এ কথা বলার যুক্তি এই যে, আধুনিক বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে, পুত্র সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষের ভূমিকাই মুখ্য। পুরুষই পুত্র সন্তানের জীন (শুক্র) বহন করে - নারী নয়। তাহলে, পুরুষের দোষে নারীকে কেন ত্যাগ করার বিধান দেন মনু? মনুর বিধানে নারীদের অধিকার খর্ব করা হয়নি কি? ছিনিয়ে নেওয়া হয়নি কি নারীদের স্বাধীনতা? সংহিতার পঞ্চম অধ্যায়ে পাওয়া যায়ঃ- বালয়া বা যুবত্যা বা বৃদ্ধয়া বাপি যোষিতা। ন স্বাতন্ত্র্যেণ কর্তব্যং কিঞ্চিত্ কার্যং গৃহেস্বপি \\ ১৪৭ \\ অর্থঃ "বালিকা কিংবা যুবতী অথবা প্রাপ্ত বয়স্কা নারীরা স্বাধীনভাবে কোন কিছু করতে পারবে না- এমনকি নিজেদের ঘরেও নয়।" সূত্রঃ মনুসংহিতা [অধ্যায়-৫, শ্লোক-১৪৭, পৃষ্ঠা- ১৬২, অনুবাদ- সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ] [-] মনু নারীকে যে একেবারেই অধিকার শূন্য করেছেন তা নয়। নারীকে কিছু অধিকারও দিয়েছেন। মনু নারীদের স্বার্থের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছেন বললে ভুল হবে না। বলতে হয়, মনু 'নারী' স্বার্থের জন্যই এ বিধানটি দিয়েছেন। যদিও নারীকে উল্লেখ করে বলেছেন কিন্তু এ বিধানের নেপথ্যে পুরুষের অধিকার-ই ষোল আনাই পূর্ণ হয়েছে। মনুসংহিতায় মনু বলেছেনঃ "কন্যাং ভজন্তীমুত্কৃষ্ টং ন কিঞ্চিদপি দাপয়েত্"। ৩৬৫। অর্থঃ "কন্যা উচ্চতর বর্ণের লোককে (সম্ভোগার্থ=যৌ নমিলনে) ভজনা (আহ্বান) করলে তাকে কোন দন্ড দিতে হবে না।" সূত্রঃমনুসংহিতা [অধ্যায়-৮, শ্লোক-৩৬৫, পৃষ্ঠা-২৪০, অনুবাদ- সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ] অপর এক শ্লোকে মনু বিধান দিয়েছেনঃ "দেবরাদ্বা সপিন্ডাদ্বা স্ত্রিয়া সম্যঙ্ নিযুক্তয়া। প্রজেপ্সিতাধিগন ্তব্যা সন্তানস্য পরিক্ষয়ে" \\ ৫৯ \\ অর্থঃ "সন্তানের অভাবে (পতি প্রভৃতি গুরুজন কর্তৃক) সম্যকরুপে নিযুক্ত হয়ে স্ত্রীলোক দেবর বা সপিন্ড থেকে সন্তান লাভ করবে।" মনুসংহিতা [অধ্যায়-৯, শ্লোক-৫৯, পৃষ্ঠা-২৫৪, অনুবাদ- সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ] -] নারীরা মন্ত্রে অধিকারহীন, ধর্মশাস্ত্রে অধিকারহীন নির্গুন- মিথ্যাব াদী-পাপের মূল; তাহলে কি দেবীরা নারী নন? না নিচের শ্লোক/বিধান গুলো কেবলমাত্র সাধারণ নারীদের জন্য- পূণ্যবতী গুণবতী দেবীরুপী নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়ঃ "স্বভাব এষ নারীণং নরাণামিহ দূষণম। অতোহর্থান্ন প্রমাদ্যন্তি প্রমদাসু বিপশ্চিতঃ" \\ ২১৩ \\ অর্থঃ "নারীদের স্বভাবই হল পুরুষদের দূষিত করা। অতএব পন্ডিতগণ স্ত্রীলোক সম্বন্ধে অনবহিত হন না।" সূত্রঃ মনুসংহিতা-২য় অধ্যায়, পৃষ্ঠা-৭৯, শ্লোক-২১৩ "নাশ্নীয়াদ্ভার্ যয়া সার্ধং নৈনামীক্ষেত চাশ্নতীম। ক্ষুবতীং জৃম্ভমাণাং বা ন চাসীনাং যথাসুখম" \\ ৪৩ \\ অর্থঃ স্ত্রীর সঙ্গে আহার করবেন না, তার আহারকালে তাকে দেখবেন না। স্ত্রীর হাঁচবার, হাই তোলার বা আরাম করে বসে থাকার সময়ে তাকে দেখবেন না।" সূত্রঃ মনুসংহিতা-৪র্থ অধ্যায়, পৃষ্ঠা-১২১, শ্লোক-৪৩ ঋতুকালাভিগামী স্যাত্ স্বদারনিরতঃ সদা। পর্ববর্জং ব্রজেচ্চৈনাং তদব্রতো রতিকাম্যয়া \ \ ৪৫ \\ অর্থঃ (গৃহস্ত) নিজের স্ত্রীর প্রতি অনুরক্ত হয়ে ঋতুকালে স্ত্রীসম্ভোগ করবেন; স্ত্রীর প্রতি প্রীতিমান ব্যক্তি (অমাবস্যাদি) পর্ব বাদে রতিকামনায় (অন্য সময়েও) দারগমন করবেন। সূত্রঃ মনুসংহিতা- ৩য় অধ্যায়, পৃষ্ঠাঃ ৯০, শ্লোক-৪৫, মূল সংস্কৃত-মনু, অনুবাদ সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় কালেহদাতা পিতা বাচ্যো বাচ্যশ্চানুপযন পতিঃ। মৃতে ভর্ত্তরি পুত্রসত্ত বাচ্যো মাতুররক্ষিতা \\ ৪ \\ অর্থঃ বিবাহযোগ্য কালে কন্যা সমপ্রদান না করলে পিতা, (ঋতুকালে) স্ত্রীগমন না করলে পতি, স্বামীর মৃত্যুর পর মাতার রক্ষনাবেক্ষণ না করলে পুত্র নিন্দনীয় হয়। সূত্রঃ মনুসংহিতা- ৯ম অধ্যায়, পৃষ্ঠাঃ ২৪৮, শ্লোক-৪, মূল সংস্কৃত-মনু, অনুবাদ সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় আদি পুরুষ (মনুসংহিতা মতে-মনু) মানব জাতির পিতা তার মনুসংহিতার নবম অধ্যায়ের ১৮ নং শ্লোকে বললেন- নাস্তি স্ত্রী নাং ক্রিয়া মন্ত্রৈদিতি ধর্মে ব্যবস্থিতি। নিবিন্দ্রিয় হামন্ত্রাশ্চ স্ত্রিয়োহ নৃতমিতি স্থিতিঃ \\ ১৮ \\ অর্থঃ মাস্ত্রোক্ত বিধি অনুসারে নারীদের মন্ত্রে কোন অধিকার নাই, স্মৃতি ও ধর্শ শাস্ত্রে ইহাদের অধিকার নাই, এই জন্য ইহারা নিতান্ত হীন ও অপাদার্থ।" সূত্রঃ মনুসংহিতা- ৯ম অধ্যায়, পৃষ্ঠাঃ২৫০, শ্লোক-১৮, মূল সংস্কৃত-মনু, অনুবাদ সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়শুক্লযজুর্বেদের অন্তর্গত শতপথ ব্রাহ্মণে নারীকে তুলনা করা হয়েছে এভাবে, “সে ব্যক্তিই ভাগ্যবান, যার পশুসংখ্যা স্ত্রীর সংখ্যার চেয়ে বেশি” (২/৩/২/৮)। শতপথ ব্রাহ্মণের এ বক্তব্যকে হয়তো দরদী ধর্মবাদীরা ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়ে যৌক্তিকতা দিতে চেষ্টা করবেন, কিন্তু পরের আরেকটি শ্লোকে পাওয়া যায় হিন্দু ধর্মের দৃষ্টিতে নারীর আর্থ-সামাজিক অবস্থান; “বজ্র বা লাঠি দিয়ে নারীকে দুর্বল করা উচিৎ, যাতে নিজের দেহ বা সম্পত্তির উপর কোনো অধিকার না থাকতে পারে ” (৪/৪/২/১৩)। এর থেকে স্পষ্ট কোনো বক্তব্যের আর প্রয়োজন আছে? বৃহদারণ্যকোপনিষদে ঋষি যাজ্ঞবাল্ক্য বলেন, “স্ত্রী স্বামীর সম্ভোগকামনা চরিতার্থ করতে অসম্মত হলে প্রথমে উপহার দিয়ে স্বামী তাকে ‘কেনবার’ চেষ্টা করবে, তাতেও অসম্মত হলে হাত দিয়ে বা লাঠি দিয়ে মেরে তাকে নিজের বশে আনবে ” (৬/৪/৭, ১/৯/২/১৪)। দেবীভাগবত-এ নারীর চরিত্র সম্পর্কে বলা আছে (৯:১): “নারীরা জোঁকের মত, সতত পুরুষের রক্তপান করে থাকে। মুর্খ পুরুষ তা বুঝতে পারে না, কেননা তারা নারীর অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে পড়ে। পুরুষ যাকে পতœী মনে করে, সেই পতœী সুখসম্ভোগ দিয়ে বীর্য এবং কুটিল প্রেমালাপে ধন ও মন সবই হরণ করে।”

5 comments:

  1. খুব ভালো লেখা, অনেক ভালো লাগলো , হিন্দু ধর্ম নিয়ে কিছু জানলাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই, লেখা গুলা খুবই গুরুত্তপূর্ণ , হিন্দু ভাইদের বুঝতে অনেক উপকারে আসবে

    ReplyDelete
  2. তো নারীকে যখন শষ্যক্ষেত বলা হয়েছে ,, যার জমি নেই সে তো অন্যের জমি নিয়ে চাষাবাদ করে,, যার স্ত্রী নেই সে অন্যের অনুমতি নিয়ে তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করতে পারবে ??,,,, নারীদের যুদি পূর্ণ অধিকার দেওয়া হয়, তাহলে কোনো নারী নবি-রাসুল কেন হলো না ??

    ReplyDelete
  3. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete
  4. কতটা মিথ্যা বাদি মুসলিম এই ব্লাগার ভাবা যায় ?? মনুসংহিতা তো আমার কাছেও আছে, মনুসংহিতায় অধিবেদনের কথা বলা হয়েছে,, অথ্যাৎ প্রথম স্ত্রী সন্তান দানে ব্যাথ্য হলে তার থেকে ২য় বিবাহ করা হয়,,,, বরং এটাও বলা হয়েছে, সেই ২য় বিবাহের পরে সে যদি রেগে সংসার থেকে চলে যায় তাহলে তাকে ঘরে বেধে রাখতে, না হলে পিতা ও অন্যানের অনুমতিতে তাকে ত্যাগ করতে,, এখানে লক্ষ্য করতে স্ত্রী যদি নিজে রাগ করে চলে যেতে চায় তাহলে তাকে ত্যাগ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে,, নিজের ইচ্ছায় ত্যাগ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি,, কি মিথ্যাচার প্রকার করছো তোমরা?? এভাবে ইসলামকে উচু করতে পুণ্য লাভ হয় ?

    ReplyDelete